Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
brick kiln

অন্য ইটভাটায় পুলিশি নজরদারির অভাব নিয়ে প্রশ্ন

খুঁটিবেড়িয়া গ্রামের ওই ইটভাটায় বুধবার গিয়ে দেখা গেল, সেখানে যে ক’জন শ্রমিক রয়েছেন মালিকপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

খুঁটিবেড়িয়ার একটি ইটভাটায় কাজ করছে এক শিশু। নিজস্ব চিত্র

খুঁটিবেড়িয়ার একটি ইটভাটায় কাজ করছে এক শিশু। নিজস্ব চিত্র

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২৭
Share: Save:

ভিন্ রাজ্যের কালেক্টরেট অফিস থেকে চিঠি পেয়ে ১৭ জন শ্রমিককে উদ্ধার করলেও, ওই এলাকায় এখনও ভিন্ রাজ্যের বেশ কয়েক জন শ্রমিক রয়ে গিয়েছেন। তাঁদের উপরে আদৌ অত্যাচার হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত হয়েছে কি? বারুইপুর খুঁটিবেড়িয়ার ওই ইটভাটা-কাণ্ডের পরে এই প্রশ্ন উঠেছে।

খুঁটিবেড়িয়া গ্রামের ওই ইটভাটায় বুধবার গিয়ে দেখা গেল, সেখানে যে ক’জন শ্রমিক রয়েছেন মালিকপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এরই মাঝে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে এক মহিলা শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, দেহাতি হিন্দিতে তাঁর প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘‘এক হাজার ইট কত টাকায় কিনবে?’’ খোরাকির টাকা পাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে ওই মহিলা ভয়ে কিছু বলতে চাননি।

পাশাপাশি রয়েছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। অন্যগুলির একটিতে দেখা গেল, বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে ইট থেকে শুকনো ধুলো ঝাড়ছে ছোটরাও। যাদের কেউ পরিবারের সঙ্গে ভিন্ রাজ্য থেকে, কেউ সুন্দরবন থেকে এসেছে। ইট কেনাবেচার মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তি জানাচ্ছেন, ইটভাটায় রীতিমতো কাজে যুক্ত কিশোর শ্রমিকেরাও। তারা কাজের বিনিময়ে মজুরি পায় বলে জানাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। শিশুশ্রম তো নিষিদ্ধ! তবে কী ভাবে সেটা সম্ভব হচ্ছে। শ্রম দফতরের এক অফিসার মানছেন এ কথা। তিনি বলেন, ‘‘এ সব ক্ষেত্রে বলা হয় বাবা-মাকে সাহায্য করছে। বাবা-মাকে কাজে সন্তান সাহায্য করতে পারবে না বলে আইনে উল্লেখ নেই। ফলে আইনের সেই ফাঁক গলেই ওরা কাজ করে।’’

প্রশ্ন উঠছে, অন্য শ্রমিকদের কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হল না? কেনই বা দেখ হল না তাঁরাও একই ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছেন কি না? শ্রম দফতরের এক অফিসার জানান, এটি তাদের দেখার কথা নয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের অধীনে একটি ভিজিল্যান্স কমিটি থাকে। জেলাশাসকের নির্দেশে সেই কমিটি সংশ্লিষ্ট ইটভাটায় গিয়ে তদন্ত করে। এ ক্ষেত্রে কী সেই তদন্ত হয়েছিল? তা জানার জন্য জেলাশাসক পি উলগানাথনকে ফোন এবং মেসেজ করা হলেও কোনও উত্তর মেলেনি।

এ প্রসঙ্গে বারুইপুরের জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খানের বক্তব্য, শুধু ছত্তীসগঢ়ের কোরবা জেলার শ্রমিকদের বন্দি করে রাখার বিষয়ে সেখান থেকে চিঠি এসেছিল। আর কেউ শ্রমিকদের নিয়ে অভিযোগ করেননি। তাই পুলিশ অন্য শ্রমিকদের নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

brick kiln Police Investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE