E-Paper

লকার থেকে উধাও কোটি টাকার গয়না! ধৃত প্রাক্তন ক্যাশিয়ার

পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০১৭ সালে অগস্ট মাসে ৪০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না বন্ধক রেখে ৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন শিয়ালদহ এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকা খাতুন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৩

—প্রতীকী চিত্র।

গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকার সোনার গয়না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লকার থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ওই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ক্যাশিয়ারকে গ্রেফতার করল ভবানীপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম অর্ণব বিশ্বাস। রবিবার ধৃতকে আলিপুর মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের আদালতে পেশ করা হলে বিচারক আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আদালত সূত্রের খবর।

পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০১৭ সালে অগস্ট মাসে ৪০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না বন্ধক রেখে ৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন শিয়ালদহ এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকা খাতুন। ওই মহিলার দাবি, তাঁর ছেলে-মেয়ের এমবিবিএস পড়ার খরচ হিসাবে ব্যাঙ্কে ৫৭১.৭৫ গ্রাম সোনা বন্ধক রেখেছিলেন। সেই গয়না তাঁর নামে থাকা ব্যাঙ্কের লকারে রাখা ছিল। সিদ্দিকার অভিযোগ, ভবানীপুর থানা এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সোনা বন্ধক রেখে যে টাকার ঋণ নিয়েছিলেন, তা ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি শোধ করে দেন। কিন্তু তার পরেও গয়না লকারেই রেখে দিয়েছিলেন। তখন তিনি কলকাতার বাইরে ছিলেন। ২০২৪ সালে কলকাতায ফিরে লকার থেকে গয়না ফেরত নিতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নথি দেখিয়ে জানান, সিদ্দিকা তাঁর গয়না অনেক আগেই লকার থেকে তুলে নিয়েছেন। নথিতে তাঁর সই রয়েছে বলেও ব্যাঙ্কের তরফে দেখানো হয়। এর পরেই ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সিদ্দিকা।

পুলিশ সূত্রের দাবি, ব্যাঙ্ক থেকে সিদ্দিকার ঋণ সংক্রান্ত সব নথি সংগ্রহ করা হয়। পাশাপাশি, তাঁর হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই করা হয়। তখনই বোঝা যায়, তাঁর সই জাল করা হয়েছিল। এর পর ব্যাঙ্কের তৎকালীন কর্তা, ক্যাশিয়ার ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়।

তদন্তকারীদের দাবি, লকার থেকে সিদ্দিকার গয়না সরিয়ে ফেলে, তাঁর সই জাল করে নথি তৈরি করা হয়েছিল। এর পরে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের পরে ওই ব্যাঙ্কের তৎকালীন ক্যাশিয়ার অর্ণবকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হয়। সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘এই ঘটনা গভীর ষড়যন্ত্র ও আর্থিক প্রতারণার উদাহরণ। এই অপরাধে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে।’’ এর পরেই বিচারক অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

সূত্রের দাবি, ২০১৭ সালে সিদ্দিকার গচ্ছিত সোনার গয়নার বাজার মূল্য ছিল ৪০ লক্ষ টাকা। বর্তমানে তার দাম প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই মামলায় গৌড়চন্দ্র সর্দার নামে এক কর্মচারীকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে জেরা করে অর্ণবের নাম উঠে আসে। এর পরেই অর্ণবকে জেরা করা হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Fraud Bhawanipore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy