Advertisement
E-Paper

ট্যাক্সির প্রত্যাখ্যানে জেরবার মধ্যবিত্তের ভরসা অ্যাপ-ক্যাব

এ বার প্রশ্ন উঠেছে কলকাতাতেও। সম্প্রতি রাজ্যের পরিবহণ দফতর দু’টি অ্যাপচালিত ক্যাব সংস্থার কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে তাদের ভাড়ার খুঁটিনাটি।

স্যমন্তক ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০৩:০৯
গন্তব্যে পৌঁছতে অ্যাপ-ক্যাবেই আস্থা। সোমবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

গন্তব্যে পৌঁছতে অ্যাপ-ক্যাবেই আস্থা। সোমবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

বিষয়টি নতুন নয়। অ্যাপচালিত ক্যাবের ভাড়ার স্বচ্ছতা এবং সুরক্ষা নিয়ে বহু দিন ধরেই প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও। ২০১৪ সালে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছিল জার্মান আদালত। একটি আন্তর্জাতিক অ্যাপচালিত ক্যাবের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা
হয়েছিল সেখানে।

এ বার প্রশ্ন উঠেছে কলকাতাতেও। সম্প্রতি রাজ্যের পরিবহণ দফতর দু’টি অ্যাপচালিত ক্যাব সংস্থার কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে তাদের ভাড়ার খুঁটিনাটি। এটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মেনে নিলেও শহরের নাগরিক সমাজ ভিন্ন প্রশ্নও তুলছে। অনেকেই বলছেন, যেখানে সাধারণ ট্যাক্সি পরিষেবাই বিশ বাঁও জলে, সেখানে অ্যাপচালিত ক্যাবের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তোলা নেহাতই লোক দেখানো।

জার্মানিতে অ্যাপচালিত ক্যাবের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল সেখানকার ‘ইয়েলো’ ক্যাব চালকদের একটি সংগঠন। অভিযোগ ছিল, সাধারণ ক্যাবের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার জন্য পরিষেবার সঙ্গে আপস করছে অ্যাপচালিত ক্যাব সংস্থাগুলি। তাই অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া নির্দিষ্ট নয়। বার্লিনের আইনজীবী মারিকে গ্রিফের বক্তব্য, আদালতে সওয়ালের পরে জার্মান আদালত জানায়, যে প্রক্রিয়ায় অ্যাপচালিত ক্যাবগুলি ব্যবসা করছে তা স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ নয়। একটি বিশেষ অ্যাপচালিত ক্যাব সংস্থা বন্ধ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেয় আদালত।

শুধু জার্মানি নয়, ইতালি, চেক রিপাবলিক-সহ বহু দেশেই অ্যাপচালিত ক্যাব নিয়ে বিভিন্ন মামলা চলছে। বহু দেশেই অ্যাপচালিত ক্যাব হালে পানি পাচ্ছে না। কেন পাচ্ছে না? মারিকে গ্রিফের বক্তব্য, ‘‘ইউরোপে অধিকাংশ দেশেই ট্যাক্সি চালানোর নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। যাত্রী সুরক্ষা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের কিছু মাপকাঠি আছে। প্রতিটি ট্যাক্সি সংস্থাকে সেই মাপকাঠি পূরণ করতে হয়। শুধু তাই নয়, বহু দেশেই ট্যাক্সিতে রাখতে হয় ভাড়ার চার্ট। যেখানে স্পষ্ট করে লেখা থাকে নির্দিষ্ট দূরত্বের রাতের এবং দিনের ভাড়া। প্রতিটি দেশেই ফোন করলে ট্যাক্সি পাওয়া যায়। ট্যাক্সিচালক যাত্রীকে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন না। ফলে অ্যাপচালিত ক্যাবের প্রয়োজন হয় না। যাত্রী সুরক্ষা এবং স্বাচ্ছন্দ্য সাধারণ ট্যাক্সিতে অনেক ভাল।’’

কলকাতার নাগরিক সমাজও ঠিক এই বিষয়েই প্রশ্ন তুলছে। আইনজীবী অরিন্দম দাসের বক্তব্য, ‘‘অ্যাপচালিত ক্যাবের ভাড়ায় অবশ্যই স্বচ্ছতা থাকা উচিত। কিন্তু এ শহরে কোনও বিকল্প তো নেই! এখানে সাধারণ ট্যাক্সির ভাড়ায় কোনও নিয়ম নেই। অধিকাংশ সময়েই হলুদ ট্যাক্সি মিটারে যেতে চায় না। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয় বেশির ভাগ সময়েই। ফলে বাধ্য হয়েই মধ্যবিত্ত অ্যাপচালিত ক্যাবে উঠছেন।’’

যাত্রীদের অভিযোগ, সাধারণ ট্যাক্সির ক্ষেত্রে সরকারের কোনও নিয়মকানুনই কাজ করে না। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ট্যাক্সি ইউনিয়নগুলি রাজনীতির ছত্রছায়ায় থাকে বলে কাউকে কিছু বলা যায় না। ‘নো রিফিউজাল’ ট্যাক্সি রিফিউজ করবে, সেটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে এ শহরে। পাশাপাশি, ক্রমশ নিম্নগামী হচ্ছে হলুদ ট্যাক্সির স্বাচ্ছন্দ্য। ফলে অ্যাপচালিত ক্যাবেই এখন ভরসা করছে মধ্যবিত্ত কলকাতা।

App Cab Taxi Cab Fare ট্যাক্সি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy