Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

সত্যজিৎ রায় সযত্নে জটায়ুর করাল কুম্ভীর বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন, কিন্তু ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর দর্শকরা ছাড়া আর কেউ তা দেখার সুযোগ পাননি। কী করে পাবেন, বইটি তো ছাপাই হয়নি কখনও!

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৫ ০০:০১

পুজোর মুখে আশ্চর্য উপহার

সত্যজিৎ রায় সযত্নে জটায়ুর করাল কুম্ভীর বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন, কিন্তু ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর দর্শকরা ছাড়া আর কেউ তা দেখার সুযোগ পাননি। কী করে পাবেন, বইটি তো ছাপাই হয়নি কখনও! সদ্য-প্রকাশিত ‘কমিক্স ও গ্রাফিক্স’ পত্রিকার (সম্পা: বিশ্বদেব গঙ্গোপাধ্যায়) প্রথম সংখ্যার শুরুতেই সত্যজিৎ-কৃত সব রঙিন ‘হেডপিস’-এর সঙ্গে পাওয়া গেল তাকেও (সঙ্গের ছবি)। শুধু রঙিন কেন, সত্যজিতের সাদাকালো শীর্ষচিত্র সম্ভার যা স্যমন্তক চট্টোপাধ্যায় খুঁজে এনে সাজিয়ে দিয়েছেন এখানে, তাতে শিল্পী সত্যজিতের অন্য মাত্রা প্রকাশিত।

‘কমিক্স ও গ্রাফিক্স’, ছবিতে গল্প আর গল্পতে ছবি— এই বিষয় নিয়ে সাড়ে চারশো পাতার নতুন পত্রিকা, বেশ কিছু রঙিন আর পাতায় পাতায় সাদাকালো ছবি, কমিকস কার্টুনে ঠাসা— পুজোর মুখে অভাবনীয় উপহার। ফিরে এল বিমল দাসের করা ‘আনন্দমেলা’র সেই সব আশ্চর্য প্রচ্ছদ, শৈলেন ঘোষের লেখার সঙ্গে মায়াবী চিত্রণ, কিংবা ‘ঝলমল’-এর প্রচ্ছদ (সঙ্গের ছবি)। শুধু তাই নয়, পরিচিত ছবির আড়ালে লুকিয়ে থাকা প্রচারবিমুখ শিল্পী বিমল দাসের কত খুঁটিনাটি তথ্যই না সংগ্রহ করেছেন শান্তনু ঘোষ।

তেমনই সমীর সরকারের সচিত্রকরণের জগৎ উদ্ভাসিত হল অর্ক পৈতণ্ডীর লেখায়, আর এক বোহেমিয়ান ময়ূখ চৌধুরীকে অবয়ব দিলেন প্রিয়াংকা ঘোষ। লসন উডের শিম্পাঞ্জি সিরিজ থেকে নারায়ণ দেবনাথের দেশজ ‘সিম্পু’র অ্যালবাম উল্লেখ্য সংযোজন। শিল্পীরা এখানে মুখ খুলেছেন: সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম কর্মকার, দেবাশীষ দেব, তাপস মণ্ডল নিজেদের কথা লিখেছেন। আবার অন্যের কলমে উঠে এসেছে সুফির কথা, উদয়, চিত্রকাহিনিকার দিলীপ দাস বা অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নেপথ্যকাহিনি।

কমিকসের সূচনা বিদেশে, আজও বিদেশেই সে ধারা নানা শাখাপ্রশাখায় বিস্তৃত। ‘চলমান অশরীরী’ অরণ্যদেব, টিনটিন, রোভার্সের রয়, ম্যানড্রেক, লোথারের গল্প পুরনো হয় না। আর আছে কৌশিক মজুমদার ও কৃষ্ণেন্দু চাকীর বিশ্লেষণী লেখা, ছবির বইয়ের খবর, চিত্রকাহিনি ও কার্টুন। বাংলা পত্রিকার জগতে নিঃসন্দেহে এ এক ব্যতিক্রমী সংযোজন।

দুর্গা পরিবার

দুর্গা নিয়ে বইপুস্তক কম কিছু হয়নি! তবু অনালোচিত রয়েছে নানা দিগন্ত। ভারতীয় সংগ্রহশালার প্রাক্তন অধিকর্তা শ্যামলকান্তি চক্রবর্তী অনেক বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে চর্চা করেছেন। সেই সব ফসল ৩৪টি প্রবন্ধে দুই মলাটে গ্রন্থবদ্ধ হল শ্যামলবাবু এবং সিপ্রা চক্রবর্তীর যৌথ উদ্যোগে। ১০ অক্টোবর অবনীন্দ্র সভাগৃহে বিকেল ৫টায় দুর্গা পরিবার (কাজল প্রকাশনী) প্রকাশ করবেন রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। থাকবেন যোগেন চৌধুরী এবং সব্যসাচী চক্রবর্তী। এই বইটির সম্পদ ১৩০টি সাদাকালো এবং ১২০টি রঙিন দুর্লভ চিত্র। এদিন শ্যামলবাবু চিত্রে দুর্গার বর্ণনা করবেন, থাকছে আগমনী গানও। ওদিকে জোকার গুরুসদয় সংগ্রহশালায় ১১ অক্টোবর বিকেল ৪টেয় শুরু হচ্ছে চিত্র প্রদর্শনী মা দুর্গা। একালের ১০ জন শিল্পীর সঙ্গে প্রদর্শিত হবে সংগ্রহশালার নিজস্ব সংগ্রহ থেকে প্রাচীন দুর্গা চিত্র। চলবে ৩১ পর্যন্ত, ১০-৪টে।

ব্রতকথা

বাংলার ব্রত। মূল ধারার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি লোকবিশ্বাস ও সংস্কারের বহমান অন্তঃসলিলা। গল্পের সঙ্গে ছড়া-গান-আলপনা মিলে সে এক আশ্চর্য জগৎ। অবনীন্দ্রনাথ একদা তার শিল্পিত রূপ ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, একালে বিস্তারিত গবেষণা করেন শীলা বসাক। এ বারে স্বাদু গদ্যে আর জাদু ছবিতে সেই জগৎটাকে ফিরিয়ে দিলেন কৃষ্ণেন্দু চাকী, তাঁর ব্রতকথা (গাঙচিল) বইয়ে। আটচল্লিশটি ব্রতের গল্পের প্রতিটির সঙ্গে ছবি এঁকেছেন তিনি, লোকদেবদেবীদের সঙ্গে প্রকৃতি মানুষ পশুপাখিদের নিয়ে বঙ্গসংস্কৃতির এমন শিকড় সন্ধান খুব বেশি হয়নি। সঙ্গে বইটির প্রচ্ছদ।

নাট্য প্রয়াস

তাঁর অকালমৃত্যু আজও মেনে নিতে পারেনি বাঙালি। বঙ্গরঙ্গমঞ্চের কোনও ইতিহাসই তৈরি হবে না অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিয়ে। ৩০ সেপ্টেম্বর চলে গেল তাঁর জন্মদিন। তিন বছর আগে এই দিনটিতে তাঁরই আদর্শ শিরোধার্য করে জন্ম নিয়েছিল সাঁঝবেলা নাট্যগোষ্ঠী। তাঁরা এ বারেও পালন করবেন অজিতেশের ৮২তম জন্মদিন, ১৪ অক্টোবর বাংলা আকাদেমি সভাঘরে, সন্ধে সাড়ে ৬টায়। সোহাগ সেন সমরেশ মজুমদার বলবেন তাঁকে নিয়ে, অজিতেশ রচিত কবিতা পাঠ করবেন সৌমিত্র মিত্র, আর তাঁর রচিত ও সুরারোপিত নাটকের গান শোনাবেন সন্ধ্যা দে। সঞ্চালনায় মণীশ মিত্র। এ দিকে অজিতেশেরই পূর্বসূরি বিজন ভট্টাচার্যের শতবর্ষে তাঁর কাহিনি নিয়ে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ নাটকটি গত ৩০ অগস্ট তপন থিয়েটারে মঞ্চস্থ করল কলাক্রান্তি। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ (১৯৫৩) এমনই এক সুস্বাদু ছবি যা আজও বাঙালির মনে অমলিন। নাট্যরূপ রত্না ঘোষালের, নির্দেশনায় অনিমেষকান্তি ঘোষাল। কলাকুশলীদের মধ্যে ব্রততী লাহিড়ী মজুমদার, রাহুল পাল, জয়প্রকাশ দত্তর অভিনয় উল্লেখ্য।

মাতৃরূপেণ

লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশ— চার সন্তান সহ সিংহ-অসুরাদির রঙের কার্য প্রায় সম্পূর্ণ হইবার পথে। একদা মাতৃমূর্তির পদতলে সবুজ রঙের অসুরের দেখা মিলিত। স্বদেশি যুগে নাকি কোনও কোনও অসুরকে দেখিতে গোরা সাহেবদিগের ন্যায় ছিল। সে যাহা হউক, এক্ষণে কুমোরটুলি ও পটুয়াপাড়া— শহরের দুই প্রান্তের দুই মাতৃমূর্তি নির্মাণ কেন্দ্রে ব্যস্ততা তুঙ্গে। শুধুমাত্র দুর্গাঠাকুর নির্মাণ করিলেই চলিবে না, সপ্তাহ অন্তরে লক্ষ্মীপূজাও রহিয়াছে। অতএব, লক্ষ্মীঠাকুরানির নির্মাণকার্যও চলিতেছে ফাঁকে ফাঁকে। কুমোরটুলির আদি পূজাটি রীতিমতো ঐতিহাসিক। এই পূজার সঙ্গে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, সুভাষচন্দ্র বসু-র মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব জড়িত ছিলেন। প্রতিমার রঙ ও বস্ত্রসজ্জা প্রায় শেষ হইয়া আসিয়াছে। চক্ষুদানের অবশ্য এখনও বিলম্ব আছে। পুনরায় আকাশ গম্ভীর। ঘরে ঘরে রব উঠিয়াছে— ‘ওরে প্লাস্টিক আন, প্লাস্টিক আন’, নিরাপত্তায় কোথাও যেন কোনও ঘাটতি না পড়ে। মহালয়া সমাগত। খানিক জমি পাইলেই মাথা দোলাইতেছে কাশফুল। স্বয়ং দেবী দুর্গা তাকাইয়া আছেন— কাশবনের মধ্য হইতে দৌড়াইতে দৌড়াইতে দুর্গা-অপু বাহিরিবে কি?

মনের কথা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগ গঠনে উদ্যোগী হন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অনুরোধে ব্রজেন্দ্রনাথ শীল পাঠক্রম তৈরি করেন। তখন দেশে কোথাও মনোবিজ্ঞান পড়ানো হত না। ১৯১৬-য় সূচনা। এশিয়ার মধ্যে এটি দ্বিতীয় প্রাচীন (টোকিয়োর পর) বিভাগ। শতবর্ষ উপলক্ষে মনোবিজ্ঞান ও ফলিত মনোবিজ্ঞান বিভাগ ৯-১১ অক্টোবর এক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। ৯ অক্টোবর সকাল ৯ টায় অনুষ্ঠানের সূচনা সল্টলেকের সেন্টার ফর রিসার্চ ইন ন্যানোসায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মূল প্রেক্ষাগৃহে। উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন নীলাঞ্জনা সান্যাল। রামকৃষ্ণ রাও, শ্রীধর শর্মা, গিরীশ্বর মিশ্র সহ দেশবিদেশের বিশেষজ্ঞরা বলবেন মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক নিয়ে।

লোকসংস্কৃতি

কল্পনায় তিনি বালিকা, যে কিনা ভাগ করে নেয় গ্রামীণ মানুষের সুখ-দুঃখ, তিনি টুসু। অগ্রহায়ণের শেষ দিনে শুরু হয়ে পৌষ সংক্রান্তি পর্যন্ত চলে টুসু বন্দনা। মাটির মূর্তি বা রঙিন কাগজের চৌদল দেবীর প্রতীক, কুমারী মেয়েরা প্রধান ব্রতী। কৃষিভিত্তিক এই লোক উৎসব নিয়ে তথ্যচিত্র টুসু গানে ও কথায় তৈরি করেছেন শিবানী কুণ্ডু। মাটির গান-এর প্রযোজনায় ছবিটি প্রদর্শিত হবে ৭ অক্টোবর নেহরু চিলড্রেনস মিউজিয়ামে। টুসু নিয়ে আলোচনায় দিব্যজ্যোতি মজুমদার, লোকসঙ্গীতশিল্পী অভিজিৎ বসু এবং থাকবেন বাঁকুড়া রানিবাঁধের শিল্পী প্রমথ মাহাত। অন্য দিকে সম্প্রতি আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্যু বেঙ্গাল আয়োজন করেছিল ফরাসি সাবটাইটেল সহযোগে পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ‘ঝুমুরা’ দেখানোর। পরে দেখানো হবে ভারতের অন্যত্রও। পুরুলিয়ার ঝুমুর গানকে প্রেক্ষাপটে রেখে একটা আদ্যন্ত ভালবাসার গল্প এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল এপ্রিলে। সমদর্শী দত্ত, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় (ছবিতে পরিচালকের সঙ্গে) অভিনীত ছবিটিতে ঝুমুর গেয়েছেন নির্মলা মিশ্র, রূপম ইসলাম প্রমুখ।

আলোচনা

‘অনীক’ পত্রিকা পৌঁছল ৫২ বছরে। পত্রিকার প্রাণপুরুষ এবং আমৃত্যু সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী এটির সুবর্ণজয়ন্তী দেখে যেতে পারেননি। ঠিক তার আগের বছর ২০১৩-র ২৭ জানুয়ারি তিনি প্রয়াত হন। ২০১৪ থেকেই ‘অনীক’-এর উদ্যোগে ‘দীপঙ্কর চক্রবর্তী স্মারক বক্তৃতা’ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় বক্তৃতাটি দেবেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অমিত ভাদুড়ি, ১০ অক্টোবর বিকাল ৫টায় রামমোহন লাইব্রেরি মঞ্চে। অন্য দিকে, ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্সি-র ইতিহাস বিভাগ বিকেল ৪-৩০-এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি বক্তৃতার আয়োজন করেছে। কপিল রাজ বলবেন ‘ম্যানেজিং ইন্টারকালচারাল এনকাউন্টার ইন দি আর্লি ডেকেডস অফ ক্যালকাটাজ হিস্ট্রি ১৬৯০-১৭৫০’ নিয়ে।

