কৃতী: পুরস্কারের ঝুলি নিয়ে শানায়া। নিজস্ব চিত্র।
মাত্র আড়াই বছর বয়স থেকেই মায়ের সঙ্গে লাইব্রেরিতে গিয়ে বই নেড়েচেড়ে দেখত সে। চার বছর বয়সে শুরু নিজে নিজে গল্প লেখা আর গল্প বলা। এ বছর, মাত্র ছ’বছর বয়সে আন্তর্জাতিক মঞ্চে গল্প পড়ে শোনানোর অভিজ্ঞতাও পকেটে পুরে ফেলেছে কলকাতার মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী শানায়া সিংহ। আর তার ফলেই এশিয়ার সর্বকনিষ্ঠ গল্প-বলিয়ে হিসেবে রেকর্ড তৈরি করে ফেলেছে ওই খুদে।
এ বছর ইস্ট লন্ডন রেডিয়ো আয়োজিত ‘টকিং স্টোরিজ় ৪৭’-এর মঞ্চে গল্প পড়ে শোনায় শানায়া। সিঙ্গাপুরের একটি পত্রিকায় তার নিজের লেখা গল্পও প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া নিজের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলেও গল্প পড়ে শুনিয়ে থাকে সে। লন্ডন রেডিয়োর ওই অনুষ্ঠানে ‘দ্য ট্রু ফ্রেন্ড’ নামে একটি নীতি কথামূলক গল্প বলে শানায়া। সেখানে উপস্থিত ছিলেন টোনি ক্র্যানস্টনের মতো বিখ্যাত বেশ কিছু গল্প-কথকেরা। বাকি প্রতিযোগীদের মধ্যে বেশ কিছু পড়ুয়া থাকলেও তারা সকলেই ছিল শানায়ার চেয়ে বয়সে অনেকটাই বড়। ভয় করেছিল? আত্মবিশ্বাসী শানায়া বলে, “একটুও না! একদম টেনশন হয়নি। খুব মজা লেগেছিল!”
খুদে গল্প-কথকের মা জানাচ্ছেন, ছোট্ট থেকেই টিভি দেখার চেয়ে বই পড়তেই বেশি ভালবাসে শানায়া। এই বয়সেই লাইব্রেরির কার্ড করিয়ে ফেলেছে সে, বই এনে পড়বে বলে। ইতিমধ্যে গল্প লেখালেখিও শুরু করেছে সে। কী করতে ভাল লাগে? শানায়া বলে, “বই পড়তে, নাচ-গান করতে। কিন্তু সব চেয়ে ভাল লাগে বই পড়তে। স্কুলের বই, গল্পের বই সব পড়ে ফেলি।” এ ছাড়া ইউটিউব দেখে অনেক ভাষার গানও মুখস্থ করে ফেলেছে সে। আর দুষ্টুমি? “একটু দুষ্টুমি তো করিই।”— অকপটে বলছে সে। বড় হয়ে একই সঙ্গে লেখিকা আর গায়িকা হয়ে চায় শানায়া। বলছে, ‘‘স্কুল বন্ধ বলে বন্ধুদের কথা খুব মনে পড়ে। তবে আমি পুরস্কার পাওয়ায় ওরা খুব খুশি।’’
আগামী বছরের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই মনোনীত হয়েছে শানায়ার নাম। স্কুল থেকেও তাকে যথেষ্ট উৎসাহ দেওয়া হয়। তার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জনা সাহা বলেন, “শানায়ার সাফল্যে আমরা খুব খুশি। শানায়ার ভাষাজ্ঞান এবং কথা বলার দক্ষতা ওর বয়সের তুলনায় অনেকটাই ভাল। গল্প বলা মানুষের প্রাচীনতম রীতিগুলির একটি। আমাদের পরিবারের এক ছোট্ট সদস্য যে এই ধারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এতে আমরা গর্বিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy