E-Paper

পরীক্ষার ধরনে পরিবর্তন সামলেই উজ্জ্বল ওরা

এ শহরে ভাল ফল করেছে আরও বেশ কিছু স্কুল। যেমন, শ্রীশিক্ষায়তনের দশম শ্রেণিতে নেহা মোদী ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। রাজশ্রী রায় পেয়েছে ৯৮.৮ শতাংশ।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ০৮:১৩
মধুরেণ: সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের ফলাফল ঘোষণার পরে মিষ্টিমুখ উচ্ছ্বসিত পড়ুয়াদের। সোমবার, দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে।

মধুরেণ: সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের ফলাফল ঘোষণার পরে মিষ্টিমুখ উচ্ছ্বসিত পড়ুয়াদের। সোমবার, দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে। ছবি: সুমন বল্লভ।

জাতীয় শিক্ষা-নীতির অনুসরণে এ বার দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষায় প্রশ্নের ধরনে কিছু পরিবর্তন এনেছিল সিবিএসই বোর্ড। প্রশ্নের ধরন পাল্টালেও ওদের আত্মবিশ্বাসে অবশ্য ঘাটতি ছিল না। খামতি ছিল না প্রস্তুতিতেও। তাতে ভর করেই সাফল্য পেয়েছে কলকাতার উজ্জ্বল ছাত্রছাত্রীরা। শুধু পড়াশোনা নয়, পাশাপাশি কেউ চালিয়ে গিয়েছে গানের রেওয়াজ, কেউ বা ছবি আঁকা।

বি ডি মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সব্যসাচী লস্কর দশমের পরীক্ষায় পাঁচশোয় পাঁচশো পেয়েছে। অর্থাৎ, ১০০ শতাংশ। বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, বিজ্ঞান এবং কৃত্রিম মেধা— প্রতিটি বিষয়েই একশোয় ১০০ পেয়েছে সে। অথচ, কোনও বিষয়েই গৃহশিক্ষক ছিল না তার। সব্যসাচীর কথায়, ‘‘সিবিএসই-তে আমাদের পাঠ্যক্রম যে হেতু একটু কম, তাই যেটুকু পড়েছি, নিখুঁত পড়েছি। স্কুলের শিক্ষকেরা ভীষণ সাহায্য করেছেন।’’ ভবিষ্যতে সে অঙ্ক অথবা পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে চায়। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে সে পোর্ট্রেট আঁকে।

লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির বংশিকা কোঠারি ৪৯৬ পেয়েছে। ছোট থেকেই তাকে টানে সাংবাদিকতা। তাই বড় হয়ে সাংবাদিক হতে চায় সে। স্কুলে পড়াকালীনই দু’টি ইংরেজি কাগজে তার লেখা ছাপা হয়েছে। জি ডি গোয়েন্‌কা পাবলিক স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির প্রত্যয় ভট্টাচার্য পেয়েছে ৪৯৪। প্রথাগত কোনও পেশা নয়, সে চিত্রকর হতে চায়। সেই জন্য আর্ট কলেজে ভর্তি হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। প্রত্যয় জানায়, একাদশ-দ্বাদশে এই কারণেই হিউম্যানিটিজ় নিয়েছিল সে। প্রত্যয় বলল, ‘‘ছোট থেকেই আমার ছবি আঁকার নেশা। তাই সেটাই পেশা হিসাবে নিতে চাই। জানি, অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু ছবি আঁকতেই আমি ভালবাসি।’’ তার মতে, ভাল ছবি আঁকতে পারলে বিজ্ঞাপনের এজেন্সি থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আছে।

সাউথ পয়েন্ট থেকে আফ্রিন মুন্সি সিবিএসই-র দ্বাদশে ৪৯০ নম্বর পেয়েছে। ভবিষ্যতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্সড পরীক্ষা দিয়ে দিল্লি বা মুম্বই আইআইটি-তে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায় সে। তার কথায়, ‘‘প্রতিটি বিষয়ের জন্য সময় ভাগ করে পড়তে হবে। কোনও একটি বিষয়ে যদি ভুল ধারণা তৈরি হয়, তা হলে সেটাই কিন্তু থেকে যায়।’’ তবে, আজকের এই আনন্দের দিনটি খুব বড় করে উদ্‌যাপন করতে পারছে না সে। কারণ, সামনেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্সড পরীক্ষা। পরীক্ষা দিয়ে সে বিরিয়ানি খেতে যাবে বন্ধুদের সঙ্গে।

পড়াশোনার পাশাপাশি রাগসঙ্গীতেরও অনুশীলন করে গিয়েছে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সোমদত্তা মণ্ডল। সিবিএসই-র দশমে পাঁচশোয় ৪৯৪ পেয়েছে সে। সোমদত্তা জানাচ্ছে, পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়াই তার সাফল্যের প্রধান চাবিকাঠি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদানও ভোলার নয়। চিকিৎসক হতে চায় সে। যার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ডিপিএস, রুবি পার্কের সাগরিকা সিংহ সিবিএসই-র দ্বাদশে ৪৯৪ পেয়েছে। জে কে রাউলিংয়ের ভক্ত সাগরিকা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায় দিল্লি বা মুম্বই আইআইটি-তে। সে জানায়, আলাদা করে বোর্ডের পড়া তাকে সে ভাবে পড়তে হয়নি। জয়েন্টের প্রস্তুতি তার বোর্ডের পড়াকে এগিয়ে দিয়েছে। এখন সে জয়েন্ট এন্ট্রান্স অ্যাডভান্সড পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ডিপিএস, রুবি পার্ক থেকে কুশল ঘোষ দশমে ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। ৯৫ শতাংশের উপরে নম্বর পাবে বলে ভেবেছিল ভারতীয় বিদ্যাভবনের দশম শ্রেণির পড়ুয়া অনীশ ভৌমিক। যদিও সে পেয়েছে ৯৯ শতাংশ, অর্থাৎ ৪৯৬। এত নম্বর পেয়ে সে একটু অবাক। গল্পের বই প্রিয় হলেও সে সব ছুঁয়েও দেখেনি পরীক্ষার আগের কয়েক মাস। একাদশ-দ্বাদশে সে বিজ্ঞান নিয়েই পড়বে। প্রিয় বিষয় অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা। কিন্তু কোনটা নিয়ে সে ভবিষ্যতে পড়বে, সেই সিদ্ধান্ত এখনই নেবে না। ভাল ফল করার জন্য পাঠ্যবই বার বার পড়া দরকার বলে মনে করে সে।

এ শহরে ভাল ফল করেছে আরও বেশ কিছু স্কুল। যেমন, শ্রীশিক্ষায়তনের দশম শ্রেণিতে নেহা মোদী ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। রাজশ্রী রায় পেয়েছে ৯৮.৮ শতাংশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CBSE Board Exam 2024 CBSE

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy