E-Paper

প্রতারণার ফাঁদে কোটি কোটি লুট, ধৃতের কব্জায় ফ্ল্যাট-বিলাসবহুল গাড়ি

কী ভাবে চলত এই প্রতারণা? তদন্তকারীরা জানান, অভিযুক্তেরা সে দেশের বাসিন্দাদের নম্বর সংগ্রহ করত।

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪০
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আমেরিকার বাসিন্দাদের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগ রয়েছে অস্বাভাবিক কাজের সূত্রে। যা আমেরিকার নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের। এ জন্য আমেরিকার নাগরিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সে দেশের নিরাপত্তা সংস্থা, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ। যা প্রমাণিত হলে জেল ও জরিমানা উভয়ই হতে পারে অভিযুক্তের।

পুলিশ জানিয়েছে, বেআইনি কলসেন্টারের মাধ্যমে এই কায়দায় ভয় দেখিয়ে আমেরিকার নাগরিকদের থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল এ রাজ্যে বসবাসকারী তিন যুবক।
তবে শেষরক্ষা হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ওই তিন জন। রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখার ডিআইজি অঞ্জলি সিংহ জানান, ধৃতদের নাম জয় হালদার, তন্ময় মণ্ডল এবং শুভজিৎ বিশ্বাস। শনিবার তিন জনকে সোনারপুর থানা এলাকার একটি বহুতল থেকে ধরা হয়। ধৃতদের থেকে উদ্ধার হয় পাঁচটি ল্যাপটপ, ছ’টি মোবাইল ফোন, আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের ভুয়ো নথি। বাজেয়াপ্ত হয়েছে জয় হালদারের বিলাসবহুল একটি গাড়ি এবং সল্টলেক এবং সোদপুরের দু’টি ফ্ল্যাট। সে সবের মূল্য কয়েক কোটি টাকা।

গোয়েন্দারা জানান, ধৃতদের মোবাইল থেকে জানা গিয়েছে, গত দু’বছরে প্রায় দশ কোটি টাকা প্রতারণা করে হাতিয়েছে তারা। বাকি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকার লেনদেন হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। আমেরিকার নাগরিকদের ফোনের কল সংক্রান্ত তথ্য ধৃতদের
কাছে মিলেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে বারুইপুর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা। আদালত ধৃতদের ছয় দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছে।

কী ভাবে চলত এই প্রতারণা? তদন্তকারীরা জানান, অভিযুক্তেরা সে দেশের বাসিন্দাদের
নম্বর সংগ্রহ করত। তার পরে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত নিরাপত্তা সংস্থা, হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি বিভাগের নাম করে
আমেরিকার নাগরিকদের ফোন করা হত। অভিযোগ, ফোন করে তারা বলত, ‘‘আপনারা রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে অস্বাভাবিক
কাজকর্ম করছেন। যে হেতু আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ, তাই এটি আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে উদ্বেগজনক। ফলে আপনাদের বিরুদ্ধে
তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’ এক তদন্তকারী জানান, এ কথা শুনে ওই নাগরিকেরা স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা ঘাবড়ে যেতেন। ফাঁসিয়ে
দেওয়া হবে না, সেই আশ্বাস দিয়ে এর পরেই মোটা টাকা জরিমানা বাবদ আদায় করত এ রাজ্যে বসে থাকা ওই প্রতারকেরা।

তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রতারণার ওই টাকা জমা হত আমেরিকার
বিভিন্ন মিউল অ্যাকাউন্টে (ভাড়ায় নেওয়া হয় যে সব ব্যাঙ্ক
অ্যাকাউন্ট)। সেখান থেকে ওই অর্থ চলে যেত চিনে। পরে তা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে দিল্লি হয়ে কলকাতায় আসত। সেখান থেকে অভিযুক্তেরা ওই টাকা তুলে নিত হাওয়ালার মাধ্যমে।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ২০২০-’২১ সাল থেকে ওই বেআইনি কলসেন্টার চালু
করেছিল বছর পঁচিশের জয়। সে কী ভাবে এত অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হল, সে সব দেখা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Scam america Homeland Security

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy