রাস্তার দু’ ধারে রকমারি দখলদারি। বাজার উঠে এসেছে রাস্তায়। ফলে সঙ্কীর্ণ হয়েছে রাস্তা। বছরভর পড়ে থাকে পাথরকুচি, বালি। কার্যত বিনি-পয়সার গুদাম। ফলে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বাধ্য হন পথচারী। এ দিকে, পাল্লা দিয়ে গাড়ির সংখ্যা বাড়ায় যানজট, দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। সেই সঙ্গে বেপরোয়া যান চলাচলে অতিষ্ঠ হচ্ছেন স্থানীয়েরা।
দমদম রোডের উপরে দমদম স্টেশন থেকে নাগেরবাজার, যশোর রোডে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার এই ছবিই দেখা যায়। কয়েক বার অভিযান চালালে কিছু দিনের জন্য রাস্তা উন্মুক্ত হলেও ফের দখলে চলে যায়। নাগেরবাজারের এক বাসিন্দা শুভেন্দু বসু বলেন, ‘‘বাজার রাস্তায় উঠে আসায় যাতায়াতে খুবই অসুবিধা হয়। ফুটপাথ দিয়ে হাঁটার উপায় নেই। অনেক স্থায়ী দোকানও সামনের ফুটপাথে জিনিস রেখে দখল করে থাকে।’’
যদিও এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি দখলের অভিযোগ নতুন নয়। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এমন ভাবেই চলে আসছে। বড় দুর্ঘটনা ঘটলে কিছুটা নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কিছু দিন পর যে কে সেই। অথচ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে তৈরি হয়েছে পুলিশ কমিশনারেট। তাতেও ছবি বদলায়নি।
এ বার সেটাই বদলাবে। অন্তত চেষ্টা চলবে। এমন দাবি সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির। সম্প্রতি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের সঙ্গে ট্র্যাফিক নিয়ে বৈঠক হয় বিভিন্ন পুরসভার। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাস্তা যে ভাবেই হোক পথচারী এবং গাড়ি চলার জন্য উন্মুক্ত করতেই হবে। শুক্রবার দখলদারদের সরে যাওয়ার আবেদন জানিয়ে ওই সব এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়েছে। আজ, শনিবার পর্যন্ত সরে যাওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে খবর, আগামীকাল রবিবার কিছু জায়গায় অভিযান শুরু করা হবে।
সম্প্রতি দমদম রোড এবং যশোর রোডে দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিবাদে পথ অবরোধও করেছেন স্থানীয়েরা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই সব এলাকায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থাই নেই। কয়েকটি মোড়ে কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার যান নিয়ন্ত্রণ করেন। চালকেরাও কারও কথা শোনেন না।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সমস্যার কথা বলেছি। সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্রুত রাস্তা থেকে বাজার সরানো হবে। পাশাপাশি যত্রতত্র ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখা এবং গাড়়ি রাখা বন্ধ করা হবে। পুলিশ প্রশাসন সে কাজ করবে, পুরসভা পূর্ণ সহযোগিতা করবে।’’
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘এই সমস্যা মেটাতে ট্র্যাফিক দফতরকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, নজরদারি ও যানজট নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করার চিন্তাভাবনা করছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। পাশাপাশি চলবে অভিযানও।