Advertisement
E-Paper

বাইরে পুলিশ, যোগেশচন্দ্রে সরস্বতী পুজো হল হাই কোর্টের নির্দেশে, বিতর্কে ইতি চান পড়ুয়ারা

কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার অজয় প্রসাদের নজরদারিতে কলেজের গেটের বাইরে পুলিশি প্রহরা রয়েছে। প্রতি মুহূর্তের খবর জানানো হয়েছে তাঁকে। শেষে তিনি নিজেই উপস্থিত হন কলেজে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৪২
(বাঁ দিকে) কলেজের বাইরে রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের পুজোর প্রতিমা (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) কলেজের বাইরে রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের পুজোর প্রতিমা (ডান দিকে) — নিজস্ব চিত্র।

কড়া পুলিশি প্রহরার মধ্যেই যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে রবিবার সকালে হল সরস্বতী পুজো। যেমন নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার অজয় প্রসাদের নজরদারিতে কলেজের গেটের বাইরে সশস্ত্র পুলিশি প্রহরা রয়েছে। প্রতি মুহূর্তের খবর জানানো হয়েছে তাঁকে। শেষে দুপুরে তিনি নিজেই উপস্থিত হন কলেজের বাইরে। কলেজের বাইরে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পুজোর জায়গায় পুলিশ নেই। শুধুই পড়ুয়া, অধ্যাপক এবং শিক্ষাকর্মীরা রয়েছেন। আইন কলেজের পুজো দেখতে গিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, স্থানীয় সাংসদ মালা রায়। ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন, বিতর্কের কথা তাঁরা পুজোর দিনে মনে রাখতে চান না। শুধুই আনন্দ করে দিনটা কাটাতে চান।

রবিবার সকাল থেকেই যোগেশচন্দ্র কলেজ চত্বরে জড়ো হন আইন কলেজের পড়ুয়ারা। হাই কোর্টের নির্দেশে ভেঙে দেওয়া হয়েছে নির্মাণ। সেখানে পুজোর আয়োজন করেছেন তাঁরা। কলেজের গেটে মাইক লাগিয়ে চালানো হয়েছে সরস্বতী আরাধনার গান। ডে কলেজের পড়ুয়ারা ইন্দ্রাণী পার্কের পাশে নিজেদের পুজোর আয়োজন করেছেন। সকাল থেকে কলেজের বাইরে মোতায়েন ছিল পুলিশ। পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখার পরেই পড়ুয়াদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে কলেজে। পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, পুজোর সময় ভিতরে উপস্থিত থাকতে পারবে না সংবাদমাধ্যমও। বার বার পরিস্থিতির খবর নিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার অজয়। দুপুর নাগাদ তিনি নিজেই পৌঁছে যান কলেজে। তাঁর কথায়, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশে পুজোয় নজরদারি করতে এসেছি।’’

যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের পুজো।

যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের পুজো। — নিজস্ব চিত্র।

আইনের ছাত্রী দোয়েল ভৌমিক জানিয়েছেন, বিতর্কের কথা মনে রাখতে চান না তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘আজ বিতর্কের কথা মনে করতে চাই না। শুধুই মায়ের পুজো করে আনন্দে কাটাতে চাই দিনটি।’’ আইন বিভাগের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী চন্দ্রাবলী রায় বলেন, “২৯ তারিখ অনার্স পেপার ওয়ানের পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে শুনলাম কলেজের পুজো নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। শুনে মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল। সব শেষে আমরা যে এই পুজো করতে পারছি, সেটাই আনন্দের। ঝগড়া থাকতেই পারে, তা বলে মায়ের আরাধনা বন্ধ করে দেওয়া হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।” পুরোহিত দীপক দেবশর্মা বলেন, ‘‘পুজো হবে না এমন ভাবনা কখনওই আসেনি। আমি তো এই পুজোর ফর্দ দিয়েছি এক সপ্তাহ আগে।”

গত শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে সরস্বতী পুজোর অনুমতি দেয়। উচ্চ আদালত জানায়, বহিরাগতেরা যাতে কলেজে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। কলেজে কারা প্রবেশ করছেন, কারা বার হচ্ছেন, তার উপরও নজর দিতে হবে। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ)-এর নজরদারিতে হবে যোগেশচন্দ্র ডে এবং আইন কলেজের সরস্বতী পুজো। সেই নির্দেশ মেনেই পুলিশ প্রহরায় কলেজে হচ্ছে পুজো।

যোগেশচন্দ্র আইন কলেজ এবং যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের ক্লাস হয় একই ক্যাম্পাসে। আইন কলেজের এক পড়ুয়া তাঁদের কলেজ চত্বরে সরস্বতী পুজো করতে চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মামলাকারী অভিযোগ করেছিলেন, যে জায়গায় তাঁরা পুজো করে এসেছেন, তা দখল করেছে ডে কলেজ। আদালতে ডে কলেজের তরফে দাবি করা হয়, পুজোর জায়গায় অস্থায়ী নির্মাণ তৈরি করেছেন বহিরাগতেরা। এই বহিরাগতদের কলেজে প্রবেশের উপর আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি কলেজে এই বহিরাগতদের ‘উপদ্রব’ আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শুক্রবার পুলিশ মোতায়েন করে সরস্বতী পুজোর কথা জানিয়ে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজের ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার পুলিশি প্রহরায় হল পুজো।

Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy