Advertisement
E-Paper

২৪ ঘণ্টা পুলিশি নজরে টালা সেতু, উদ্বোধনের দু’মাসে দুর্ঘটনা একটি

দুর্গাপুজোর মুখে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর টালা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। তার দু’দিন আগে নবনির্মিত সেতুটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ০৭:১৬
টালা সেতুতে কমেছে দুর্ঘটনা।

টালা সেতুতে কমেছে দুর্ঘটনা। — ফাইল চিত্র।

কলকাতা শহরে কোনও সেতু বা উড়ালপুলের উদ্বোধন হলেই চিন্তায় পড়ে লালবাজার। দুর্ঘটনা রোখার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়, সেতুর উপরে গতির তুফান তোলা গাড়ি বা মোটরবাইকের কসরত (স্টান্ট)। প্রথম কয়েক মাসে আবার রাতে চিন্তা বাড়ায় উৎসাহী জনতার সেতু ঘুরে দেখার ‘জয়রাইড’। নবনির্মিত টালা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে এই সব সমস্যায় পড়তে হবে কি না, তা ভেবে চিন্তায় ছিল পুলিশ। তবে উদ্বোধনের দু’মাসের মাথায় দেখা যাচ্ছে, বেপরোয়া গাড়ি ও বাইকের কসরত আটকানো তো গিয়েছেই, দুর্ঘটনাও কমানো গিয়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। অতীতে অন্যান্য সেতু বা উড়ালপুলের ক্ষেত্রে উদ্বোধনের দু’মাসের মধ্যে পুলিশকে গড়ে ১০-১২টি করে দুর্ঘটনার রিপোর্ট লিখতে হয়েছে। টালা সেতুর ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা মাত্র একটি!

এই সাফল্য প্রসঙ্গে পুলিশের দাবি, সেতুতে ছ’টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। শীঘ্রই আরও ১০টি ক্যামেরা লাগানোর কথা। তবে, শুধু ক্যামেরায় নজরদারির উপরে ভরসা না রেখে সেতুর দু’দিকেই ২৪ ঘণ্টা পুলিশকর্মী মোতায়েন রাখা হয়েছিল। রাতেও ছিলেন সাদা পোশাকের বিশেষ পুলিশকর্মী। সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য, ‘জয়রাইড’ বা বাইকের কসরত বন্ধ করতে বাইক নিয়ে নজরদারিতে থেকেছেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। এমন কেউ সেতুতে উঠলেই ধাওয়া করে তাঁকে ধরা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘যে কোনও সেতুতে সব চেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে রাত ১২টা থেকে ২টোর মধ্যে এবং ভোরের দিকে। এই দুই সময়েই নজরদারির জন্য টালা সেতুতে পুলিশকর্মী বাড়ানো হয়েছে। বাইক নিয়ে নজরদারিতে থেকেছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা।’’ ওই কর্তার দাবি, টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তর কলকাতার ওই অংশে যানজটের যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, প্রায় আড়াই বছর ধরে শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশকর্মীদের তা সামলানোর অভিজ্ঞতা কাজে লেগে গিয়েছে।

দুর্গাপুজোর মুখে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর টালা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। তার দু’দিন আগে নবনির্মিত সেতুটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে বাস ও ছোট মালবাহী গাড়ির চলাচল শুরু হয় সেতুতে। এখন ওই সেতুর গায়ে এক দিকের সিঁড়ি এবং জলের পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার কাজ হচ্ছে। প্রথম থেকেই কড়া নজরদারি চালানো হলেও গত ৬ অক্টোবর রাতে ঘটে একমাত্র দুর্ঘটনাটি। তাতে মৃত্যু হয় লালু গুপ্ত (৫৫) নামে এক মোটরবাইক চালকের।

যদিও এ ক্ষেত্রে বাইকচালকেরই দোষ ছিল বলে পুলিশের দাবি। রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ গিয়ে দেখে, টালা সেতুর যে ফ্ল্যাঙ্ক ধরে শ্যামবাজারের দিকে আসার কথা, সেখান দিয়েই বাইক নিয়ে চিড়িয়ামোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন লালু। একটি গাড়ির সঙ্গে তাঁর বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতি রাতেই নিয়ম ভেঙে আর জি কর হাসপাতালের দিক থেকে মন্মথনাথ গাঙ্গুলি রোড ধরে এসে টালা সেতুর শ্যামবাজারের দিকে আসার ফ্ল্যাঙ্কে উঠে চিড়িয়ামোড়ের দিকে যেতেন লালু। বন্ধুদের বলেছিলেন, ‘‘এই ভাবে এলে তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছনো যায়।’’ কিন্তু সেই তাড়নাই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁর।

Tallah Bridge Kolkata Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy