ছবি সংগৃহীত।
দুর্গা প্রতিমাকে সাজাতে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করেন কয়েক লক্ষ শিল্পী। এ বার করোনার কারণে দুর্গা প্রতিমা তৈরির বায়না অনেক কমেছে। প্রতিমা তৈরির বরাত না আসায় মাথায় হাত সাজশিল্পীদেরও।
উত্তর কলকাতার কুমোরটুলি পাড়ায় ২০-২২টি দোকান রয়েছে। যেখানে পাইকারি দরে দুর্গা প্রতিমার বিভিন্ন ধরনের সাজের জিনিস বিক্রি হয়। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা থেকে ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান শোলার তৈরি নানা সাজের সরঞ্জাম, গলার মালা, মুকুট, গয়না। কিন্তু করোনা এবং লকডাউনের কারণে প্রতিমার সাজের সরঞ্জাম তৈরি বা বিক্রি, কোনওটাই সে ভাবে হচ্ছে না। কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সাংস্কৃতিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রণজিৎ সরকার বলেন, “সারা বছর দুর্গাপুজোর মরসুমের দিকে চেয়ে থাকি। কিন্তু এ বার অন্য রাজ্য থেকেও প্রতিমার সাজ কেনার কোনও বায়না আসেনি। যাঁরা ওই সব সাজের জিনিস তৈরি করেন, তাঁরাও বায়না না পেয়ে চরম সমস্যায় রয়েছেন।”
বিহারে দুর্গাপুজো, দশেরা উৎসব হিসেবে পালিত হয়। বিহারের ছাপরা জেলার সাহেবগঞ্জের বিজয় কুমার, দ্বারভাঙার আশুতোষ কুমার, পূর্ব চম্পারনের বিশাল কুমারেরা সড়কপথে গাড়িতে করে কুমোরটুলি থেকে প্রতিমার সাজ পাইকারি দামে কিনে নিয়ে যান। ছাপরা থেকে ফোনে বিজয় কুমার বলেন, “করোনার কারণে আমাদের এখানে এ বার পুজো ও দশেরার প্রতীকী উৎসব পালিত হবে। তাই এ বার কলকাতায় প্রতিমার সাজের বরাত দিইনি।”
এ দিকে কুমোরটুলি পাড়া থেকে বায়না না পাওয়ায় মাথায় হাত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার সাজশিল্পীদের। প্রতিমার মাথার চুল তৈরি করে মোটা টাকা আয় হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার আজিবর রহমানদের। তাঁর কথায়, “এই সময়ে দুর্গা প্রতিমার মাথার চুল তৈরি করতে রাত-দিন ফুরসত মেলে না। অথচ করোনার কারণে অন্যান্য বারের ২০ শতাংশও বায়না পাইনি।” তিনি আরও বলেন, ‘‘বিভিন্ন ঠাকুরের পুজো উপলক্ষে সারা বছর ধরে আমরা মাথার চুল তৈরি করে থাকি। কিন্তু এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে শীঘ্রই আমাদের অন্য পেশায় যাওয়ার কথা ভাবতে হবে।’’ দমদমের বাসিন্দা কৌশিক ধর প্রতিমার মাথার সাজ তৈরি করে থাকেন। কৌশিকবাবুর কথায়, “জরি, চুমকি দিয়ে দেবীর মাথার সাজ বানিয়েই সংসার চলে। কিন্তু এ বার কুমোরটুলির দোকান থেকে মাত্র ১৫ শতাংশ সাজের অর্ডার পেয়েছি। খুব কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরতলার শম্ভুনাথ মণ্ডল শোলার তৈরি মালা থেকে বিভিন্ন আদলের গয়না তৈরি করেন। শম্ভুনাথবাবু জানান, ‘‘করোনার জন্য আমাদের ব্যবসা পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিনীত আবেদন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে সরকার আমাদের পাশে দাঁড়াক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy