Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata

Sabir restaurant: অদর্শনের পরে ফিরে এল শহরের প্রিয় রেজ়ালা

সোমবার দুপুরে সেই সব দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে ফের স্বমহিমায় ফিরেছে সাবিরের মাটন রেজ়ালা। তবে সে ভাবে কোনও ঘোষণা বা সমাজমাধ্যমে প্রচারের ঢক্কানিনাদ শোনা যায়নি।

প্রত্যাবর্তন: রেস্তরাঁ খুলতেই হাজির রেজ়ালাও। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যাবর্তন: রেস্তরাঁ খুলতেই হাজির রেজ়ালাও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৩১
Share: Save:

অতিমারির দিনকালে তার অনুপস্থিতি দেখে অনেকেরই বুকটা ছ্যাঁত করে উঠেছিল। ইন্টারনেটে কেউ কেউ লিখেও দিয়েছিলেন— ‘চিরতরে বন্ধ’ (পার্মানেন্টলি ক্লোজ়ড)। দীর্ঘশ্বাস ঘনিয়ে উঠেছিল বহু কলকাতাপ্রেমীর।

সোমবার দুপুরে সেই সব দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে ফের স্বমহিমায় ফিরেছে সাবিরের মাটন রেজ়ালা। তবে সে ভাবে কোনও ঘোষণা বা সমাজমাধ্যমে প্রচারের ঢক্কানিনাদ শোনা যায়নি। কার্যত বিনা নোটিসে চাঁদনি চকের রেজ়ালাক্ষেত্রটি খুলতেই রসিকজন যথারীতি হাজির। ঠাকুরপুকুরের দুই বন্ধু শ্রেয়সী দাশগুপ্ত ও সুচরিতা চক্রবর্তী যেমন এসেছেন মায়েদের নিয়ে। ভাদ্র মাসের দুপুরে বিরিয়ানি-কাবাবের সঙ্গে সাবিরের অবশ্য আস্বাদনীয় রেজ়ালা নিয়ে বসলেন তাঁরা। শ্রেয়সী বলছিলেন, ‘‘নিউ মার্কেটে পুজোর কেনাকাটা করতে এসেছিলাম। এত কাছে এসে তো মনটা রেজ়ালা-রেজ়ালা করেই ওঠে। তাই আশায় আশায়, একটু হেঁটে এসেই পেয়ে গেলাম।’’

সাবির এমনিতে প্রায় স্বাধীন ভারতের সমবয়সী। উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের কাছে দরিয়াগঞ্জের সাবির আলি রেস্তরাঁ খোলেন চাঁদনি চকে। সেই ঠিকানাতেই থিতু রয়েছে রেস্তরাঁ। ইরান সফরের সুবাদে রেজ়ালার ভাবনা খেলছিল তাঁর মাথায়। সেই ইরানি রান্না ক্রমে কলকাতার একটি পরিচয় হয়ে ওঠে। ১৯৫৫ সালে সোভিয়েত নেতা ক্রুশ্চেভ-বুলগানিনদের কলকাতা সফরের দিনে রেজ়ালার রূপকার বাবুর্চি ইব্রাহিম-আব্দুল গনিদের রাজভবনে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সে বার রুশ অতিথিদের পাতে পড়েছিল সাবিরের রেজ়ালা। চিকিৎসক, মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ও নাকি স্বাস্থ্য ফেরাতে সেই স্বাদু ঝোলে ভাসমান মাংসখণ্ড খাওয়ার পরামর্শ দিতেন।

এ যাত্রায় রেস্তরাঁর অন্যতম কর্ণধার ফুজ়েল জামালের (সাবির সাহেবের প্রপৌত্র) অসুস্থতার কারণে রেস্তরাঁ পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেয়। ফুজ়েলের কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর কাকা আসাদ জামালও এখন লখনউয়ে। ফলে আপাতত হাল ধরেছেন ফুজ়েলের ছোট ভাই সাহিদ আদিল। রেস্তরাঁর কয়েক জন অংশীদারের সঙ্গে কিছু সমস্যা হলেও সাবিরের জয়যাত্রা টেনে নিয়ে যেতে তাঁরা এখন বদ্ধপরিকর। কোভিডের সময়ে কলকাতার বেশ কয়েকটি পুরনো খাবারের জায়গা ধাক্কা খেয়েছে। তবে সাহিদ বলছেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই বাড়তি শাখা খুলব। কেটারিংও শুরু হবে।’’

সাবিরের বাবুর্চি, কারিগরেরা বেশির ভাগই ঝাড়খণ্ডের গিরিডির। তাঁরাও ফিরে এসেছেন দেশ থেকে। ফিরেছেন রেজ়ালার এখনকার মুখ্য রূপকার হায়দর আলি ওরফে কাল্লু মিয়াঁও। রেজ়ালা ছাড়াও চিরাচরিত সাদা ফিরনি, শাহি টুকরা— সাবিরে ফিরেছে সবই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata sabbir Resturant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE