E-Paper

আর্থিক লেনদেন সারতে হবে অনলাইনে, পরিবহণ দফতরে নানা পরিষেবায় দালাল- দৌরাত্ম্য ঠেকাতে নির্দেশ

নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, দফতরের সব আধিকারিককে সচিত্র পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৮
পরিবহন ভবন।

পরিবহন ভবন। —ছবি : সংগৃহীত

পরিবহণ দফতরের বিভিন্ন কার্যালয়ে পরিষেবা সংক্রান্ত কাজে স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং গতি আনতে সম্প্রতি ২০ দফা নির্দেশ জারি করেছেন দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন।
গাড়ি চালানোর লাইসেন্স থেকে শুরু করে যান নথিভুক্ত করা, বাণিজ্যিক গাড়ির পারমিট সংক্রান্ত কাজ, গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা, গাড়ি সংক্রান্ত ব্যবসার অনুমতি ছাড়াও দূষণ এবং মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলিকে অনুমতি প্রদান-সহ নানা কাজের জন্য নাগরিকদের পরিবহণ দফতরের দ্বারস্থ হতে হয়। দফতরের কাজে স্বচ্ছতা আনতে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৩৪টি পরিষেবা অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। বাহন-৪ এবং সারথি-৪ পোর্টালের মাধ্যমেও বহু পরিষেবার জন্য অনলাইনে আবেদন করা যায়। কিন্তু, তার পরেও কলকাতা এবং জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের বিভিন্ন কার্যালয়ে দালাল-চক্রের দাপট কমেনি বলে জানাচ্ছেন দফতরের আধিকারিকদের একাংশই। সেই সমস্যা দূর করতেই সম্প্রতি পরিবহণসচিব এ নিয়ে দীর্ঘ নির্দেশিকা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, দফতরের সব আধিকারিককে সচিত্র পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এ ছাড়া, যাঁদের ইউনিফর্ম পরে কাজ করার কথা, তাঁদের তা মেনে চলতে বলা হয়েছে। এর ফলে কাজের প্রয়োজনে দফতরে আসা যে কেউ আধিকারিকদের নাম এবং তাঁরা কী কাজ করেন, তা বুঝতে পারবেন। এ ছাড়াও, বিভিন্ন আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে কাজের জন্য যে সব মানুষ আসেন, তাঁদের সেখানে কী কী অধিকার রয়েছে, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে দাবিসনদ টাঙানোর
কথাও বলা হয়েছে। দফতরের কোথায় কোন বিভাগ রয়েছে, বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা কে কোথায় বসেন, তা নিয়ে
বিভ্রান্তি দূর করতে দফতরের প্রবেশপথে মানচিত্র (লেআউট) বসানোর নির্দেশও এসেছে।
সেই সঙ্গে কোন কাউন্টার কোথায় আছে, তা জানাতে পৃথক বোর্ড এবং হেল্পডেস্ক খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলা হয়েছে সব দফতরে।

এর পাশাপাশি, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কাজ যত দূর সম্ভব অনলাইনে সারার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্র্যাকিং পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হয়েছে বিভিন্ন ফাইল সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে। কেউ কোনও নথি বা পরিষেবার জন্য আবেদন জানালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় রসিদ দেওয়া ছাড়াও এ ক্ষেত্রে ওই আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট ডকেট নম্বর তৈরি করার নির্দেশিকাও এসেছে। পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ যাতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ধরে করা হয়, তা-ও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

আর বলা হয়েছে, নিয়মিত ভিত্তিতে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের বৈঠক ডেকে বকেয়া কাজ মেটানোর দিকটি দেখতে হবে। বিভিন্ন বকেয়া কাজ এবং পরিষেবা প্রদানের কাজ পড়ে থাকছে কিনা, তা নিয়মিত ব্যবধানে জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন সচিব। বস্তুত, বহু ক্ষেত্রে কাজ ফেলে রাখার জন্যই দফতরের কর্মী এবং আধিকারিকদের একাংশের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা তৈরি হয় বলে অভিযোগ। অনলাইন ব্যবস্থা এই সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে আনলেও বহু ক্ষেত্রে সাধারণের মধ্যে এখনও পরিষেবা পাওয়ার অধিকার নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে দালাল-চক্র সক্রিয় বলে অভিযোগ উঠেছে একাধিক সময়ে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Transport Department Brokers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy