Advertisement
E-Paper

২৪ ঘণ্টা পরেও জলযন্ত্রণা থেকে সম্পূর্ণ নিস্তার পেল না কলকাতা! উত্তর থেকে দক্ষিণের বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন

বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে এখনও হাঁটুর কাছাকাছি জল জমে আছে। এ ছাড়া পাটুলির একাংশ, গড়িয়া, নিউ গড়িয়া, সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাসের একাংশ এবং আরও বহু এলাকা এখনও জলে ডুবে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:২২
বুধবার সকালে জলমগ্ন রাজা রামমোহন রায় সরণি।

বুধবার সকালে জলমগ্ন রাজা রামমোহন রায় সরণি। — নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে কলকাতায় আর খুব বেশি বৃষ্টি হয়নি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, রাতের মধ্যেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করবেন। সকাল হতেই দেখা গেল, জল আগের তুলনায় কমলেও শহরবাসী জলযন্ত্রণা থেকে এখনও পুরোপুরি নিস্তার পেলেন না। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ— বিভিন্ন জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। কোথাও গোড়ালিসমান, কোথাও তার চেয়ে কিছু বেশি।

জল জমে থাকলেও মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার সকালে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগে যে সব জায়গায় প্রায় হাঁটুসমান জল জমে ছিল, সেখানে এখন কোথাও গোড়ালিসমান, কোথাও বা তার চেয়ে কিছু বেশি জল জমে আছে। মঙ্গলবার রাতেও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পাম্প বসিয়ে জল নিকাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার ফলে শহরের মূল সড়কগুলিতে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তবে গলিপথগুলিতে এখনও দুর্ভোগ অব্যাহত।

মঙ্গলবার সকালে কলেজ স্ট্রিটে প্রায় হাঁটুসমান জল জমে গিয়েছিল। বুধবার সকালে কলেজ স্ট্রিটে ‘বর্ণপরিচয়’ বাজারের কাছে রাস্তার একটি অংশে এখনও কিছুটা জল জমে আছে। এ ছাড়া ঠনঠনিয়া, রাজা রামমোহন সরণি, কেশব সেন স্ট্রিট, আনন্দ পালিত রোড, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, ভিআইপি বাজার, নিউ গড়িয়া আবাসন, টেগোর পার্ক-সহ বিভিন্ন জায়গায় এখনও রাস্তায় জল জমে আছে।

বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে এখনও হাঁটুর কাছাকাছি জল জমে আছে। এ ছাড়া পাটুলির একাংশ, গড়িয়া, নিউ গড়িয়া, সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাসের একাংশ, তপসিয়ার ভিতরের গলিপথ, বোসপুকুর তালবাগান এলাকা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, নাগেরবাজারের একাংশ, বৌবাজার, মহাত্মা গান্ধী রোড, মেটিয়াবুরুজের একাংশ, বরিশার একাংশ, সরসুনা এবং জোকায় এখনও জল জমে আছে। কাঁকুরগাছি আন্ডাসপাসে এখনও জল জমে আছে। এজেসি বোস রোড সংলগ্ন মিন্টো পার্ক, ক্যামাক স্ট্রিটেও জল পুরোপুরি নামেনি। গড়িয়াহাট রোড আইটিআইয়ের কাছে বুধবার সকালেও জল জমে আছে। মঙ্গলবার যা পরিস্থিতি ছিল, তার তুলনায় খুব বেশি উন্নতি হয়নি এখানে। তবে পুরসভার তরফে বিভিন্ন জায়গায় পাম্প চালানোর ফলে অনেক জায়গাতেই জল আগের তুলনায় কমেছে।

পুজোর মরসুমে কলকাতাকে দ্রুত জলযন্ত্রণা থেকে নিস্তার দেওয়া ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে উঠেছে পুরসভার কাছে। সোমবার রাতভর নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। বৃষ্টি থামার পরেও দীর্ঘক্ষণ জল নামেনি শহর থেকে। গঙ্গায় জোয়ারের কারণে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা আরও কঠিন হয়ে ওঠে প্রশাসনের কাছে। এই পরিস্থিতিতে শহরের জলযন্ত্রণার কথা মেনে নিলেও, ফিরহাদ জানিয়েছিলেন তিনি অপারগ। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র জানান, সকালের বানভাসি পরিস্থিতির খানিকটা হলেও উন্নতি হয়েছে। পুরসভার কন্ট্রোল রুম থেকে সর্ব ক্ষণ নজরদারি চলছে। রাতের মধ্যেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে। মেয়র এ-ও জানিয়েছিলেন, পাম্প বসিয়ে পুরসভা জল নামানোর চেষ্টা করেছে।

ঠনঠনিয়া-সহ কয়েকটা জায়গা বাদ দিয়ে শহরের অনেকগুলি জায়গায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই জল নামতে শুরু করে দিয়েছিল। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানিয়েছিলেন, পাতিপুকুর এবং আলিপুরে জল নেমে গিয়েছে। তারাতলা, ভিক্টোরিয়া চত্বর, রেসকোর্সেও ধীরে ধীরে জল নামছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বুধবার সকাল হতে দেখা গেল, শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল আগের তুলনায় কমলেও পুরোপুরি নামেনি। ঠনঠনিয়া-সহ কিছু জায়গায় এখনও গোড়ালিসমান বা তার বেশি জল জমে আছে।

অন্য দিকে মঙ্গলবার কলকাতা সংলগ্ন বিধাননগর পুরসভার সল্টলেক-সহ বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ অংশে জল জমে গিয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র বলে পরিচিত সল্টলেক সেক্টর ফাইভে কলেজ মোড় এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় হাঁটুসমান জল জমে গিয়েছিল। বুধবার সকালে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে কলেজ মোড় চত্বরে। কলেজ মোড় এবং সংলগ্ন এলাকায় জল প্রায় পুরোটাই নেমে গিয়েছে। মঙ্গলবার লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবায় যে বিপত্তি ঘটেছিল, সেই ছবিও আপাত ভাবে বদলে গিয়েছে বুধবার। শিয়ালদহ (মেন এবং উত্তর) এবং হাওড়া উভয় শাখাতেই সকাল থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে চক্ররেল পথের কলকাতা স্টেশনে এখনও জল জমে রয়েছে। সেই কারণে কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। মেট্রো পরিষেবাও স্বাভাবিক সকাল থেকে।

waterlogged kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy