Advertisement
০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
Road Accident

স্কুটার থেকে পড়ে লরির চাকায় পিষ্ট সিভিক ভলান্টিয়ার

বছর চুয়াল্লিশের সীমা বৌবাজার থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ওই থানাএলাকার অন্তর্গত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ডিউটি দেওয়া হত।

সীমা দাস।

সীমা দাস। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩১
Share: Save:

হঠাৎ করেই একটি কুকুর ছুটে এসেছিল স্কুটারের দিকে। কোনও মতে পাশ কাটাতে পারলেও নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি চালক। রাস্তায় ছিটকে পড়েন চালক এবং তাঁর পিছনের আসনে বসা স্ত্রী। দু’জনের মাথাতেই সে সময়ে হেলমেট ছিল। তবু রক্ষা হয়নি। পিছন দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি লরির চাকা চলে যায় স্কুটারচালকের স্ত্রীর মাথার উপর দিয়েই। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মহিলার। শনিবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পর্ণশ্রী থানা এলাকার বীরেন রায় রোডে। মৃতার নাম সীমা দাস। স্কুটার চালাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী তপন দাস।

বছর চুয়াল্লিশের সীমা বৌবাজার থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ওই থানাএলাকার অন্তর্গত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ডিউটি দেওয়া হত। এ দিন সেই ডিউটিতে যাওয়ার সময়েই ঘটে এই ঘটনা।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বডিগার্ড লাইন্স এলাকারবাসিন্দা সীমার সঙ্গে তপনের বিয়েহয় বছর দশেক আগে। পিকনিক গার্ডেন এলাকায় তপনদের বাড়িতে থাকেন তাঁর বয়স্কা মা এবংভাইয়েরা। স্ত্রীকে নিয়ে তপন বেহালায় ভাড়ার ঘরে থাকতেন। মহাত্মা গান্ধী রোডের একটি খাবারের বিপণিতে কাজ করেন তপন। সেখানে বরাত আসা খাবার নির্দিষ্ট ঠিকানায় মোটরবাইকে করে পৌঁছে দেন তিনি। এ দিকে, সকাল সাতটা থেকে সীমার ডিউটি থাকত। সেই মতো প্রতিদিনই তাঁরা একসঙ্গে বেরিয়ে পড়তেন। সীমাকে পৌঁছে নিজের কর্মস্থলে চলে যেতেন তপন।

তাঁর কথায়, ‘‘এ দিন সকাল ছ’টায় বেরোই আমরা। সাতটার মধ্যেসীমার হাসপাতালে ঢোকার কথা ছিল। খুব জোরে যে স্কুটার চালাচ্ছিলাম, তা নয়। বীরেন রায় রোডের একটি পেট্রোল পাম্প পেরোতেই গলিথেকে একটি কুকুর ছুটে আসেস্কুটারের দিকে। মনে হল, স্কুটারের চাকার নীচে ঢুকে গিয়েছে কুকুরটি। টাল সামলাতে পারিনি। ছিটকে পড়ি আমরা। হেলমেট ছিল। কিন্তু তবুও...।’’ একটু থেমে তপন জানান, পিছন থেকে একটি লরি দ্রুত গতিতে আসছিল। সেটির সামনের চাকা কোনও মতে বেরিয়ে গেলেওপিছনের চাকা সীমার মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। গলা বুজে আসে মাঝবয়সি ব্যক্তির। কোনও মতে বলেন, ‘‘আর তাকানো যাচ্ছিল না। ও চলে গেল। কিন্তু আমার সামান্য কাটাছেঁড়াও হল না।’’

প্রত্যক্ষদর্শীরাই তড়িঘড়ি সীমাকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।সেখানকার চিকিৎসকেরা সীমাকেমৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর স্থানীয়েরা লরিটিকে আটক করতে পারলেও চালক ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেন। এলাকার সিসিক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই লরিচালককে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতারির কোনও খবর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE