Advertisement
E-Paper

অনিয়ম ধরতে অভিযানে প্রশাসন

কোথাও জোড়াতাপ্পি দেওয়া গাড়ির চাকা, কোথাও বা অপ্রশিক্ষিত চালক। তিন সপ্তাহে তিনটি দুর্ঘটনা এবং একটিতে এক চালকের মৃত্যুর পরেও এ ভাবেই চলছে শহরের স্কুলবাস ও পুলকার। হুঁশ ফেরেনি কারওরই।

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০১:০৬

কোথাও জোড়াতাপ্পি দেওয়া গাড়ির চাকা, কোথাও বা অপ্রশিক্ষিত চালক।

তিন সপ্তাহে তিনটি দুর্ঘটনা এবং একটিতে এক চালকের মৃত্যুর পরেও এ ভাবেই চলছে শহরের স্কুলবাস ও পুলকার। হুঁশ ফেরেনি কারওরই। অগত্যা দুর্ঘটনায় রাশ টানতে এ বার একযোগে পথে নামছে পরিবহণ দফতর ও পুলিশ। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কলকাতার মোটর ভেহিক্‌লস বিভাগের ডিরেক্টরের নেতৃত্বে চার সদস্যের পাঁচটি পর্যবেক্ষক দল গঠন করা হয়েছে। তাতে রয়েছেন পরিবহণ ও পুলিশের অফিসারেরা।

আগামী সোমবার থেকে শহরের রাস্তায় স্কুলবাস ও পুলকার থামিয়ে চালকের লাইসেন্স, চাকার অবস্থা এবং গোটা নিরাপত্তা-ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে দলগুলি। প্রতিদিনই পরিবহণ দফতরের সচিবের কাছে সেই রিপোর্ট পেশ করা হবে। বেআইনি কিছু থাকলে জরিমানা করা হবে সংশ্লিষ্ট স্কুলবাস ও পুলকারকে। পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে বলে জানান দফতরের এক কর্তা।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৪ জুন তপসিয়া মোড়ের কাছে একটি স্কুলবাস উড়ালপুলের স্তম্ভে ধাক্কা মারে। ঘটনায় মৃত্যু হয় বাসচালকের। তদন্তে বেরোয়, চাকা এতটাই মসৃণ ও তাপ্পি দেওয়া ছিল যে ব্রেক কষার পরেও বাস থামেনি। এর পরে ফের ১ জুলাই বেলগাছিয়ায় সেতু থেকে নামার সময়ে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফুটপাথের রেলিংয়ে ধাক্কা মারে একটি স্কুলবাস। সে ক্ষেত্রেও দেখা যায়, গাড়ির চাকা মসৃণ হয়ে গিয়েছিল। ১১ জুলাই, সোমবার তৃতীয় দুর্ঘটনাটিতে বিধাননগরের বি ব্লকের সামনে দু’টি স্কুলগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, যে গাড়িটিতে ধাক্কা লাগে সেটির চালককে আগে ওই গাড়ি চালাতে দেখা যায়নি। অভিভাবকেরা জানান, প্রতিদিন ওই গাড়িটিতে অন্য এক চালক থাকেন। অর্থাৎ, নজরদারির গড়িমসিতে চালক বদল হলেও তা জানতেই পারছেন না অভিভাবকেরা!

তপসিয়ায় দুর্ঘটনার পর থেকেই পথে নেমে স্কুলবাস ও পুলকার পরীক্ষা করছিল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফে গাড়ির চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেই পরপর দুর্ঘটনায় প্রতি ক্ষেত্রেই রিসোলিং বা তাপ্পি দেওয়া চাকাই যে প্রধান খলনায়ক তা বুঝতে পেরেছে পরিবহণ দফতর। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে তাই এ বার পর্যবেক্ষক দল গড়ে ধরপাকড় শুরু করা হচ্ছে।

দফতরের এক কর্তা জানান, কলকাতা এবং বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোটা এলাকাকে মোট পাঁচটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি পর্যবেক্ষক দলে থাকবেন কমপক্ষে চার জন সদস্য। তার মধ্যে টেকনিশিয়ন ও নন-টেকনিশিয়ন মিলিয়ে তিন জন পরিবহণ দফতরের মোটর ভেহিক্‌লস বিভাগের কর্মী এবং এক জন করে পুলিশকর্মী থাকবেন। সোমবার থেকে কলকাতা পশ্চিম, কলকাতা পূর্ব, মধ্য কলকাতা, শ্যামবাজার এলাকা এবং বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় চলবে নজরদারি।

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, বারবার স্কুলগুলিকে এ বিষয়ে সচেতন হতে বলেও ফল হয়নি। তাঁর অভিযোগ, যে স্কুলের নিজস্ব বাস বা পুলকার রয়েছে তাঁরা দায় নিতে চাইলেও যে সমস্ত স্কুলে চুক্তির ভিত্তিতে বাস চলে, তাঁরা দায় নিতেই নারাজ। সে ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর ও পুলিশের কড়া পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই বলে জানান ওই কর্তা।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতরের সঙ্গে আমরা পথে নামছি। আইন মেনেই প্রয়োজনে জরিমানা করা হবে। স্কুলপড়ুয়াদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’’

Traffic school drivers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy