Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Snake Bites

আবাসনের ঘাসই কি নিউ টাউনে বাড়াচ্ছে সাপের উপদ্রব

সাপের কামড়ে দু’টি মৃত্যুর পরে আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে নিউ টাউনে। সাপের হাত থেকে বাঁচতে এবং সাপে কামড়ালে কী করণীয়, সেই সম্পর্কে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে বিভিন্ন আবাসনে চলছে আলোচনা।

An image of Snake

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৭:৫৯
Share: Save:

কালাচ, চন্দ্রবোড়া, কেউটে, দাঁড়াশ— সম্প্রতি সাত দিনে সাতটি সাপ উদ্ধার হয়েছে নিউ টাউনের একাধিক আবাসন চত্বর থেকে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি সৌন্দর্যায়নের ঘাসে পোকামাকড়ের লোভেই সাপের উপদ্রব বাড়ছে নিউ টাউনের আবাসনগুলিতে?

সাপের কামড়ে দু’টি মৃত্যুর পরে আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে নিউ টাউনে। সাপের হাত থেকে বাঁচতে এবং সাপে কামড়ালে কী করণীয়, সেই সম্পর্কে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে বিভিন্ন আবাসনে চলছে আলোচনা। রবিবার নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) কর্তৃপক্ষ ও আবাসনের বাসিন্দাদের বিশেষজ্ঞেরা ঝোপেঝাড়ে কার্বলিক অ্যাসিড বা রাসায়নিক স্প্রে না করার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, তাতে সাপ আরও বেশি করে খোলা জায়গায় বেরিয়ে আসবে।

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের মতে, বিভিন্ন আবাসনে সৌন্দর্যায়ন করে ঘাসের গালিচা, বাগান করা হয়েছে, যেখানে পোকামাকড়ও থাকে। তার খোঁজেই সাপ আবাসনে ঢুকছে। বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে রাজারহাট-নিউ টাউনে সাপ ধরে বন দফতরকে দেন আদিত্য রায়। তাঁর কথায়, ‘‘আবাসনগুলিকে পরামর্শ দিচ্ছি, তাদের মাঠে বা বাগানে কীটনাশক ব্যবহার করতে। তাতে পোকামাকড় মরবে, সাপের খাবার বন্ধ হবে। কিন্তু রাসায়নিকের ব্যবহারে পোকামাকড় বাইরে বেরিয়ে আসছে। সে সব খেতে সাপ লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।’’ এনকেডিএ-র তরফে বন দফতরের স্নেক ক্যাচারেরা জানান, সাপ বেরোনোর খবর জানিয়ে রোজই চার-পাঁচটি ফোন আসে। আচমকা রাস্তায় বড় বড় সাপ বেরিয়ে আসায় মানুষ ও সাপ— উভয়েরই ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। আবাসনগুলি সাপ ধরার যন্ত্র জোগাড় করে রাখছে। যদিও বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যেরা জানান, সাপ ধরার কায়দা রয়েছে। দিনকয়েক আগে একটি আবাসন থেকে কালাচ ধরে বিজ্ঞান মঞ্চের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ধরার সময়ে সাপটি আহত হয় ও পরে মারা যায়।

গত রবিবার এনকেডিএ বাসিন্দাদের ফোরামগুলিকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিল। ছিলেন সর্প বিশারদেরাও। সর্প বিশারদ তথা আইসিএমআর-এর টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজ়ার দয়ালবন্ধু মজুমদার জানান, কার্বলিক অ্যাসিড ছড়ানোয় সাপ লোকালয়ে চলে আসছে। আবাসনের বাইরে পথকুকুর পুষে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি, যাতে সাপ দেখলেই কুকুর চিৎকার করে সতর্ক করে। সর্প বিশেষজ্ঞেরা জানান, সাপকে দূরে রাখতে বাড়ি বা আবাসনের আশপাশ পরিষ্কার করে ব্লিচিং ছড়ানো যেতে পারে। তাতে ব্লিচিংয়ের কারণে সাপের গায়ে জ্বলুনি তৈরি হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সংগঠন ‘নিউ টাউন সিটিজেন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’ মঙ্গলবার এনকেডিএ-র কাছে আবেদন করেছে, যাতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আগামী দু’মাস ২৪ ঘণ্টা অ্যান্টিভেনাম দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

সাপ নিয়ে আতঙ্কের জেরে নিউ টাউনের এ পি জে আব্দুল কালাম মাঠের কাছে একটি ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির কিছু দিন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি শিবির খুললেও অভিভাবকদের একাংশ এখনও সন্তানদের পাঠাচ্ছেন না। নেপাল হালদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আর কিছু দিন পরে ছেলেকে পাঠাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Snake Bites snake-fear New Town
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE