Advertisement
E-Paper

প্রাক্‌-জিএসটি ছাড়ের বন্যা

সময় বদলেছে। বাঙালির সেল এখন সারা বছর ধরেই বিদ্যমান। বাজারের জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করেছে শপিং মল। মলে সারা বছরই কম দামে বিকোয় পসরা। শপিং-প্রিয় মানুষগুলোকে আর তক্কে তক্কে থাকতে হয় না, কবে কম দামে বিক্রি হবে প্রয়োজনীয় জিনিস।

তিয়াষ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ১২:৫০
লোভনীয়: ছাড়ের সুযোগ নিতে ভিড়়। শহরের এক মলে। নিজস্ব চিত্র

লোভনীয়: ছাড়ের সুযোগ নিতে ভিড়়। শহরের এক মলে। নিজস্ব চিত্র

শরৎ তো অনেক দূর। এ বার বর্ষার আগেই পুজোর কেনাকাটা চালু।

এই ‘অকাল’ শপিং-এর মূলে রয়েছে ছোট-বড়, নামী-অনামী ব্র্যান্ডের ছাড়ের বর্ষা।

এক সময় কেনাকাটার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময়ে মুখিয়ে থাকতেন শহরবাসী। পুজোর মুখে বা চৈত্র শেষে— এই ছিল সেলের সময়। বেশ খানিক সস্তায় মিলত জামা থেকে জুতো, কড়াই থেকে কুলার। গৃহবধূ থেকে শুরু করে চাকরিজীবী, কলেজ পড়ুয়া থেকে ব্যবসায়ী ভিড় জমাতেন বাজারে বাজারে। উপলক্ষ, সস্তার দৈনন্দিন উপকরণে ঘর ভরানো।

সময় বদলেছে। বাঙালির সেল এখন সারা বছর ধরেই বিদ্যমান। বাজারের জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করেছে শপিং মল। মলে সারা বছরই কম দামে বিকোয় পসরা। শপিং-প্রিয় মানুষগুলোকে আর তক্কে তক্কে থাকতে হয় না, কবে কম দামে বিক্রি হবে প্রয়োজনীয় জিনিস। এখন সকালেই ফোনে এসে ঢোকে হাজারো এসএমএস, যারা খবর দিয়ে দেয়, শহরের কোন শপিং মলে কত শতাংশ ছাড়ে মিলবে জামা-জুতো-বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম। যেন প্রতিযোগিতা করে ছাড় ঘোষণার পালা চলছে বাজার জুড়ে। পিছিয়ে নেই অনলাইন সাইটগুলিও।

দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত শপিং মলে চলছে মেরামতির কাজ। গুটি কয়েক দোকান খোলা। তাতেও পিছিয়ে নেই বিক্রিবাটা। প্রায় প্রতিদিনই কাগজে বিজ্ঞাপন থাকছে ওই মলের কোন দোকান কত সস্তায় বিকোচ্ছে তাদের সম্ভার। তা দেখেই ভিড় জমাচ্ছেন শহরবাসী। উত্তর কলকাতার একটি শপিং মলের চেহারাও একই। সপ্তাহান্তের ভিড়ে উচ্ছল তরুণী সিমরানের কথায়, ‘‘যখনই পকেটমানি জমে, তখনই চলে আসি মলে। যত কম টাকাই থাক, পছন্দমতো কিছু পেয়েই যাই।’’

বেহালার গৃহবধূ অঞ্জনা পালের আবার মন খারাপের ওষুধ হল শপিং। যখন তখন, যেখানে খুশি মলে ঢুকে কয়েকটা জিনিস কিনে ফেলতে পারলেই নিমেষে মন খুশ। তিনি বলেন, ‘‘আগে কেনাকাটার সময়ে পকেটের কথা ভাবতে হতো। এখন সারা বছর কোথাও না কোথাও ছাড় চলেই। ইদানীং তার পরিমাণ আরও বেড়েছে। তাই সংসারের জিনিসই হোক বা ব্যক্তিগত কিছু,কখনওই পকেটে খুব একটা টান পড়ে না।’’

শহর জুড়ে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এই ছাড়ের বন্যায় খুশি শপিং-প্রিয় বাঙালি। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, কেন এ ভাবে সেলের অগাধ সম্ভার নিয়ে একই সঙ্গে বাজার মাতাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন সংস্থা?

ব্যবসায়ী মহলের দাবি, জিএসটি-র জুজু এর কারণ। জুলাই মাস থেকে এই কর চালু হওয়ার কথা। নয়া কর কাঠামোয় পুরোনো দরে কেনা জিনিসপত্রের উপর করের সুবিধা পাওয়া কঠিন। ফলে গুদাম খালি করতে তৎপর হয়েছে অনলাইন ও প্রথাগত, দুই বাজারই। জমে থাকা পণ্য গুদাম থেকে ক্রেতাদের ঘরে তুলে দিতে অনলাইন ও অফলাইন বাজার মোটা ছাড় দিচ্ছে। অনলাইন বাজারের ‘বিগ সেল’ ও শপিং মলের ‘মিডনাইট সেল’ একে অপরকে টেক্কা দিয়ে ক্রেতা টানতে মরিয়া। ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ ছাড় দিতে পিছপা নয় কোন পক্ষই।

Shopping Mall GST Shopping
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy