E-Paper

রেস্তরাঁর নথি চাইল পঞ্চায়েত, সোহম-কাণ্ডের জের বলে অভিযোগ

জুন মাসে ওই রেস্তরাঁয় শুটিং করতে গিয়েছিলেন সোহম। পার্কিং নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। আনিসুল অভিযোগ করেন, সোহম তাঁকে মারধর করেছেন, রেস্তরাঁ বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ০৬:২৩
সোহম চক্রবর্তী।

সোহম চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

সোহম-কাণ্ডের জের কি ব্যবসার উপরে পড়া শুরু হল?

সেই প্রমাদই গুনছেন নিউ টাউনের রেস্তরাঁ-মালিক। পঞ্চায়েতের দাবি, গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে এলাকার বিভিন্ন নির্মাণের কাগজপত্র খতিয়ে দেখতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মালিকদের। তেমনই চিঠি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের বিধায়ক-অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর হাতে প্রহৃত নিউ টাউনের রেস্তরাঁ-মালিক আনিসুল আলমকেও।

জুন মাসে ওই রেস্তরাঁয় শুটিং করতে গিয়েছিলেন সোহম। পার্কিং নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। আনিসুল অভিযোগ করেন, সোহম তাঁকে মারধর করেছেন, রেস্তরাঁ বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন। এমনকি, টেকনো সিটি থানার পুলিশও একই হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ আনিসুলের। মারধরের কথা স্বীকার করে সোহম পরে দুঃখপ্রকাশ করেন।

ঠিক এক মাস পরে, গত ৮ তারিখ রেস্তরাঁর নামে স্থানীয় পাথরঘাটা পঞ্চায়েত একটি চিঠি দেয়। তাতে জমির নথি, চুক্তির অনুলিপি, নির্মাণের নকশা ও অনুমোদনপত্র-সহ একাধিক কাগজপত্র নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ১০ জুলাই পঞ্চায়েতে দেখা করতে বলা হয়। তবে কলকাতা হাই কোর্টে শুনানি থাকায় আনিসুল যাননি। উল্লেখ্য, সোহম-কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আনিসুল। ৩১ জুলাই অবধি আনিসুলকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে। সোহম ওই চিঠির ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন।

আনিসুলদের দাবি, নথি দেখানোর চিঠি একমাত্র তাঁরাই পেয়েছেন। তাঁর বন্ধু জিম নওয়াজের দাবি, ‘‘ওই বাড়ি ভাড়া নিয়ে আনিসুল রেস্তরাঁ চালাচ্ছেন। অন্যান্য ধাবা, রেস্তরাঁকে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। চিঠি জমির মালিকের নামে না দিয়ে রেস্তরাঁর নামে কেন দেওয়া হল?’’ তাঁদের আরও দাবি, কাগজপত্রে গোলমালের ফিকির দেখিয়ে নির্মাণটিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলা হতে পারে। রেস্তরাঁর উপরেও তার প্রভাব পড়বে।

যদিও পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান টুটুন গাজির দাবি, ‘‘চিঠি সকলকেই দেওয়া হয়েছে। সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে। নিউ টাউনের ওই জায়গায় যে সব নির্মাণ রয়েছে, সেগুলির সিংহভাগেরই কোনও অনুমোদিত নকশা নেই। তার মধ্যে ওই রেস্তরাঁও আছে। সেটির বিপুল কর বকেয়া রয়েছে। তাই জমির মালিককে ডাকা হয়েছে। রেস্তরাঁ-মালিককে কিছু বলা হয়নি।’’ কিন্তু জমির মালিকের নামে চিঠি না দিয়ে রেস্তরাঁর নামে চিঠি গেল কেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর না মিললেও টুটুনের দাবি, কোনও সমস্যা হবে না বলে ফোনে ইতিমধ্যেই আনিসুলকে জানিয়েছেন তিনি।

ওই নির্মাণের মালিক মহম্মদ রুকউদ্দিন মোল্লা জানান, রেস্তরাঁ-মালিক পঞ্চায়েত অফিসে না যাওয়ায় তাঁরা সেখানে কাগজপত্র নিয়ে গেলেও কেউ কোনও আলোচনা করেননি। তিনি বলেন, ‘‘নিউ টাউন তৈরির সময়ে আমাদের জমি যায়। তখন হিডকো অনুমতি দেয় ওই জমিতে নির্মাণ করার। বছর দুই আগে ওই নির্মাণ হয়। ওই মারামারির পরেই কর আদায় করার আর জমির কাগজপত্র দেখার হুঁশ ফিরল পঞ্চায়েতের? আমরা শুনেছিলাম, আনিসুল যাতে মামলা-মোকদ্দমা বন্ধ করেন, তা বোঝাতেই আমাদের ডাকা হয়েছিল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Soham Chakraborty Soham Chakraborty Slap Controversy New Town

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy