Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

scam:রুপোর মুদ্রার টোপ গিলে খোয়া গেল পাঁচ লক্ষ

যাঁদের থেকে হার কিনেছিলেন, তাঁদের ফোন করা শুরু করেন অসীমবাবু। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৫৮
Share: Save:

রুপোর পুরনো মুদ্রা দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছিল। শেষে নকল সোনার হার হাতে তুলে দিয়ে হাতিবাগান এলাকার এক বাসিন্দার থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ! গত ১৪ সেপ্টেম্বরের এই ঘটনায় প্রতারিত ব্যক্তি শ্যামপুকুর থানার দ্বারস্থ হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি বলে অভিযোগ। এর পরে সরাসরি পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে সুরাহা চেয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবারই লালবাজারে ডেকে পাঠিয়ে অভিযোগ শোনা হয়েছে ওই ব্যক্তির।

অসীমকুমার দে নামে বছর ৬৩-র ওই প্রৌঢ় স্টিল অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। শ্যামপুকুর স্ট্রিটে স্ত্রী চন্দনা ও বছর ত্রিশের ছেলে অর্চনকে নিয়ে তিনি থাকেন। অর্চন একটি বহুজাতিক সংস্থার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। অসীমবাবু জানান, দিন কয়েক আগে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ দিয়ে তিনি হেঁটে যাওয়ার সময়ে এক ব্যক্তি দু’টি পুরনোরুপোর মুদ্রা দেখিয়ে সেগুলি কোথায় বদল করা যায় জানতে চান। অসীমবাবুর কথায়, ‘‘ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর কাছে অনেক রুপোর মুদ্রা রয়েছে। তখন তাঁকে বলি, এগুলো বদল করলে বেশি টাকা পাওয়া যাবে না। বরং আমায় বিক্রি করে দিন। ওই ব্যক্তিও রাজি হয়ে যান। আমাকে একটা রুপোর মুদ্রা দিয়ে চলে যান। সোনার দোকানে খোঁজ করে জেনে নিই, প্রতিটি মুদ্রা ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে পারে। ওই ব্যক্তিকে ফোনে বলে দিই, এক-একটি মুদ্রা চারশো টাকায় কিনতে পারি।”

পরে ওই ব্যক্তি দাবি করেন, সামনে তাঁর মেয়ের বিয়ে। টাকার দরকার। তাঁদের কাছে কিছু সোনার হার রয়েছে। সেগুলো তাঁরা বিক্রি করতে চান। হার দেখতে অসীমবাবুকে হাওড়া স্টেশনে আসতে বলা হয়। নিজেকে লিলুয়ার বাসিন্দা বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি তাঁর দাদা ও মাকে নিয়ে স্টেশনে আসেন। সেখানেই অসীমবাবুকে তাঁরা দু’টি হার দেখান। কেনার আগে হারটি আসল না নকল পরীক্ষা করতে তাঁর সঙ্গে কাউকে যেতে বলেন প্রৌঢ়। কিন্তু অসীমবাবুর দাবি, কেউ তাঁর সঙ্গে যেতে রাজি হননি। বদলে পরীক্ষা করার জন্য ওই হার থেকে কিছুটা ছিঁড়ে তাঁর
হাতে দিয়ে যান ওই ব্যক্তি। পাড়ার সোনার দোকানে পরীক্ষা করিয়ে সোনা বলে নিশ্চিত হন অসীমবাবু। নিজের স্থায়ী আমানত ভেঙে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে ওই হারগুলি কিনবেন বলেও ঠিক করেন।

১৪ সেপ্টেম্বর ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে হাওড়া স্টেশনে গিয়ে হারটি নিয়ে আসেন প্রৌঢ়। সেগুলি পাড়ার সোনার দোকানে দেখাতেই তাঁকে বলা হয়, হার সোনার নয়। আর একটি দোকানে পরীক্ষা করিয়েও মেলে এক উত্তর। যাঁদের থেকে হার কিনেছিলেন, তাঁদের ফোন করা শুরু করেন অসীমবাবু। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল।

এর পরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই প্রৌঢ়। তাঁর কথায়, “এত কম টাকায় সোনার হার পাওয়াযাবে ভেবে লোভ হয়েছিল।” লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, যে রাস্তায় অসীমবাবুর সঙ্গে প্রতারকেরপ্রথম দেখা হয়েছিল, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। হাওড়া স্টেশনের রেল পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে শ্যামপুকুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এক জন এসআই ওই প্রৌঢ়ের অভিযোগ শুনেছেন। তদন্তের জন্য সময় প্রয়োজন। অভিযোগকারী তার আগেই লালবাজারে চলে গিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE