E-Paper

সিন্ডিকেটের কাজ ঘিরে গোলমাল, সংঘর্ষে আহত তিন

স্থানীয় সূত্রের খবর, শহিদ স্মৃতি কলোনি এবং সংলগ্ন এলাকায় ইমারতি জিনিস সরবরাহ, গলির রুটে টোটো-রিকশা নামানোকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ বাড়ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:২৮

—প্রতীকী চিত্র।

সিন্ডিকেটের কাজ পাওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে দুই গোষ্ঠীর অসন্তোষ। ঝামেলা মেটানোর জন্য বৈঠকের নামে এক পক্ষকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল। মারধরের হাত থেকে এক মহিলাও রেহাই পাননি বলে অভিযোগ। লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে জানা গিয়েছে। দফায় দফায় এই সংঘর্ষের জেরে মঙ্গলবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পঞ্চসায়র থানার শহিদ স্মৃতি কলোনি। মারধরে এক মহিলা-সহ তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন। পঞ্চসায়র থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শহিদ স্মৃতি কলোনি এবং সংলগ্ন এলাকায় ইমারতি জিনিস সরবরাহ, গলির রুটে টোটো-রিকশা নামানোকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ বাড়ছিল। স্থানীয়দের দাবি, শহিদ স্মৃতি কলোনির ‘এ’ ব্লকের বাসিন্দা সুশান্ত এবং প্রশান্ত নস্করের নেতৃত্বেই ওই এলাকায় সিন্ডিকেটের কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়। এলাকায় ইমারতি দ্রব্য ফেলা-সহ অন্যান্য সব কাজই নিয়ন্ত্রণ করতেন দুই ভাই। ‘এ’ ব্লকের পাশাপাশি ‘বি’ ব্লকে এসেও ইট, বালি, সিমেন্ট বিক্রির কাজ করছিলেন তাঁরা। তা নিয়ে ‘বি’ ব্লকের কয়েক জন আপত্তি করেন। তাঁদেরও কাজ দিতে হবে বলে বেশ কয়েক দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা, স্থানীয়দের একাংশের এমনই দাবি। যা নিয়ে সুশান্ত এবং তাঁর দলবলের সঙ্গে ‘বি’ ব্লকের বিবাদ বাড়ছিল। সুশান্ত এবং তাঁর দলবল নিয়মিত হুমকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।

স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বিবাদ মেটানোর নাম করেই সুশান্ত এবং প্রশান্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কয়েক জনকে নিয়ে স্থানীয় যুবশক্তি ক্লাবে ঢোকেন। বিবাদ মেটাতেই ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা রাজেশ হালদার-সহ কয়েক জন স্থানীয় ওই ক্লাব চত্বরে যান। সেখানে যেতেই সুশান্ত এবং দলবল রাজেশ-সহ বাকিদের উপরে বাঁশ, রড নিয়ে চড়াও হন বলে অভিযোগ। মারধরে রাজেশের হাত তিন টুকরো হয়ে যায় বলে অভিযোগ। বাঁশের আঘাতে মাথা ফাটে তাঁর। চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হলে ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দাদের একাংশ সেখানে পৌঁছলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বুলবুলি হালদার নামে এক মহিলার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘণ্টাখানেক ধরে শহিদ কলোনিতে সংঘর্ষ চলে বলে দাবি। পরে পঞ্চসায়র থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।

‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা, আক্রান্ত রাজেশ বলেন, ‘‘আমরা কাজ না পাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবাদ করছিলাম। তার জন্য আমাদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হত। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিকল্পনা করে আমাদের ডেকে মারধর করা হয়।’’ যদিও সুশান্ত এবং দলবল পাল্টা মারধরের অভিযোগ করেছেন। এ দিন ফোনে সুশান্ত বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঝামেলা হয়েছে। মারধর কিছু করা হয়নি।’’

এই সংঘর্ষে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। দুই গোষ্ঠীই নিজেদের তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করেছে। শহিদ স্মৃতি কলোনি কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এই ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাতাহাতির খবর পেলেও এর পিছনে যে সিন্ডিকেটের বিবাদ, তা জানা ছিল না। সংবাদমাধ্যম সূত্রেই সেটা জানতে পারি। সিন্ডিকেটকে কোনও ভাবেই দল সমর্থন করে না। হাতাহাতির কারণ জানতে দুই পক্ষকে ডাকা হয়েছে।’’ পঞ্চসায়র থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। এলাকায় চাপা উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহলও চলছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

panchasayar Syndicate

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy