Advertisement
E-Paper

জলা জমিতে দুর্বল ভিত! তাতেই কি হেলে পড়ল তিলজলার বহুতল, উঠছে প্রশ্ন

দু’টি বাড়ির মাঝখানে মাটিতে ব্যবধান ছ’ফুটের মতো। কিন্তু যত উপরে উঠেছে ব্যবধান কমে গিয়েছে ১২/১১ এবং ১২/১২ দু’টি বাড়ির মধ্যে। আর পাঁচ তলার বাইরের দিকে একটি ফ্ল্যাটের গ্রিলের জানালা লেগে গিয়েছে অন্য ফ্ল্যাটের গায়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৫
হেলে পড়া বহুতলটি। নিজস্ব চিত্র।

হেলে পড়া বহুতলটি। নিজস্ব চিত্র।

বয়স মাত্র সাত বছর। তার মধ্যেই কেন হেলে পড়ল তিলজলার শিবতলা লেনের ১২/১১ নম্বর বাড়িটি? কী হবে ওই বাড়ির ২৩টি পরিবারের? বহুতল আবাসনটি কি ভেঙে ফেলা হবে? আপাতত এই সব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে শিবতলা লেনের গলিঘুঁজিতে। সামনে পুলিশি প্রহরা। বাড়ির দরজায় চেয়ার পেতে পাহারা দিচ্ছেন এলাকাবাসীও। তার মধ্যেই অনেকের আশঙ্কা, পাশের বাড়ির সাপোর্ট না পেলে এতদিন হয়তো হুড়মুড়িয়ে ভেঙেই পড়ত বাড়িটি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, জলা জমি ভরাট করে ২০০৯ সালে পাঁচ তলা ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২০১১ সালে। শিবতলা লেনেরই আদি বাসিন্দা মোহম্মদ মোমিন একটি দর্জির দোকান চালান। তিনি বললেন, ‘‘বছর দশেক আগেও আমরাই দেখেছি ওটা ছিল জলা জমি। সেখানে ছাই, বালি ও মাটি ফেলে ভরাট করে ভবনটি তৈরি হয়েছে। তড়িঘড়ি করে তৈরি হওয়ায় ঠিকমতো মাটি বসেনি। তার উপর ভিতও ততটা মজবুত করে তৈরি করা হয়নি। সেই কারণেই তৈরির কয়েক বছরের মধ্যেই হেলে যায়। এখন সেটা নিয়ে হইচই হওয়ায় সামনে এসেছে।’’ কেউ কেউ আবার বলছেন, পাশের ১২/১২ পাঁচতলা ভবনটি পরে তৈরি হয়েছে। ওই সময় খোঁড়াখুঁড়ির জেরেও ১২/১১ নম্বরের বাড়িটির ভিত আলগা হয়ে হেলে পড়তে পারে।

বুধবার রাতে মূল রাস্তা থেকে সরু, ঘিঞ্জি আলো-আঁধারি আঁকাবাঁকা গলি দিয়ে বেশ খানিকটা হাঁটার পর পৌঁছনো গেল ওই দু’টি ভবনের কাছে। হেলে পড়া বাড়িটির সামনেই ১৫-১৬ জন পুলিশকর্মী চেয়ার পেতে পাহারা দিচ্ছেন। প্রায় মুখোমুখি হয়ে বাড়ির দরজার সামনে পাহারায় অন্তত ২০-২৫ জন স্থানীয় বাসিন্দা। খানিকটা দূরে ছোট ছোট কয়েকটি জটলা। বহিরাগতদের উপর কড়া নজর রাখছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: তিলজলায় হেলে পড়ল বহুতল, তীব্র আতঙ্ক, বাড়ি খালি করে পরিদর্শনে পুলিশ-দমকল-পুরসভা

দু’টি বাড়ির মাঝখানে মাটিতে ব্যবধান ছ’ফুটের মতো। কিন্তু যত উপরে উঠেছে ব্যবধান কমে গিয়েছে ১২/১১ এবং ১২/১২ দু’টি বাড়ির মধ্যে। আর পাঁচ তলার বাইরের দিকে একটি ফ্ল্যাটের গ্রিলের জানালা লেগে গিয়েছে অন্য ফ্ল্যাটের গায়ে।

বছর পঞ্চাশের বাবর আলি। পেশায় দিনমজুর। হেলে যাওয়া ১২/১১ নম্বর বাড়ির দোতলার একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী, বড় ছেলে এবং বউমাকে নিয়ে থাকেন। ‘ঘরছাড়া’ হওয়ার পর থেকেই ঠায় বসে আছেন বাড়ির সামনে। বললেন, ‘‘সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফেরার সময় নাস্তা নিয়েই ফিরেছিলাম। এসে দেখি সবাই বাড়ি খালি করছে। আমরাও হাতের কাছে যা পেলাম নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। তারপর থেকে এভাবে বসে। মুখে একটুও দানাপানি পড়েনি। আপাতত বাড়ির অন্যরা কাছেই ছোট ছেলের ছোট্ট ফ্ল্যাটে গাদাগাদি করে রয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ফুটব্রিজ এড়িয়ে লাইন দিয়ে যাতায়াতই নিয়ম বিধাননগরে

বাবর আলির মতোই অন্য আবাসিকদেরও একটাই চিন্তা, বাড়ি ভেঙে ফেললে যাবেন কোথায়? সেই আশঙ্কাতেই ঘুম উড়েছে সবার। ভিড়ের মধ্যেই একজন বললেন, ‘‘এতদিন তো এভাবেই আছি। কোনও অসুবিধা হয়নি। ভেঙে ফেললেই বরং মুশকিলে পড়ব।’’

Tiljala Building Lean Kolkata Police Fire Brigade Disater Management KMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy