পদ্মে কাঁটা থাকে। কিন্তু জোড়া ঘাস ফুলেও যে কাঁটা থাকে, টের পেলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
কলকাতা পুরসভায় গতবারের চেয়ে এ বার তৃণমূলের আসন এবং ভোটের হার দুই-ই বেড়েছে। ১৪৪টি ওয়ার্ডে সব বিরোধী মিলে পেয়েছে সাকুল্যে ৩০টি আসন। কিন্তু উত্তর থেকে দক্ষিণে তৃণমূলের একাধিপত্যেও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ‘কাঁটা’ ফুটিয়েছে। উত্তরের ৭, ১০, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দক্ষিণে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাস তালুক ভবানীপুরের ৭০ নম্বর ওয়ার্ড— হাত ছাড়া হয়েছে জোড়াফুলের ‘কাঁটা’তেই! গতবারের থেকে এ বার দলের আসন বাড়ায় নেতৃত্ব সন্তুষ্ট। প্রকাশ্যে তাঁরা কেউই কাঁটার জ্বালা স্বীকার করছেন না। কিন্তু দলের অন্দরে, বিশেষত যে ওয়ার্ডে কাঁটার ঘায়ে দলীয় প্রার্থী ঘায়েল, সেখানে কর্মীরা সরাসরি অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন।
উত্তরের ৭ নন্বর ওয়ার্ডে বিজেপির নতুন প্রার্থী বাপি ঘোষের কাছে হেরেছেন তৃণমূলের মঞ্জুশ্রী চৌধুরী। বিদায়ী পুরবোর্ডেও তিনি কাউন্সিলর ছিলেন। বাপি একদা তৃণমূলে ছিলেন। ভোটের আগে যোগ দেন বিজেপিতে। হারের পরে ওই ওয়ার্ডে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি এবং মঞ্জুশ্রী দেবীর ছেলে অভিজিৎ (বাপ্পা) চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের অন্তর্ঘাতেই আমাদের প্রার্থী হেরেছেন!’’ অন্তর্ঘাতের জন্য বাপ্পা দায়ী করেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের অনুগামীদের। সাধনবাবু এই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি। এলাকায় সাধন-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উত্তর কলকাতার সভাপতি পুষ্পক সাহার অভিযোগ, ‘‘এখানে হারের কারণ, সিপিএম থেকে আসা নব্য তৃণমূলীদের দিয়ে আমাদের মতো পুরনো তৃণমূল কর্মীদের দূরে সরিয়ে দেওয়া। এলাকার মানুষ তার জবাব দিয়েছেন।’’ পাশের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে গতবার জেতেন সিপিআইয়ের করুণা সেনগুপ্ত। এ বারও তিনি তৃণমূলের প্রসূন ঘোষকে হারিয়েছেন। এর পিছনেও অন্তর্ঘাতকে দায়ী করেছেন এলাকার তৃণমূলের একাংশ। প্রসূন এলাকার বিধায়ক ও মন্ত্রী শশী পাঁজার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনি এলাকার বাসিন্দা নন বলে তাঁকে প্রার্থী করার সময় থেকে দলের অন্য অংশ আপত্তি তুলেছিল। তাঁরাই ভোটে অন্তর্ঘাত করেছে বলে অভিযোগ।