উদযাপন

কবিতা বলতে বলতে দশ বছর পার! মহুল আবৃত্তির ব্যান্ডের দশক উদযাপনে রয়েছে নতুন কিছু ভাবনা। ৭ অক্টোবর সন্ধে ৬টায় রোটারি সদনে প্রকাশ পাবে রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের দশটি কবিতার আবৃত্তি িনয়ে নতুন অ্যালবাম ‘রবি বাউল ও বিদ্রোহী কবির কবিতায় মহুল’ (গিরোনা এন্টারটেনমেন্ট)। মহুলের পক্ষে শাঁওলি মজুমদার জানালেন, ‘আমাদের পথ চলা শুরু হয়েছিল সুকুমার রায়ের হাত ধরে। ৩০ অক্টোবর সুকুমার রায়ের জন্মদিনে অনুষ্ঠান স্টারমার্ক সাউথ সিটি মলে।’ এ বছরেই মহুল প্রথম বাংলা বাণিজ্যিক ছবিতে শ্রীজাতর কবিতা আবৃত্তি করেছে। অন্য দিকে লোকশিল্পীদের দল উজানিয়া, মাদল আর ক’জন শিল্পী গাঁটছড়া বেঁধেছেন ‘নাগরিক লোকধারা’য়। মা দুর্গার আগমনকে স্বাগত জানাতে তাঁরা শামিল হচ্ছেন মোহরকুঞ্জে। মনসামঙ্গল, কবিগান, ঢাক, বাউল গানের সঙ্গে থাকবে পৌরাণিক গল্প ও লোককথা। ‘লোকধারায় ১৩ পার্বণ’ ৯ ও ১০ অক্টোবর মোহরকুঞ্জে।

কবিতা চর্চা

ফরাসি কবিতা যে ভাবে প্রবল দুঃসাহসিকতায় জীবনের অন্তহীন রহস্যের মুখোমুখি হয়েছে তা পাঠকের কাছে এক বিরল অভিজ্ঞতা। ৮ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ছটায় আলিয়াঁস ফ্রাঁসেজ ৫৭ এ, পার্ক ম্যানসনস, পার্ক স্ট্রিটে আয়োজন করেছে ফরাসি কবিতাপাঠের অনুষ্ঠান। মূল ফরাসির সঙ্গে তাঁর নিজের করা বাংলা অনুবাদ পাঠ করবেন চিন্ময় গুহ। শোনা যাবে অঁরি মিশো, পল এলুয়ার, জাক প্রিভারের মতো ফরাসি কবির কবিতা। অন্য দিকে ৬ অক্টোবর বিকেল চারটেয় রাজভবন-এ প্রকাশিত হবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর নিজের কণ্ঠে হিন্দি কবিতার দু’টি সিডি ‘ম্যায় ক্যয়া বলু’ এবং ইংরেজি কবিতার সংকলন ‘দ্য ইমেজেস’। সেই সঙ্গে রাজ্যপালের লেখা ও সুরে হিন্দি ভজনের সংকলন ‘আরাধনা’ এবং দোঁহা-র সংকলন ‘নির্মল দোঁহে’। অবসরে কবিতা লেখেন রাজ্যপাল। সেই কবিতাই সিডি বন্দি করল ‘ভাবনা’।

প্রয়াণ

চৈত্রে রচিত কবিতা’ থেমে গেল এ বার আশ্বিনে। হায়, একটি চিল বলে উঠল, ‘বিদায়’। পরক্ষণেই চতুর্দিকে ধ্বনি উঠল, ‘বিদায় উৎপল, বিদায়।’ বাংলা কবিতার ইতিহাসে খুব বেশি এ রকম ঘটনা ঘটেনি যে, পুরী সিরিজ-এর মতো খুব ক্ষীণকায় কাব্যগ্রন্থ দশকের পর দশক ধরে তরুণ-তরুণতমদের বুঁদ করে রেখেছে। সে সব বইয়ের একেকটি পংক্তি পরবর্তী সুন্দর-ক্রুদ্ধ কবিপ্রজন্মকে আরও, আরও বেশি কবিতার কাছে নিয়ে গিয়েছে।পুরী সিরিজ ছাড়াও আবার পুরী সিরিজ, লোচনদাস কারিগর, খণ্ডবৈচিত্রের দিন, বক্সীগঞ্জে পদ্মাপাড়ে— এ সব কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা উৎপলকুমার বসু ছিলেন তেমনই হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা। ১৯৩৭-এ জন্ম দিনহাটায়, পেশায় ছিলেন শিক্ষক। তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু যোগেন চৌধুরীর কথায়, ‘১৯৬০ সাল থেকে উৎপল আর আমি বন্ধু। এত বড় কবি কিন্তু নিজেকে লুকিয়ে রাখত। আজকে উৎপলের শেষ বিদায়ে হয়তো বিরাট কোনও লোকসমাগম হয়নি, কিন্তু তা দিয়ে তো কবিপ্রতিভা মাপা যায় না। ওর মতো কবি ও বন্ধু আমি আর পাব না।’ আনন্দ-রবীন্দ্র-অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন, সারা বাংলা, ভারত ও পৃথিবীর বহু দেশে গিয়েছেন ‘শুধু কবিতার জন্য’। আমৃত্যু ছিলেন একজন ‘কৃত্তিবাসী’। ‘কবিদের কবি’, এই অভিধা বোধহয় তাঁর সম্পর্কেই খাটে। চলে গেলেন শনিবার দুপুরে, রেখে গেলেন স্ত্রী-পুত্র অনুরাগীদের। বইমেলায় কবিতার পাঠক লিটল ম্যাগাজিনের স্টলে স্টলে ঘুরত— নতুন কী বই বেরলো উৎপলদার? নাঃ, সে সব আর হবে না।

নতুন নাটক

চন্দন সেনের নতুন নাটকে আবার মাতিয়ে দেবেন বিন্দিয়া ঘোষ, তেমনটাই বিশ্বাস নাট্যকারের, এ-নাটকের নির্দেশকও তিনি। ইউজিন ও নিল অনুপ্রাণিত, হযবরল-র নিবেদন: ‘ঈপ্সা’— আবহমান লোভ-লালসা-যৌনতা-নির্মমতার এক আধুনিক প্রতিচ্ছবি। ‘যে চরিত্রে দেবশঙ্কর হালদার করছেন তাতে তাঁকে ছাড়া আমার কাছে আর কোনও বিকল্প নির্বাচনের অবকাশ ছিল না। আর এই সময়ের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেত্রী বিন্দিয়া আমার আগের নাটকগুলিতে যে ভাবে প্রত্যাশা পূরণ করেছেন, তাতে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে আমার কোনও দ্বিধা নেই।’ জানালেন চন্দনবাবু। আর বিন্দিয়া জানালেন ‘সামাজিক অবিচার, যৌন প্রবঞ্চনা, নারীর অধিকার— সব মিলিয়ে এ-নাটকে আমার চরিত্রটা (সঙ্গে মহড়ার ছবি) বেশ জটিল।’ হরিণঘাটার মেয়ে বিন্দিয়া, সেখানকার স্কুল-কলেজেই থিয়েটারে হাতেখড়ি। কল্যাণী কলামণ্ডলম-এ প্রথম অভিনয়, তার পরই কিশোর সেনগুপ্তের নির্দেশনায় কল্যাণী নাট্যচর্চা-র ‘মেয়েটি’তে মুগ্ধ করে দিল বাঙালিকে। ‘কিশোরদাই আমাকে অভিনেতা হিসেবে আবিষ্কার করেন।’ একে একে নান্দীকার-এর ‘হৃদ্‌মাঝারে’, রঙরূপ-এর ‘ছায়াপথ’, হযবরল-র ‘জাহানারা জাহানারা’ নাটকে উল্লেখযোগ্য অভিনয়। তবে বিন্দিয়ার মতে তাঁর সেরা পারফরম্যান্স থিয়েটার ওয়ার্কশপ-এর ‘বিয়েগাউনি কাঁদনচাপা’-য়। পেয়েছেন স্বপ্নসন্ধানী-র ‘শ্যামল সেন স্মৃতি পুরস্কার’। থিয়েটারে স্বপ্ন সফল করার জন্যে লড়াই করে চলেছেন। ‘ঈপ্সা’র প্রথম অভিনয় ৯ অক্টোবর গিরিশ মঞ্চে সন্ধে সাড়ে ৬টায়।

kolkatar karcha karcha latest karcha latest kolkatar karcha short news breif news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy