প্রতীকী ছবি।
পাঁচ বছর আগে ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকায় খিদিরপুরের আয়রন ব্রিজে এক পথচারীকে পিষে মারার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ট্যাক্সিচালককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিলেন আলিপুর আদালতের প্রথম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শুভদীপ চৌধুরী। এর পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে, যা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। সোমবার শিবজি সাউ নামে ওই ট্যাক্সিচালককে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। এ দিন তার সাজা ঘোষণা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ১৭ মে সকালে ডায়মন্ড হারবার রোডের বাসিন্দা রাজকুমার সাউ অসুস্থ মাকে দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালেযাওয়ার জন্য বাবাকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময়ে একটি ট্যাক্সিকে হাত দেখিয়ে দাঁড় করান রাজকুমার। কিন্তু ট্যাক্সিচালক শিবজি জানিয়ে দেয়, সে এসএসকেএমে যাবে না। এ নিয়ে রাজকুমারের সঙ্গে শিবজির বচসা হয়। তখন আচমকাই রাস্তায় দাঁড়ানো রাজকুমারের গলা টিপে ধরে তাঁর মাথাটা জানলার ভিতরে টেনে এনে ট্যাক্সি চালানো শুরু করে দেয় শিবজি। তার পরে গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেয় সে। খিদিরপুরের আয়রন ব্রিজের কাছে একটি স্তম্ভে রাজকুমারের শরীর ধাক্কা খায়। রাস্তায় পড়ে যান তিনি। তাঁর মাথার উপর দিয়ে ট্যাক্সির পিছনের চাকা চলে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় রাজকুমারকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানের ভিত্তিতে ওই ট্যাক্সির খোঁজ শুরু করে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। কয়েক দিন পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় হাজরা রোড থেকে ট্যাক্সিটি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার মাস দুয়েক বাদে বিহারের ছাপরা জেলা থেকে শিবজিকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ। টি আই প্যারেডে রাজকুমারের বাবা তাকে শনাক্ত করেন। শিবজিকে হেফাজতে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী শিবনাথ অধিকারী ও অরবিন্দ মিত্র।
এ দিন সাজা ঘোষণার পরে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিবজি। সরকারি আইনজীবীরা বলেন, ‘‘নৃশংস ঘটনা। মানুষ যে এতটা হিংস্র আচরণ করতে পারে, ভাবাই যায় না! আমরা বিচারকের কাছে সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেছিলাম। সোমবার দোষী সাব্যস্ত করার পরে বিচারক শিবজিকে জানিয়েছিলেন, এই অপরাধের জন্য আপনাকে যাবজ্জীবন নয়, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত। তবে এ দিন তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy