তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে কেন একটি নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের হয়ে বাসকর্মীরা হাজির হননি, সেই প্রশ্নে ৪০ জন কর্মীকে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সোমবার উত্তপ্ত হল ৩৭ নম্বর রুটের ঢাকুরিয়া সংলগ্ন বাস স্ট্যান্ড। এ দিন সকালে কাজে যোগ দিতে এসে চালক, কন্ডাক্টর ও খালাসিরা জানতে পারেন, আগামী এক মাস তাঁদের ডিউটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রুটের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা, রুট কমিটির সদস্য শেখ ইসরাফিল ডেকে ডেকে কর্মীদের ওই কথা জানান বলে অভিযোগ।
এই নির্দেশের জেরে রুটের ৪৮টি বাসের মধ্যে বেশির ভাগই রাস্তায় বার করা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয় বলে খবর। বাসমালিকেরা বিকল্প কর্মী চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ। ফলে, অল্প কয়েকটি বাস রাস্তায় নামার অবস্থায় থাকলেও কর্মীরা আর বাস চালাতে চাননি। এ দিনসকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত ওই রুটের বাস বন্ধ ছিল। ঢাকুরিয়া সংলগ্ন ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মৌসুমী দাস ওই রুটের কর্মী ইউনিয়নের সভানেত্রী। কর্মীদের বসিয়ে দেওয়ার পিছনে তাঁর নির্দেশ কাজ করেছে বলেও অভিযোগ ক্ষুব্ধ কর্মী এবং মালিকদের বড় অংশের। পরে মৌসুমী অবশ্যকর্মীদের বসিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ নিয়ে আগামী রবিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি। পরে অবশ্য তাঁর হস্তক্ষেপেই রুট সচল হয়।
সূত্রের খবর, শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি মেনে নামমাত্র খরচে পাঁচটি বাস সমাবেশে লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছিল। বাকি বাসের মধ্যে সিংহভাগ ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে এবং গোটা পাঁচেক বাস ভাড়ায় বারুইপুর যায়। ওই সব জায়গা থেকে কর্মী-সমর্থকদের বাসে করে ধর্মতলায় নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন বাসকর্মীরা। অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গা থেকে বাসকর্মীরা সমাবেশে গেলেও কেন তাঁরা কাজ বন্ধ রেখে ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে যাননি, এই প্রশ্নে এ দিন তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়। ওই রুটের পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য রণজিৎ সরকার বলেন, ‘‘যাঁরা অন্যত্র ভাড়ায় গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বেছে বেছে কিছু জনকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। অদ্ভুত সিদ্ধান্ত।’’ তিনি আরও জানান, রুটের পরিচালন কমিটিতে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি রয়েছেন। ফলে কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হলে তা আলোচনা করে নেওয়া হয়। সমাবেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে যাওয়াতেই সমস্যায় পড়তে হল কিনা এবং একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রণজিৎ। কমিটির অপর এক সদস্য অমরজিৎ প্রসাদ বলেন, ‘‘কিছু কর্মী ২১ জুলাই ছুটি নিয়েছিলেন। তাঁদের নিয়ে সমস্যা হয়।’’
ওই রুটের বাস ঢাকুরিয়া থেকে আলিপুর, খিদিরপুর হয়ে হাওড়া যায়। পাশাপাশি, অন্য একটি পথে ঢাকুরিয়া থেকে রাসবিহারী হয়েও হাওড়া যায় কিছু বাস। রুট বন্ধ থাকায় এ দিন হইচই শুরু হয়।
মৌসুমী দাস এ দিন বলেন, ‘‘কেউ কাউকে সাসপেন্ড করেনি। অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা হয়েছিল। বিজেপি-পন্থী কিছু লোক সমস্যা তৈরি করেছে।’’ মালিকরা অবশ্য ওই অভিযোগ মানতে চাননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)