Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Students

Mental Health: সমীক্ষায় সামনে এল ক্ষতিগ্রস্ত ‘বন্দি’ পড়ুয়া-মন

অতিমারিতে ঘরবন্দি পড়ুয়াদের মানসিক অবস্থা কোন পর্যায়ে, তার খোঁজ নিল ‘জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ’।

ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ০৬:২০
Share: Save:

কেউ লিখেছে, ‘পরীক্ষা না হলে এই যে লেখাপড়ার প্রস্তুতি, তার তো কোনও মানেই থাকবে না। তা হলে পরীক্ষার ফল কী হবে, আর সেই ফল নিয়ে পরবর্তী জীবনে কী করব?’ আর এক জন লিখেছে, ‘বাড়িতে এ ভাবে থাকতে খুব একা লাগে। কত দিন কোনও আত্মীয়কে দেখিনি। বন্ধুবান্ধবের থেকেও অনেক দূরে চলে গিয়েছি।’ অন্য এক জনের বয়ান, ‘যা করছি, তা ফলপ্রসূ হবে কি না জানি না। আজকাল খুব টেনশনে থাকি।’ করোনায় বাড়ির কোনও সদস্য মারা যাওয়ায় আবার গভীর শোকগ্রস্ত কোনও কোনও পড়ুয়া। করোনা এবং লকডাউনে আয় বন্ধ অনেক পরিবারের। সেটাও বড় মানসিক ধাক্কা দিচ্ছে ওদের।

অতিমারিতে ঘরবন্দি পড়ুয়াদের মানসিক অবস্থা কোন পর্যায়ে, তার খোঁজ নিল ‘জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ’। এর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে কাউন্সেলিংয়ের। রাজ্য শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ ওই সংস্থা প্রতি বছর একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে প্রতিশ্রুতিবানদের বেছে মেধাবৃত্তি দিয়ে থাকে। গত বছর রাজ্যের ন’হাজার পড়ুয়ার মধ্যে অনলাইন পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ২০০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এ বার মেধাবৃত্তি দেওয়ার পাশাপাশি ওই বৃত্তি প্রাপকেরা কেমন আছে, সেই খোঁজ নেওয়াও শুরু হয়েছিল।

সংস্থার অধিকর্তা মৈত্রী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই পড়ুয়াদের বেশির ভাগই ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সংস্থার উপ-অধিকর্তা পারমিতা রায় নিজেই এক জন মনোবিদ। এই ২০০ জনের সঙ্গে আগের মেধাবৃত্তি পাওয়া এবং এদের পরিচিত মিলিয়ে মোট ৬০০ জনের মধ্যে একটি সমীক্ষা করা হয়। সেখানেই উঠে আসে পড়ুয়াদের উৎকণ্ঠা। এমনকি, তারা এ-ও জানিয়েছে যে, বাবা-মাকে এ সব জানালে তাঁরা ঘাবড়ে যাবেন। তাই তারা কিছু বলে না। এগুলো যে কোনও সমস্যা, তা-ও অনেকের পরিবার বিশ্বাস করে না বলেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে অনীহা রয়েছে মনোবিদের কাছে সন্তানকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও। অভিভাবকদের আশঙ্কা, মনোবিদের কাছে নিয়ে গেলে মানুষ যদি সন্তানকে ‘পাগল’ ভাবেন!

মৈত্রীদেবী জানালেন, একাদশ এবং দ্বাদশের পড়ুয়াদের উদ্বেগ বেশি। অন্যদেরও আলাদা ভাবে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। তিনি বলেন, “ওই ২০০ জন পড়ুয়ার সঙ্গে বিভিন্ন অনলাইন মিটিং প্ল্যাটফর্মে কথা বলা হচ্ছে। তবে পড়ুয়াদের অনেকে সরাসরি কথা বলতে চাইছে না। তখন তাদের চ্যাট বক্সে লিখতে বলা হচ্ছে।’’

তিনি জানালেন, আর্থিক অনটনের কারণে অনেক পড়ুয়ারই অনলাইনে পড়াশোনা করার জন্য প্রয়োজনীয় স্মার্টফোন অথবা ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। তাই ঠিক ভাবে পড়াশোনা না হওয়া নিয়েও তারা অনেকেই প্রবল মানসিক চাপে রয়েছে। প্রযুক্তিগত বিভেদ (ডিজিটাল ডিভাইড) অনেককে উৎকণ্ঠার জীবনযাপনে বাধ্য করছে বলেও জানাচ্ছেন অধিকর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE