মুম্বই থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে জিনিসপত্র এসেছে। তাতে রয়েছে মাদক! এই বলে কলকাতার এক প্রবীণাকে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভয় দেখিয়ে মহিলার কাছ থেকে প্রায় ৭৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। মুম্বই পুলিশ সেজেও তাঁকে চাপ দেন প্রতারকেরা। ঘটনার এক বছর পরে এই মামলায় তিন জনকে গুজরাত থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা।
অভিযোগকারীর নাম দীপান্বিতা ধর। তাঁর বয়স ৬১ বছর। তিনি কলকাতার মানিকতলার বাসিন্দা। এফআইআরে তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৯ মার্চ তাঁর কাছে একটি স্বয়ংক্রিয় ফোন আসে। ফোনে জানানো হয়, দীপান্বিতার একটি পার্সেল বাতিল করা হয়েছে। বৃদ্ধা মনে করেছিলেন, বিভিন্ন শপিং সাইট থেকে বহু জিনিসপত্র তিনি কিনে থাকেন। সে রকমই কোনও অর্ডার বাতিল হয়েছে। তিনি ওই ফোনে তাঁকে জানানো কাস্টমার কেয়ারের নম্বরে ফোন করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারকেরা দীপান্বিতাকে জানান, তাঁর পাঠানো জিনিসে ২০০ গ্রাম নিষিদ্ধ মাদক মিলেছে। মুম্বইয়ের ঝাং নামে এক ব্যক্তিকে সেই জিনিস পাঠানোর কথা ছিল। দীপান্বিতা জানিয়ে দেন, তিনি এ ধরনের কোনও পার্সেল কাউকে পাঠাননি। তার পরেই প্রতারকেরা দাবি করেন, বৃদ্ধার আধার কার্ড ব্যবহার করে ওই পার্সেল পাঠানো হয়েছে। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেআইনি কাজকর্ম হয়েছে। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সিকিউরিটি জমা রাখতে হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ কথা বৃদ্ধাকে কাউকে বলতেও বারণ করেন প্রতারকেরা। এর পরেই বৃদ্ধা নিজের গাড়িচালকের সহায়তায় ৭৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতও তিনি ভেঙে নিয়ে টাকা তোলেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২০২৪ সালের ১২ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত এই টাকা বৃদ্ধা পাঠিয়েছিলেন। এফআইআরে তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তেরা মুম্বই পুলিশের আধিকারিক সেজে তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের নামে ভুয়ো চিঠিও পাঠান। এই ঘটনায় সম্প্রতি কলকাতা পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম বরু রবিকান্ত গোকাল ভাই, সোন্দরভা জিলেশ নরেন্দ্রাভ, চান্দেরা বিপুলকুমার কানাভাই। তিন জনেই গুজরাতের বাসিন্দা। গুজরাতে গিয়েই তাঁদের গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ব্যাঙ্কের পাসবইও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।