Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বুজে যাওয়া নালার পাশেই অস্বাস্থ্যের বাস

সোদপুর ব্রিকফিল্ড রোড, মোল্লাপাড়া থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ এলাকার এই ছবি। তবে শুধু জঞ্জাল জমে থাকার অভিযোগই উঠছে না।

অপরিচ্ছন্ন: এমনই বেহাল অবস্থা সোদপুর ব্রিকফিল্ড রোডের দেবনাথ পাড়ার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

অপরিচ্ছন্ন: এমনই বেহাল অবস্থা সোদপুর ব্রিকফিল্ড রোডের দেবনাথ পাড়ার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৬
Share: Save:

দু’টি বাড়ির মাঝে কোথাও এক-দু’ফুটের মতো জায়গা। আর সেই জায়গার জলে জমে রয়েছে যাবতীয় জঞ্জাল আর প্লাস্টিকের পলিব্যাগ কাপ-ডিশ। ভনভন করছে পোকা, মাছি। মশা তো রয়েছেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনই অবস্থা কলকাতা পুরসভার ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের সোদপুর এলাকার খোলা নিকাশি নালার।

সোদপুর ব্রিকফিল্ড রোড, মোল্লাপাড়া থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ এলাকার এই ছবি। তবে শুধু জঞ্জাল জমে থাকার অভিযোগই উঠছে না। একটু বৃষ্টি হলেই ওই সব রাস্তায় নালা উপচে জল দাঁড়িয়ে যায়। আর তাতেই অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে যায়।

মোল্লাপাড়ায় নর্দমাগুলি জঞ্জালে ভরা থাকলেও ব্রিকফিল্ড রোডের দেবনাথপাড়ার কিছু জায়গায় বাড়ির পাশেই রয়েছে বড় বড় খোলা নর্দমা। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সে সব থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বহু দূর পর্যন্ত। তার উপরে একই ভাবে ভনভন করছে মশা-মাছি-পোকা। এমন অবস্থা কেন? বাসিন্দাদের অভিযোগ, সারা বছর এ রকম অবস্থাই হয়ে থাকে। কোনও দিন নর্দমা পরিষ্কার করা হয় না। ফলে জঞ্জাল জমে দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাড়ি ছেড়ে তো আর যাওয়া সম্ভব নয়, তাই অনেকেই নেট লাগিয়ে মশার থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন বলেও জানাচ্ছেন। এ দিকে শহর জুড়ে ডেঙ্গি আতঙ্ক। যার জেরে ওয়ার্ডগুলির পরিস্থিতির দিকে পুর-আধিকারিকদের নজর রাখার জন্য পুরকর্তাদের নির্দেশও পৌঁছে গিয়েছে।

অথচ ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের এমন বেহাল অবস্থা কেন?

স্থানীয় সূত্রের খবর, অন্য ওয়ার্ডের মতো এই ওয়ার্ডেরও জঞ্জাল, নর্দমা পরিষ্কার ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা নজরদারি চালাতে আলাদা কর্মী রয়েছেন। কিন্তু তিনি নামেই। কারণ সেই কর্মীকে এলাকায় দেখা যায় না বলে অভিযোগ। ফলে কাউন্সিলরের কানে ওয়ার্ডের কোথায়, কী অবস্থা সে খবর পৌঁছয় না বলেই দাবি তাঁর। পাশাপাশি এলাকা অপরিচ্ছন্ন করার জন্য বাসিন্দাদের একটি অংশকেও দায়ী করছেন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘বেশ কিছু বাসিন্দা

বাড়ির জঞ্জাল পুরসভার গাড়িতে না ফেলে পাশের ফাঁকা জায়গায় বা নর্দমায় ফেলেন। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে পরিষ্কার করেও কোনও ফল মিলবে না।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলিতে আগে কোনও নিকাশি নালা ছিল না। ফলে নর্দমা সবই খোলা ছিল। পরবর্তীকালে কেইআইআইপি প্রকল্পে পাইপ বসিয়ে নিকাশির পরিকাঠামো তৈরি করা শুরু হয়েছিল ওই এলাকায়। কিন্তু পুরো ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের মাত্র ২০ শতাংশে সে কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যা মানছে পুরসভাও। ফলে বাকি জায়গায় এখনও খোলা নর্দমা রয়েছে।

কেন এত দেরি? মাঝেরহাট সেতু ভাঙার জন্যেই ওয়ার্ডের নিকাশি নালার কাজ অনেক জায়গায় শুরু করা যায়নি বলে সাফাই দিচ্ছেন কাউন্সিলর সোমা চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘১২২ নম্বরের যে সব জায়গায় এই সমস্যা রয়েছে, সেগুলির জল মাটির তলা দিয়ে মতিলাল গুপ্ত রোডের নীচে এনে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে মতিলাল গুপ্ত রোড দিয়ে বেহালার গাড়ি ঘোরানো হয়েছে। যার ফলে কাজের জন্য রাস্তা বন্ধ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আটকে রয়েছে নিকাশির কাজও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Drain Mosquito Civic Issue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE