সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে। তবে দরজা এঁটে ঘুমিয়ে পড়েনি পুরো পাড়া। রাস্তাও সুনসান ছিল না। হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন বেসরকারি সংস্থার এক তরুণী কর্মী। কানে ফোন। আচমকা হেঁচকা টান। ফোন কেড়ে তাঁর ঘাড়ে ধাক্কা দিয়েই ছুট লাগায় এক যুবক। তার মুখ ঢাকা ছিল টুপিতে। পিছনে ধাওয়া করেও তাকে ধরা যায়নি। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরবাইকে চড়ে উধাও হয়ে যায় সেই ব্যক্তি। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খড়দহের রহড়া এলাকায়।
খড়দহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। স্থানীয়েরা জানান, একই দিনে ওই এলাকায় আরও এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাই হয়েছে। ফলে রাতের ঘটনার পরে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে রহড়ার সারদাপল্লি, শান্তিনগর এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দু’সপ্তাহ ধরে বাইক বাহিনী সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্যাগ, মোবাইল, টাকা লুঠ করে পালাচ্ছে। রোজই কিছু না কিছু ঘটছে। রাতের দিকে মহিলারা ঘর থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। অভিযোগ, ওই রাস্তায় কোনও আলো নেই বলে নির্বিঘ্নেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় টহলদারি বাড়ানো হচ্ছে।
বেসরকারি সংস্থার ওই কর্মী জানান, তাঁর চিৎকারে অনেকেই ছুটে আসেন। এক জন রাস্তায় আড়াআড়ি সাইকেল দাঁড় করাতে ওই দুষ্কৃতী পড়ে যায়। আর এক জন তাকে জাপটে ধরেন। কিন্তু কোনও রকমে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ছুটে পালায় দুষ্কৃতী। মুখ ঢাকা এক যুবক বাইক নিয়ে সেখানে আসে। মুহূর্তে বাইকটি উধাও হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা পরেশ রায় জানান, দিন কয়েক আগে দিঘিরপাড় এলাকায় এক মহিলা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে একটি দুষ্কৃতীদল বাইকে করে এসে তাঁর ব্যাগ এবং মোবাইল তুলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। মহিলা ব্যাগটি চেপে ধরে চিৎকার করায় তারা ব্যাগ-মোবাইল ফেলে পালিয়ে যায়।
শান্তিনগর এলাকার এক বাসিন্দা সুব্রত সরকার জানান, সন্ধ্যা হলেই দুষ্কৃতীরা বাইকে করে এলাকায় ঘুরছে। মহিলারাই মূলত তাদের ‘টার্গেট’। গত সপ্তাহে ওই এলাকায় এক মহিলার মোবাইল কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। আরও এক কলেজছাত্রীর ব্যাগ তুলে নেওয়ার চেষ্টাও করেছিল তারা। ছাত্রীটি সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিল।
ব্যাগ চেপে ধরে তিনি চিৎকার শুরু করলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়।
এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা যে বাইকে করে এলাকায় চক্কর কাটছে, তা বেশ দামি। তারা স্থানীয় বলেই ধারণা বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের অনুমান, সেই জন্যই তারা মুখ ঢেকে থাকছে।