Advertisement
E-Paper

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ঘুসি, অভিযুক্ত যাদবপুর থানার ওসি

হাসপাতালে কয়েকশো রোগী রয়েছেন। চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্তে অথৈ জলে পড়েছেন তাঁরা। কী হবে ভেবে কুল-কিনারা করতে পারছেন না রোগীর আত্মীয়রা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ২৩:৫৪
আহত চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদ্দাম। নিজস্ব চিত্র।

আহত চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদ্দাম। নিজস্ব চিত্র।

চিকিত্সার গাফিলতির অভিযোগ তুলে চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে। সেই পরিস্থিতিতে রোগীর আত্মীয়দের হাত থেকে রক্ষা করতে পুলিশই ছুটে যায়। এমন ঘটনা রুখতে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে যেখানে, তখন সেই পুলিশের বিরুদ্ধেই চিকিত্সকে মারধর করার অভিযোগ উঠল এই শহরেই।

কর্তব্যরত এক চিকিত্সককে মারধর করার অভিযোগ উঠল যাদবপুর থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি)-এর বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে একবালপুরের একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিত্সকরা। ফলে হাসপাতালের পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা।

ঠিক কী হয়েছিল?

হাতের লিগামেন্টে চোট নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন যাদবপুর থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) পুলক কুমার দত্ত। বুধবার সকালে তাঁর হাতে অস্ত্রোপচার হয়। চিকিত্সক কে এস চাঁছড়ের অধীনে ওই অফিসারের চিকিত্সা চলছিল। এ দিন সন্ধ্যাবেলায় কর্তব্যরত এক জুনিয়র ডাক্তার শ্রীনিবাস গেদ্দাম ওসি-কে দেখতে যান। অভিযোগ, সেই সময় ওই চিকিত্সকের সঙ্গে কোনও একটা বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তখন ওসি আচমকাই ওই জুনিয়র ডাক্তারের উপর চড়াও হন। শ্রীনিবাসের ডান হাত মুচড়ে দেন। ওসি তাঁর বাঁ হাত দিয়ে ডাক্তারের মুখে সজোরে ঘুসি মারেন। তাঁর গলার কাছে কেটে যায়। রক্তপাতও হয়। শ্রীনিবাস যখন বিষয়টি নিয়ে চেঁচামেচি করছিলেন ওসির অধস্তন পুলিশকর্মীরা ছুটে আসেন। অভিযোগ, তাঁরা ডাক্তারকে হুমকি দেন বেশি বাড়াবাড়ি করলে তুলে নিয়ে যাবেন।

অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক পুলক কুমার দত্ত। নিজস্ব চিত্র।

চিকিত্সককে মারধরের এই ঘটনা গোটা হাসপাতালে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। কেন ওই চিকিত্সককে মারধর করা হল তার প্রতিবাদে হাসপাতালের বাকি চিকিত্সকরাও কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করতে হবে। ওয়েস্টবেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এসটাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট-এ মামলা দায়ের করতে হবে। ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাজ শুরু করবেন না বলেও জানিয়েছেন।

হাসপাতালে কয়েকশো রোগী রয়েছেন। চিকিত্সকদের এই সিদ্ধান্তে অথৈ জলে পড়েছেন তাঁরা। কী হবে ভেবে কুল-কিনারা করতে পারছেন না রোগীর আত্মীয়রা। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের রোগীর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে চরম সমস্যার মুখে পড়বেন তাঁরা। এ দিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিত্সকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাজ চালু করার জন্য চিকিত্সকদের আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু চিকিত্সকরা তাঁদের দাবিতে অনড়। ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: গোল খেলেই লাখের অফার! কলকাতা ময়দানে বেটিং চক্রে জড়িত নামী-দামিরাও?

ওসি পুলক দত্ত তাঁর ঘনিষ্ঠমহল ও সুপিরিয়রদের কাছে অভিযোগ করেছেন, তাঁর চিকিত্সায় নাকি গাফিলতি হচ্ছে। যদিও ওসি চিকিতসককে মারধরের ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, মারধর নয়, ওই চিকিত্সকের সঙ্গে শুধুমাত্র কথা কাটাকাটি হয়েছিল।

আরও পড়ুন: রোজভ্যালি তদন্তে শ্রীকান্ত মোহতাকে সিবিআই জেরা

এ বিষয়ে শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)

Assault Kolkata Police Doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy