Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Sovan Chatterjee

Sovan-Baisakhi: দিদির ইচ্ছেকে বাস্তব করাই লক্ষ্য: শোভন ।। অভিমানের প্রাচীর ভেঙে গিয়েছে: বৈশাখী

শোভন জানান, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সব সময় মমতার ইচ্ছাতেই নিয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন মমতাকেন্দ্রিক। বৈশাখী বলেন, ‘‘দিদির মনে রয়েছে শোভন।’’

শোভন-বৈশাখী আবার তৃণমূলে?

শোভন-বৈশাখী আবার তৃণমূলে? ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২২ ১৬:৪০
Share: Save:

দিদির ইচ্ছে বাস্তবায়িত করাই তাঁর লক্ষ্য। নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠকের পর বলেই দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকে হাজির তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘দিদির নির্দেশ মতোই কাজ করবে শোভন।’’ এবং তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, উভয় তরফের মধ্যে ‘রাজনৈতিক’ আলোচনাই হয়েছে।

অস্যার্থ— শোভন এবং বৈশাখীর তৃণমূলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফেরা সময়ের অপেক্ষা। অপেক্ষা, কারণ, বুধ-দুপুরে মমতার সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে শোভন-বৈশাখী তৃণমূলে ফেরার বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি। তাঁরা দিনক্ষণ সম্পর্কে জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে তৃণমূলেরই একটা অংশ জানাচ্ছে, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে শোভন-বৈশাখীকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশই জোরালো হচ্ছে।

শেষ মুহূর্তে কোনও নাটকীয় পট পরিবর্তন না হলে শোভন এবং বৈশাখী যে তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন, তা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ঠোঁট এবং কাপের মধ্যে যে ফাঁকটুকু এখনও রয়ে গিয়েছে, তা বুধবারেই প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা না হওয়ার থেকে স্পষ্ট। সেই ফাঁক হতে পারে দলের শীর্ষনেতৃত্বের একটি অংশ। যাঁদের সঙ্গে শোভনের সম্পর্ক গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ‘মধুর’। যেমন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (যিনি শোভনের নাম দিয়েছেন ‘গ্ল্যাক্সো বেবি’) বলেছেন, ‘‘যাঁরা তৃণমূলকে হারাতে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের নিদারুণ স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফিরে আসছেন। আরও আসবেন। কাদের নেওয়া হবে বা নেওয়া হবে না, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

কুণালের কণ্ঠে খানিকটা শ্লেষের সুরই শুনেছেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। যাঁরা এই প্রণিধানযোগ্য তথ্যও মনে রেখেছেন যে, দলীয় রাজনীতির সমীকরণে কুণাল মমতার মতোই অভিষেকেরও ‘আস্থাভাজন’।

তবে একই সঙ্গে এ-ও ঠিক যে, রাজনীতিতে সম্পর্কের সমীকরণ অনবরত পাল্টে যেতে থাকে। তৃণমূল তার ব্যতিক্রম নয়। বিশেষত, যদি তাতে হস্তক্ষেপ করেন স্বয়ং মমতা। প্রসঙ্গত, শোভনের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি মমতা নিজেই ঠিক করেছেন। তিনিই শোভনের সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেছেন। শেষমেশ তিনিই শোভন-বৈশাখীকে নবান্নে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন। সেই মতোই বুধবার যুগলে মমতা সকাশে পৌঁছেছিলেন।

বৈঠকের পর নবান্ন চত্বরে একগাল হাসি মুখে নিয়ে শোভন বলেছেন, ‘‘মমতা’দির লক্ষ্য বাস্তবায়িত করাই আমার কাজ।’’ পাশে দাঁড়ানো বৈশাখী ঠোঁটে মৃদু হাসি মিশিয়ে বলেছেন, ‘‘দিদি-ভাইয়ের মধ্যে থাকা অভিমানের প্রাচীর ভেঙে গিয়েছে।’’ শোভন বলেছেন, ‘‘অনেক দিন পর দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে।’’ তিনি কি আবার ‘সক্রিয়’ রাজনীতিতে ফিরছেন? শোভনের উত্তর, ‘‘রাজনীতিতে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় বলে কী আছে আমার জানা নেই। মমতা’দির কাছে আসব। চা খাব। এতে আবার জল্পনার কী আছে! ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা নিশ্চয়ই আমার। কিন্তু রাজনৈতিক কোনও সিদ্ধান্ত, আমার রাজনৈতিক জীবন— সবটাই মমতাকেন্দ্রিক। মমতা’দির ইচ্ছা বাস্তবায়িত করাই আমার লক্ষ্য।’’

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রশ্নে শোভন বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে অ্যাপলিটিক্যাল (অরাজনীতিক) কেউ আছে!’’ বৈশাখীর কথায়, ‘‘বিজেপি থেকে যখন ও বেরিয়ে এসেছিল, তখন অনেকেই ওর রাজনৈতিক অন্ত্যজীবনী (অবিচুয়ারি) লিখে দিয়েছিল। আমি খুশি যে, ও আবার রাজনীতিতে ফিরে আসছে।’’

আরও পড়ুন:

শোভনের পাশে দাঁড়ানো বৈশাখী আরও বলেছেন, ‘‘রাজনীতিতে আসব কি না, সেটা সময় বলবে। দিদি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। শোভনও তাই। নিশ্চয়ই রাজনৈতিক আলোচনাই হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভাই-দিদির অনেক মিষ্টি আলোচনা হল। আমি সেটা পাশে বসে ‘এনজয়’ করলাম। শোভনের এখনও রাজনীতিতে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আমি চাই, শোভন রাজনীতিতে আবার ফিরে আসুক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওর সম্পর্ক চিরকালই ছিল। মাঝখানে একটা অভিমানের প্রাচীর তৈরি হয়েছিল। আমি আন্তরিক ভাবে খুশি, সেটা ভেঙে গিয়েছে। দিদি মন থেকে শোভনকে দূর করতে পারেননি। ওর (শোভন) মন থেকেও দিদি যাননি। অতএব, দিদি যবে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই অনুযায়ী ও কাজ করবে।’’

শোভনের স্ত্রী তথা তৃণমূলের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় ‘ফ্যাক্টর’ কি তাঁদের মনে আছে?

বৈশাখী বলেন, ‘‘ওই নামটা শোভন বা আমি— কারও কাছেই প্রাসঙ্গিক নয়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE