প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে কলকাতা শহরের বুকে তিনটি নতুন মেট্রো পরিষেবা চালু হলেও এখনও পুনর্বাসন পাননি দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরাপাড়া লেনের বাসিন্দারা। দীর্ঘ ছ’বছরেও সমাধান না মেলায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে। শুক্রবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুরসভার ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে এ বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তার জবাবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, কেএমআরসিএল-এর (কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড) সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে পুরসভা। মেট্রো প্রকল্পের কারণে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কেএমআরসিএলকে নকশা জমা দিতে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
মেয়র আরও বলেন , “কেএমআরসিএল মোট ২৩টি নকশা জমা দেয়। পুরসভার তরফ থেকে সেগুলি অনুমোদনও করা হয়। কিন্তু তারপরও দীর্ঘ ছয় বছরে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়নি। আক্ষেপের সুরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ছ’বছর হয়ে গেল দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরাপাড়া লেনের বাসিন্দারা পুনর্বাসন পাননি।” ওই এলাকার বাসিন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে নতুন করে মেট্রো চলাচল শুরু হলে তাঁদের বসতবাড়ি ও জীবন আরও বিপদের মুখে পড়তে পারে। ফাটল ধরা বাড়ি ও অনিরাপদ পরিবেশে তাঁরা প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
শুক্রবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের এক্সপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ রুটে মেট্রোর উদ্বোধনের সময় বৌবাজারে প্রতিবাদ ধর্নায় শামিল বৌবাজারের মেট্রো-বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা। উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।
মেয়র জানান, মেট্রো রুট চালু হওয়ার পর অন্তত ১০ বছর পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকতে হবে কেএমআরসিএলকে। পুরসভার তরফ থেকে এই শর্ত স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে। পুরসভার এই বক্তব্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি কিছুটা আশ্বস্ত হলেও, তাঁদের প্রধান দাবি—অবিলম্বে পুনর্বাসন। কারণ, প্রতিদিনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস আর সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অনেকেই। সর্বোপরি, মেট্রো পরিষেবা শহরের যাতায়াতে গতি আনলেও দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরাপাড়া লেনের বাসিন্দাদের দুর্দশা যে এখনও দূর হয়নি, মেয়রের বক্তব্যেই তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল।