একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের কাছ থেকে ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হল এক যুবকের দেহ। শুক্রবার সাতসকালে, গল্ফ গ্রিন থানা এলাকার বিজয়গড়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম চিরঞ্জিত দত্ত। বছর সাঁইত্রিশের চিরঞ্জিত রিজেন্ট কলোনির বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন জিনিস সরবরাহ করতেন। এই রহস্য-মৃত্যুর তদন্তে নেমে তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রাতের দিকে ঘটনাস্থলে তিন জনকে নিয়ে গিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফরেন্সিক দলও।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই যুবকের পরনে ছিল হাফ প্যান্ট। ঊর্ধ্বাঙ্গ ছিল অনাবৃত। খালি পা। মাথায় আঘাতের চিহ্ন নিয়ে একটি বাড়ির পাশে রক্তাক্ত চিরঞ্জিতকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই থানায় খবর দেন। পুলিশ তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। তাঁর মাথার বাঁ দিকে আঘাত রয়েছে। আঘাত আছে চোয়ালেও।
ওই নির্মীয়মাণ বহুতলের জায়গায় আগে নরেন দাস নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ছিল। তিনি বহুতল তৈরির জন্য বাড়িটি প্রোমোটারকে দিয়েছেন। বিজয়গড় এলাকাতেই নরেন ভাড়া থাকেন। তিনি জানান, নির্মীয়মাণ ওই বহুতলে কয়েক জন শ্রমিক থাকেন। তাঁদের কয়েক জন মুর্শিদাবাদে দেশের বাড়িতে গিয়েছেন। এখন আছেন দু’জন শ্রমিক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুতলটি অবৈধ ভাবে গড়ে উঠছে। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ওই বহুতলের কেয়ারটেকারের পরিচিত ছিলেন চিরঞ্জিত। তদন্তকারীরা কেয়ারটেকার এবং দুই শ্রমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতে বহুতলের তেতলায় খাওয়াদাওয়া সারেন চিরঞ্জিত-সহ চার জন। তাঁদের মধ্যে তিন জন পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, খাওয়ার পরে জানলার পাশেই খাটে ঘুমোচ্ছিলেন চিরঞ্জিত। জানলা দিয়ে প্রস্রাব করতে গিয়ে তিনি পড়ে যান।
বহুতলটির ছাদ থেকে কয়েকটি মদের বোতল উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। যা থেকে তাঁদের অনুমান, সেখানে নেশার আসর বসত। কারা সেই আসর বসাত, তা জানতে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি তপন দাশগুপ্তের দাবি, ওই যুবককে আগে এলাকায় দেখা যায়নি। একই বক্তব্য বাসিন্দাদেরও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)