আবাসনের চারতলায় ফ্ল্যাটের দু’টি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন মেয়ে ও বাবা। মধ্য রাতে এর মধ্যে থেকেই চুরি হয়ে গেল ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্ক, একটি স্মার্ট ফোন-সহ দু’টি মোবাইল ফোন। গত মঙ্গলবারের এই ঘটনায় ঠাকুরপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সেঁজুতি দাস নামে ওই মহিলা। কিন্তু অভিযোগ, তাতে কাজ হয়নি। উল্টে, অভিযোগপত্রে বয়ান বদলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলেও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন তিনি। সুরাহা পেতে সম্প্রতি লালবাজারে যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) প্রবীণ ত্রিপাঠীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মধ্য তিরিশের সেঁজুতিদেবী।
সূত্রের খবর, পেশায় রেডিয়ো উপস্থাপক সেঁজুতিদেবী বাবা শক্তিপদবাবুর সঙ্গে ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার একটি আবাসনে থাকেন। লালবাজারে তিনি জানিয়েছেন, গত ২৪ জুলাই, ঘটনার দিন রাতে কাজ সেরে ফিরে নিজের ঘরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। পাশের ঘরে ছিলেন শক্তিপদবাবু। সেঁজুতিদেবীর ঘরেই খাটের পাশে টেবিলের উপরে ছিল তাঁর ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্ক আর একটি ফোন। বিছানায় ছিল একটি স্মার্ট ফোনও। ভোর ৬টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন, জিনিসগুলি গায়েব। এর পরেই ঠাকুরপুকুর থানায় যান তিনি।
আবাসনে নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ এই কাজ করতে পারেন বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সেঁজুতিদেবী। তাঁর দাবি, ‘‘আমার শোয়ার ঘরের লাগোয়া একটি বারান্দা রয়েছে। ছাদ থেকে দড়ি বেয়ে সেই বারান্দায় সহজেই নামা যায়। আগে বাড়িতে নির্মাণকাজে যুক্তদের দেখেছি, সহজেই দড়ি বেয়ে তাঁরা ওই বারান্দায় নামছেন। তা ছাড়া ঘটনার দু’দিন আগে থেকেই পাশের ফ্ল্যাটের বাইরের দেওয়ালে নির্মাণকাজ চলছিল। সে জন্য ভারা বাঁধা ছিল।’’ তাঁর অনুমান, হয়তো ওই পথে কেউ বারান্দায় নেমে চুরি করে পালিয়েছে। তাঁর এই সন্দেহের কথাই থানায় অভিযোগপত্রে লিখেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর দাবি, অনুমানের ভিত্তিতে এ ভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যায় না— এই কথা বলে পুলিশ তাঁকে ওই বয়ান বদলাতে বলে। সেঁজুতি বলছেন, ‘‘আমার যা সন্দেহ হয়েছে, সেটাই জানাতে চেয়েছি। সন্দেহ সত্যি কি না, তা খতিয়ে দেখা পুলিশের কাজ!’’
এ বিষয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি ঠাকুরপুকুর থানার তদন্তকারী আধিকারিক। তবে যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) প্রবীণবাবু বলেন, ‘‘চুরি যাওয়া জিনিসের খোঁজ চলছে। ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’’