শান্তিতে এলাকাবাসী। নিজস্ব চিত্র।
তাপপ্রবাহ এবং গরমে জেরবার কলকাতার মানুষের দিকে মানবিকতার হাত বাড়ালেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের ব্যবসায়ী যুবক তৌসিফ রহমান। ২৯ বছর বয়সি তৌসিফ স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচারীদের গরমের হাত থেকে মুক্তি দিতে রাস্তার উপরেই ফ্রিজের ব্যবস্থা করলেন। প্রায় দু’সপ্তাহ আগে রাস্তার ধারে এই ফ্রিজটি তিনি বসান। এই ফ্রিজ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করেছেন তৌসিফ নিজেই। তাঁর বাড়ি থেকেই প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তৌসিফ নিজেই প্রতিদিন সকালে এসে নিজের দায়িত্বে ৩০টি জলের বোতল ফ্রিজে রেখে দিয়ে যান। এ ছাড়াও স্থানীয়দের এই ফ্রিজ ব্যবহারে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়ায় তাঁরাও এই ফ্রিজে জল রেখে যান। যা থেকে তেষ্টা নিবারণ করেন স্থানীয় থেকে পথচলতি মানুষ সকলেই। ফ্রিজ বসানোর ফলে স্থানীয়দেরও সুবিধা হয়েছে।
তৌসিফ জানান, ‘‘এই ফ্রিজ চালাতে খুব বেশি হলে হাজার টাকা খরচ হবে। এই এলাকায় অনেকের বাড়িতেই ফ্রিজ নেই। তাই এর ফলে অনেক মানুষ এই গরমে উপকৃত হবেন।’’
এই ফ্রিজটি বসানোর ফলে ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যম-সহ বিভিন্ন জায়গায় নাম কুড়িয়েছেন তৌসিফ। প্রয়োজনে কলকাতার বিভিন্ন জনবহুল এবং বস্তি এলাকায় তিনি আরও ১০টি ফ্রিজ বসিয়ে দিতে রাজি বলেও তৌসিফ জানিয়েছেন। তবে কারও ব্যক্তিগত ব্যবহারে এই ফ্রিজ ব্যবহার করলে চলবে না। পাশাপাশি স্থানীয় কাউকে এই ফ্রিজ দেখভালের ব্যবস্থাও করতে হবে।
এই ফ্রিজটি ঘটনাচক্রে সিসি ক্যামেরার আওতায় আছে। তবে তা না থাকলেও কেউ এই ফ্রিজের অনিষ্ট করবেন না বলেই বিশ্বাস তৌসিফের। ফ্রিজে খারাপ জল রেখের কেউ মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করবেন না বলেও তাঁর বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার মানুষেরা গরীব হতে পারেন। কিন্তু কেউই এই ফ্রিজ চুরি করবে না। স্থানীয়রা এখন নিজেদের তাগিদেই দায়িত্ব নিয়ে এই ফ্রিজের দেখভাল করেন। এমনকি অন্যদের জন্য জল ভরেও দিয়ে যান অনেকে।’’ এই ফ্রিজের উপরে তিনি পরে একটি ছাউনি লাগানোর পরিকল্পনা করছেন বলেও জানিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দা আয়েশা খাতুন এবং ফলক পারভিন জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে ফ্রিজ নেই। তাই এই ফ্রিজ বসানোয় এই রমজান মাসে তাঁদের বেশ সুবিধেই হয়েছে। সারাদিন রোজা রাখার পর এই ঠান্ডা জল দিয়ে তাঁরা শরবত বানিয়ে খান বলেও জানিয়েছেন।
এই ফ্রিজ এলাকার বাচ্চাদের কাছেও আনন্দের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy