যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত গাড়ির চালক ঘটনার রাতে চায়না টাউনের একটি রেস্তরাঁ থেকে ফিরছিলেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেখানে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের নেশার পানীয় দফায় দফায় মিশিয়ে পান করেছিলেন গাড়িচালক। তাতেই তাঁর এমন অবস্থা হয় যে, চোখে অন্ধকার দেখছিলেন। এর মধ্যেই জোরে গান বাজানোর পাশাপাশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। তদন্তকারীরা এক রকম নিশ্চিত, অনিয়ন্ত্রিত শরীরে গাড়ি চালাতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। তার ফলেই দু’টি দোকান দুমড়ে, পাঁচ জনকে ঘায়েল করে, এক ব্যক্তিকে পিষে মেরে গ্রেফতার হন ওই চালক রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে দুর্ঘটনার কয়েক দিন পরেও রাহুলের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারেনি পুলিশ। প্রথমে বলা হচ্ছিল, রাহুলের লাইসেন্সটি বেঙ্গালুরুতে রয়েছে। তাঁর বাবা সেটি সঙ্গে করে নিয়ে আসছেন। কিন্তু ধৃতের বাবা শহরে এসে পৌঁছলেও পুলিশকর্মীরা লাইসেন্সটি মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত হাতে পাননি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, রাহুলের কি আদৌ গাড়ি চালানোর লাইসেন্স আছে? তদন্তকারী এক পুলিশকর্মী অবশ্য বলছেন, ‘‘লাইসেন্স থাকলেও ওই চালকের অপরাধ তাতে কিছুমাত্র কমবে না। তবে লাইসেন্স না পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু কড়া আইনের ধারা যুক্ত হবে।’’
গত শনিবার রাত ১০টা নাগাদ যাদবপুরের কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরির কাছে একটি বেপরোয়া সেডান গাড়ি পর পর দু’টি দোকানে ধাক্কা মারে। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বছর তেত্রিশের ওই যুবক। তদন্তে জানা যায়, রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোড ধরে গাড়িটি এত দ্রুত গতিতে আসছিল যে, প্রথমে সেটি রাস্তার ধারের একটি রোলের দোকানে সজোরে ধাক্কা মারে। এর পরে সেটি প্রায় ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে কয়েক জনকে ধাক্কা মেরে এক জনকে পিষে দিয়ে একটি চায়ের দোকানে ঢুকে যায়। জখম হন মোট পাঁচ জন। মৃত্যু হয় টমাস সোমি কর্মকার নামে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির।