E-Paper

মালিকের বিশ্বাসের সুযোগে গাড়ি নিয়ে পলাতক ভাড়াটে চালক

গাড়ির মালিক পুলিশকে জানান, মঙ্গলবার সপরিবার বাড়ি থেকে ভাড়ার ওই চালককে নিয়ে তিনি ভবানীপুর থানার শরৎ বসু রোডের একটি রেস্তরাঁয় আসেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ০৮:২৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ভাড়ায় নেওয়া চালকের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে সপরিবার বেরিয়েছিলেন মালিক। উদ্দেশ্য ছিল, রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়া। কিন্তু সেখানে পৌঁছে গাড়ি থেকে নামতেই বিপত্তি। পার্কিং করে আসার কথা বলে গাড়ি নিয়ে চম্পট দিলেন সেই চালকই। দ্রুত পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও রহস্যের উদ্ঘাটন হয়নি। কারণ, গাড়িতে লাগানো জিপিএস ট্র্যাকার খুলে অন্য গাড়িতে ফেলে দেন সেই চালক। ফলে জিপিএসের সূত্র ধরে পুলিশ পৌঁছল অন্য গাড়িতে!

মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত গাড়িটির খোঁজ পায়নি পুলিশ। খোঁজ নেই অভিযুক্তেরও। সব মিলিয়ে এখন খড়ের গাদায় সুচ খোঁজার পরিস্থিতি পুলিশের। শহর ও শহরতলি জুড়ে কয়েক হাজার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। যদিও গাড়ির নম্বর প্লেট বদলে পুলিশকে আরও বিপাকে ফেলা হবে কিনা, সেই নিয়েই চিন্তায় তদন্তকারীরা।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়িটির মালিক তথা অভিযোগকারীর বাড়ি হরিদেবপুর থানার আর এন ঠাকুর রোডে। লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, দিন কয়েক আগে নিজেদের গাড়ির জন্য চালকের খোঁজ শুরু করেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে চালক খুঁজে না পেয়ে গুগলে সার্চ করেন। সেখানেই একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে চালকের খোঁজ পান। দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে রফা হয়। ৬ ঘণ্টা চালক কাজ করবেন বলে ‘চাকরির’ শর্তে গাড়িমালিককে জানিয়েও ছিলেন তিনি।

গাড়ির মালিক পুলিশকে জানান, মঙ্গলবার সপরিবার বাড়ি থেকে ভাড়ার ওই চালককে নিয়ে তিনি ভবানীপুর থানার শরৎ বসু রোডের একটি রেস্তরাঁয় আসেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা গাড়ির চালকই তাঁদের নিয়ে আসেন। গাড়ির মালিকের দাবি, কথা মতো শরৎ বসু রোডের ওই রেস্তরাঁর সামনে গাড়ি থেকে সকলকে নামিয়েও দেন চালক। এর পরে মালিককে চালক জানান, পার্কিং করতে গাড়ি কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। চালকের কথায় সন্দেহ না হওয়ায় কিছু মনে না করেই রেস্তরাঁয় পরিবার নিয়ে ঢুকে যান মালিক। চালককে নিয়ে কোনও সন্দেহ না হওয়ায় গাড়িটি কোথায় তিনি রেখেছেন, তা জানতে ফোনও করেননি অভিযোগকারী।

গাড়ির মালিকের দাবি, খাওয়াদাওয়ার শেষে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে আসার জন্য চালককে ফোন করতেই তাঁর মোবাইল বন্ধ আছে বলায় সন্দেহ হয়। বেশ কিছু সময় রেস্তরাঁর আশপাশের খোঁজার পরেও নিজের গাড়ির কোনও খোঁজ না পেয়ে মঙ্গলবারই ওই ব্যক্তি ভবানীপুর থানার দ্বারস্থ হন।

তদন্তে নেমে পুলিশ গাড়ির অবস্থান জানতে জিপিএস খতিয়ে দেখে। তার মাধ্যমে প্রথমে তারা জানতে পারে, গাড়িটি আসানসোলে রয়েছে। যদিও সেখানে পুলিশের দল পৌঁছলেও গাড়ির খোঁজ মেলেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, গাড়িটিতে লাগানো জিপিএস আগেই খুলে অন্য গাড়িতে ফেলে দিয়েছিল অভিযুক্ত। ফলে তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে ধোঁয়াশায় পড়তে হয়েছে তদন্তকারীদের। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে ভবানীপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘এর পিছনে গাড়ি চুরি চক্রের একটি দল থাকতে পারে। শহরে গত কয়েক সপ্তাহে এ ভাবে গাড়ি চুরি হয়েছিল কিনা দেখা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bhawanipore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy