Advertisement
E-Paper

ইউটিউব দেখে ছক, পকেটমানির জন্য স্কুল-কলেজের ছাত্ররা শামিল বাইক চুরির গ্যাংয়ে!

ধৃত ছ’জনের মধ্যে চার জনই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া। বাকি দু’জনের মধ্যে এক জন একটি খাবার ডেলিভারি দেওয়ার সংস্থার কর্মী। ধৃতদের  মধ্যে দু’জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। বাইক চোর বাহিনীর কেরামতি দেখে তাজ্জব পুলিশও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ১৪:০৬
ধৃত দুই পড়ুয়া।— নিজস্ব চিত্র।

ধৃত দুই পড়ুয়া।— নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি থেকে দেওয়া পকেটমানিতে শখ মেটে না। দরকার বাড়তি টাকা। সেই বাড়তি টাকা জোগাড় করতেই বাইক চুরি করার শুরু। ক্রমশ বাইক চুরিতে এতটা হাত পাকিয়ে ফেলে ওই কিশোররা যে, পাকা অপরাধীও হার মেনে যাবে!

এমনই একটি বাইক চোরের দলকে পাকড়াও করল বাগুইআটি থানার পুলিশ। ধৃত ছ’জনের মধ্যে চার জনই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া। বাকি দু’জনের মধ্যে এক জন একটি খাবার ডেলিভারি দেওয়ার সংস্থার কর্মী। ধৃতদের মধ্যে দু’জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। বাইক চোর বাহিনীর কেরামতি দেখে তাজ্জব পুলিশও।

গত কয়েকমাস ধরেই বাগুইআটি, নিউটাউন, কৈখালি এলাকায় একের পর এক বাইক চুরির অভিযোগ আসছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু কিছুতেই কিনারা করতে পারছিলেন না গোয়েন্দারা। এলাকার দাগী বাইক চোরদের জেরা করেও মিলছিল না কোনও সূত্র। পুলিশ সূত্রে খবর, এ রকমই এক দাগী বাইক চোরকে জেরা করতে গিয়ে কয়েক জন চোরাই বাইকের কারবারির হদিশ মেলে। তাদেরই এক জনের উপর নজর রেখে খোঁজ মেলে ওই কিশোর গ্যাংয়ের।

বাগুইআটি থানার পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা প্রত্যেকেই স্বচ্ছ পরিবারের সন্তান। কারও বাবার ব্যবসা, কারও বাবা-মা চাকরি করেন। এরা সবাই বাগুইআটি, কেষ্টপুর, কৈখালি এলাকার বিভিন্ন আবাসনের বাসিন্দা। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের এক জন আদিত্য গুপ্ত। শোভাবাজার এলাকার একটি কলেজের ছাত্র। জেরায় জানা গিয়েছে, সে-ই বাইক চুরির ছক কষে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে, ইউটিউবে বাইক চুরির কৌশল দেখে তারা বাইক চুরি করা শিখেছে। তাদের টার্গেট থাকত একটু শুনশান এলাকাতে রাখা কোনও বাইক। দলের এক জন বাইকের চালকের জায়গায় বসত। অন্য জন তার পিছনে। তারপরেই ইউ টিউবে দেখা কায়দায় লক করা বাইকের হ্যান্ডেলে মোচড় দিয়ে লক ভেঙে ফেলত। তার পর ইগনিশনের তার ছিঁড়ে সরাসরি ব্যাটারির সঙ্গে জুড়ে স্টার্ট দিয়ে নিয়ে পালাত।

আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের বাঁচাতে খুন হওয়া ছাত্রের দেহ পুঁতে দিল স্কুল!

উদ্ধার হওয়া বাইক।— নিজস্ব চিত্র।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পুলিশ ধৃতদের জেরা করে ইতিমধ্যেই দু’টি চোরাই বাইকের হদিশ পেয়েছে। সেগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত সাত-আট মাস ধরে বাইক চুরি করছিল ওই গ্যাংটি। প্রায় ১২ টি বাইক ইতিমধ্যেই চুরি করেছে তারা।

আরও পড়ুন: মাসুদ আজহারকে কালো তালিকাভুক্ত করতে রাষ্ট্রপুঞ্জে নয়া পদক্ষেপ আমেরিকার

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের চার জনকে— আদিত্য গুপ্ত, অজয় মল্লিক, রাজা মণ্ডল এবং শামশের খানকে বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে তোলা হবে। বাকি দু’জনকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করা হবে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতদের তাঁরা জেরা করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইবেন। কারণ, ওই কিশোরদের পিছনে আরও কেউ আছে কি না তা জানা প্রয়োজন।

কেষ্টপুরের বাসিন্দা ধৃত এক স্কুল ছাত্রের বাবা বলেন, “আমরা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি যে ছেলে এ সব করে বেড়াচ্ছে। ছেলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। এক দিন আমাকে বলল, প্যান কার্ড বানিয়ে দিতে। প্রশ্ন করেছিলাম, প্যান কার্ড কি করবি? তখন বলল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলবে। তখন বুঝতে পারিনি এ সব কাজ করছে।”

পুলিশের দাবি, ধৃতরা স্বীকার করেছে নিজেদের বিভিন্ন ধরনের শখ মেটাতে অতিরিক্ত টাকার জন্যই বাইক চুরির পথে নেমেছিল তারা।

(শহরের প্রতি মুহূর্তের হেডলাইন, কলকাতার যে কোনও ব্রেকিং নিউজ পেতে ক্লিক করুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)

Police cycle Baguiati Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy