দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়াও প্যাসেঞ্জার ট্রেনে যাত্রীদের একাংশের চেন টানার প্রবণতা নিয়ে উদ্বিগ্ন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। জরুরি কারণ ছাড়াই যাত্রীদের একাংশ ভোর বা রাতের দিকে পছন্দসই গন্তব্যে নেমে যেতে অ্যালার্ম চেন টানছেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় প্রায়ই একাধিক এক্সপ্রেস ছাড়াও বহু প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে আবার স্টেশনে ট্রেন পৌঁছনোর পরে যাত্রীদের একাংশের পরিচিত জন বা সঙ্গী এসে না পৌঁছনোর কারণেও চেন টানার ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। তবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটছে মূলত সেই সব স্টেশনে, যেখানে তুলনামূলক ভাবে ট্রেনের সংখ্যা কম। যাত্রীদের একাংশ খুব ভোরে কিংবা বেশি রাতে বাড়ির কাছাকাছি সুবিধাজনক বিভিন্ন ছোট স্টেশনে চেন টেনে নেমে পড়ছেন বলে অভিযোগ।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পূর্ব রেলে ৩৮৩৯টি চেন টানার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু অক্টোবর মাসেই ৯৮টি দূরপাল্লার ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা ধাক্কা খেয়েছে চেন টানার কারণে। রেলের খাতায় ওই সময়ে হাওড়া ডিভিশনে ২৭টি, আসানসোল ডিভিশনে ৩৭টি এবং মালদহে ৩১টি এমন ঘটনা ঘটেছে।
বিগত ১০ মাসের পরিসংখ্যান বলছে, হাওড়া ডিভিশনে ১১৫৯টি, শিয়ালদহে ১৭৮টি, আসানসোলে ১২২৩টি এবং মালদহ ডিভিশনে ১২৭৮টি চেন টানার ঘটনা ঘটেছে। এই কারণে কলকাতা-সহ বিভিন্ন শহরে চিকিৎসার প্রয়োজনে আসা রোগীদের অনেকেরই ডাক্তার দেখানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিছু ক্ষেত্রে ট্রেন বদল করে অন্যট্রেন ধরার ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।
সমস্যা সামলাতে দোষীদের খুঁজে বার করার ক্ষেত্রে কড়া অবস্থান নিচ্ছে রেল। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩৮০০টি এমন ঘটনায় রেল ৩৬৫১ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি, যাত্রীদেরও সচেতন করা হচ্ছে। ট্রেনের চেন টানলে এয়ার ব্রেকের বাতাসের চাপ কমে যায়। ফলে, ব্রেক আটকে যায়। এই অবস্থা স্বাভাবিক করতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। সব মিলিয়ে ট্রেনের দেরি হয়। সমস্যা মোকাবিলায় ট্রেনে থাকা রক্ষীদের এবং অন্য যাত্রীদের তৎপর করছে রেল। যাতে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে সহযাত্রীদের সাহায্য মেলে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)