E-Paper

মণ্ডপে বিচার চান ওঁরা, মিলল পুলিশ হেফাজত

পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হলেন সঞ্জয় মণ্ডল, উত্তম সাহা, কুশল কর, জহর সরকার, সাগ্নিক মুখোপাধ্যায়, নাদিম হাজারি, ঋতব্রত মল্লিক, চন্দ্রচূড় চৌধুরী, দীপ্তমান ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:৫৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ষষ্ঠীর পুজো মণ্ডপে ঢুকে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। সপ্তমীতে তাঁদের আদালতে পেশ করে পুলিশের দাবি, প্রতিবাদীরা বড় রকমের ষড়যন্ত্রের শরিক, যা তাদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে বোঝা গিয়েছে। অভিযুক্তদের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আলিপুর আদালতের বিচারক।

ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে থাকার বার্তা দিতে ষষ্ঠীর রাতে দক্ষিণ কলকাতায় ত্রিধারা সম্মিলনীর মণ্ডপে গিয়েছিলেন ওই প্রতিবাদীরা। তাঁদের প্রথমে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়।

পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হলেন সঞ্জয় মণ্ডল, উত্তম সাহা, কুশল কর, জহর সরকার, সাগ্নিক মুখোপাধ্যায়, নাদিম হাজারি, ঋতব্রত মল্লিক, চন্দ্রচূড় চৌধুরী, দীপ্তমান ঘোষ। তাঁরা আসানসোল, দমদম, ট্যাংরা, সন্তোষপুর, বর্ধমান, আগরপাড়া, রহড়া এলাকার বাসিন্দা।

এ দিন সকাল থেকেই আদালত চত্বরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ জমায়েত দেখা যায়। দুপুরে আলিপুর আদালতে গিয়েছিলেন কিঞ্জল নন্দ-সহ পাঁচ চিকিৎসক। অভিযুক্তেরা রাজ্যের বিভিন্ন অতি-বাম ও নকশাল সংগঠনের সদস্য বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাঁরা জনতার মগজধোলাই করা ও তাদের বিপথে চালিত করার কার্যকলাপে লিপ্ত বলে আদালতে লিখিত ভাবে দাবি করে পুলিশ। এ দিন আদালতে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, শান্তিপূর্ণ ভাবে কেউ চিকিৎসক ছাত্রীর নৃশংস খুনের প্রতিবাদ করতে পারেন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই প্রতিবাদ করা হয়েছে। কোনও আইন লঙ্ঘন করা হয়নি। প্রশাসন দমননীতির মাধ্যমে প্রতিবাদ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। ধৃতদের অবিলম্বে জামিনে মুক্তি দেওয়া উচিত।’’

সরকারি আইনজীবী শুভাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রতিবাদের অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু ১৬ ফুট পুজো মণ্ডপে পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদ করা যায় না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ওই সময়ে থিকথিকে ভিড় ছিল। বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুরাও ছিলেন। ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল।’’ সরকারি আইনজীবীর আরও দাবি, ‘‘অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই মোবাইল ফোনের সূত্রে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, বিভিন্ন মণ্ডপে উত্তেজনা ছড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।" দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বলে আদালত সূত্রে খবর।

প্রতিবাদীদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার দরকার ছিল কি না, এই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ এবং আর জি কর নিয়ে কিছু শুনতে চান না। মুখে আর জি করের কথা বললেই গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে!’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। এখন প্রতিবাদীরা একই স্লোগান দিলে তাঁদের জন্য পুলিশ হেফাজত! এটাই স্বৈরাচার!’’ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও মত, ‘‘বিচারের দাবি তোলার জন্য পুলিশ হেফাজত মানা যায় না!’’ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন যে, ‘‘পুজোর ভিড়ে অরাজকতা ও অশান্তি ছড়ানোর ‘গভীর চক্রান্ত’ চলছে।’’ ‘মাথা’দের গ্রেফতারের দাবিও তুলেছেন তিনি। কুণাল অবশ্য এ-ও বলেন, ‘‘মণ্ডপে স্লোগান দেওয়ার কারণে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের প্রয়োজন ছিল কি না, ভেবে দেখা উচিত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2024 R G Kar Hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy