E-Paper

লাইন পারাপারে মৃত্যু এড়াতে ইস্পাতের বেড়া দেবে শিয়ালদহ ডিভিশন

জানা গিয়েছিল, সারা দেশে ২০২৩ সালে রেলে দুর্ঘটনার হার বেড়েছে ৬.৭ শতাংশ হারে। ২০২৩ সালে রেলে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যার ৭২.৮ শতাংশই মারা গিয়েছেন ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে, ট্রেন থেকে পড়ে অথবা লাইনে কাটা পড়ে।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩০

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অবাঞ্ছিত লাইন পারাপারের ঘটনায় বেড়ে চলা মৃত্যুর পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রেলে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন বিভিন্ন রেল স্টেশন ছাড়াও জনবহুল এলাকায় লাইন পারাপার ঠেকাতে ইস্পাতের গার্ডার বসিয়ে বিশেষ ধরনের বেড়া দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।

মাসখানেক আগে প্রকাশিত ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরোর তথ্য থেকে জানা গিয়েছিল, সারা দেশে ২০২৩ সালে রেলে দুর্ঘটনার হার বেড়েছে ৬.৭ শতাংশ হারে। ২০২৩ সালে রেলে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যার ৭২.৮ শতাংশই মারা গিয়েছেন ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে, ট্রেন থেকে পড়ে অথবা লাইনে কাটা পড়ে। আবার ওই সব দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মধ্যে বিভিন্ন লেভেল ক্রসিংয়ে কাটা পড়ার ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে উত্তরপ্রদেশের পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। উত্তরপ্রদেশে ২০২৩ সালে ১০২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই ভাবে। পশ্চিমবঙ্গে ওই সংখ্যা ছিল ৮০৫। বস্তুত, জনবহুল এলাকায় লেভেল ক্রসিং ছাড়াও রেললাইন পারাপার করতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা সারা দেশের তুলনায় মধ্য এবং পশ্চিম রেলে যথেষ্ট বেশি। ওই পরিসংখ্যানে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে উপরের দিকে। আবার রাজ্যের মধ্যে এই ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা শিয়ালদহ ডিভিশনে বেশি।

রেলের পক্ষ থেকে ওই দুর্ঘটনা কমানোর উদ্দেশ্যে স্থানীয়দের নিরাপদ পারাপারের ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন স্টেশনে ফুট ওভারব্রিজ অথবা আন্ডারপাস তৈরি করা হচ্ছে।কিন্তু, একাধিক ব্যস্ত এবং জনবহুল এলাকায় রেললাইনের ধার ঘেঁষে বসতি, বাজার গড়ে উঠেছে। ওই সব অংশে সারা দিন যাত্রী ছাড়াও স্থানীয়দের একাংশের লাইন পারাপারের ঘটনা বিপদ বাড়াচ্ছে বলে রেলের দাবি। সময় বাঁচানো ছাড়াও ঘুরপথে যাওয়ার কষ্ট কমাতে গিয়ে অসতর্কতার কারণে যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাটা পড়ার ঘটনা ঘটে। সমস্যা মেটাতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করার জন্য সমীক্ষা শুরু করছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন।

রেলের পক্ষ থেকে লাইনে গবাদি পশু, মানুষ-সহ অন্যান্য পারাপার রুখতে লাইনের দু’পাশে সমান্তরাল বেড়া দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে। এই ব্যবস্থায় অবাঞ্ছিত লাইন পারাপার ছাড়াও রেলের জমি দখল করার প্রবণতাও ঠেকানো সম্ভব। তবে শিয়ালদহ ডিভিশনে লাইনের কাছ ঘেঁষে বহু জায়গায় বসতি এবং বাজার থাকায় বেড়া দেওয়া মুশকিল। তাই টানা বেড়া দেওয়ার পরিবর্তে গুরুত্বপুর্ণ জায়গাগুলিতে পৃথক ভাবে ইস্পাতের গার্ডার বসিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ করা হচ্ছে। ওই ব্যবস্থায় যাদবপুরে প্রথম বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর।

শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলওয়ে ম্যানেজার রাজীব সাক্সেনা এ নিয়ে বিশেষ তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পরের দিকে সোনারপুর, ঢাকুরিয়া, বারুইপুর, বারাসত, সোদপুর-সহ বিভিন্ন স্টেশনের ক্ষেত্রে বেড়া বসানোর বিষয়টি বিবেচিত হতে পারে বলে খবর। রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা কমাতে বেড়া দেওয়ার বিষয়টি জরুরি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sealdah Division Rail Line Railway Crossing Accidental Deaths

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy