E-Paper

আনাজ দুর্মূল্য, ভোট-পর্ব মেটার অপেক্ষায় বিক্রেতারা

মানিকতলা বাজার, গড়িয়াহাট বাজার, শোভাবাজারের খুচরো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, শিয়ালদহের কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে, গ্রাম থেকে আনাজের জোগান শহরে সে ভাবে নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ০৭:০১
An image of Vegetables

দাম কমেনি, তাই আনাজের বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম। সোমবার, মানিকতলা বাজারে। ছবি: সুমন বল্লভ।

গত কিছু দিন ধরে আনাজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির জন্য বৃষ্টি না-হওয়াকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন শহরের আনাজ বিক্রেতারা। এখন আবার তাঁরা তাকিয়ে রয়েছেন, পঞ্চায়েত ভোট-পর্ব কবে শেষ হবে সেই দিকে!

এত দিন আনাজ বিক্রেতারা জানাচ্ছিলেন, বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। তাই বাজারে আনাজের জোগান কমেছে, দাম বেড়েছে। দিন দশেকের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তার পরে কেটেছে দিন দশেক। বৃষ্টিও হয়েছে। অথচ আনাজের দাম অল্প কমলেও তা এখনও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরেই। এখন আবার পাইকারি ও খুচরো বিক্রেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েতভোট-পর্ব মেটার পরেই আনাজের দাম কমার সম্ভাবনা হয়েছে।কারণ, ভোটের কারণে গ্রাম থেকে কোনও আনাজ গত কিছুদিন ধরে শহরে সে ভাবে আসছে না। ফলে আজ, মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল বেরোলেও চলতি সপ্তাহের শেষের দিক নাগাদ আনাজের দাম স্বাভাবিক হতে পারে বলে মনেকরা হচ্ছে।

মানিকতলা বাজার, গড়িয়াহাট বাজার, শোভাবাজারের খুচরো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, শিয়ালদহের কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে, গ্রাম থেকে আনাজের জোগান শহরে সে ভাবে নেই। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, ভোটের কারণে জেলা থেকে আনাজ নিয়ে আসার গাড়ির সংখ্যা খুব কমে গিয়েছে। ফলে জোগানও কমেছে পাল্লা দিয়ে। সোমবারও খোলা বাজারে পটলের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৬০ টাকা,ঝিঙে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, লঙ্কা ১৬০-২০০ টাকা। অনেক খুচরো আনাজ বিক্রেতাদের দাবি, আনাজের এ হেন আকাশছোঁয়া দাম বৃদ্ধির ফলে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে তাঁদেরই। কারণ, অত্যধিক দামের কারণে বহু ক্রেতা প্রয়োজনের চেয়েও কম পরিমাণে আনাজ কিনছেন। ফলে ভুগছেন বিক্রেতারা।

টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে-র মতে, ‘‘কয়েক দিন ধরে খোঁজ নিয়ে দেখছি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া থেকে শহরে আনাজের জোগানের পরিমাণ খুবই কমে গিয়েছে। এতটাই কম যে, কলকাতা সমস্ত বাজারে সেই আনাজ পৌঁছচ্ছেই না। এর অন্যতম প্রধান কারণ পঞ্চায়েত ভোট। শুধু চাষিরাই নন, যাঁরা গাড়ি চালিয়ে আনাজ কলকাতায় নিয়ে আসেন বা গাড়ি থেকে আনাজ নামানোর কাজ করেন— তাঁদের অধিকাংশই পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।’’ কলেজ স্ট্রিট বাজারের আনাজ বিক্রেতা রাজু দে বলছেন, ‘‘রবিবার কোলে মার্কেটের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখেছিলাম, সে ভাবে কোনও আনাজই আসেনি। সোমবারও প্রায় একই অবস্থা। চাষিরা জানাচ্ছেন, জেলা থেকে আনাজ নিয়ে আসার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় আনাজের গাড়ি আটকে রয়েছে। ভোট শেষ হওয়ারঅপেক্ষায় আছি।’’

যদিও টাস্ক ফোর্সের আর এক সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের মতে,‘‘দাম না কমার জন্য ভোটকে দায়ী করা যায় না। বরং বলা যায়, গরমে ফসল শুকিয়ে গিয়েছিল। এখন ফের বর্ষায় ফলন হচ্ছে। তা বাজারে আসতে আরও দিনপাঁচেক সময় লাগবে। আনাজের গাড়িও বিভিন্ন জায়গায় আটকেছিল। এখনরাস্তায় সেইসব গাড়িকে দাঁড়াতে দিচ্ছে না পুলিশ। আনাজভর্তি সেইসব গাড়ি এ বার কলকাতার বাজারে ঢুকবে। আর জোগান বাড়লেইদাম কমবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Vegetables Price Hike market price West Bengal Panchayat Election 2023

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy