Advertisement
E-Paper

এক দিনের আলাপেই কমলদের সঙ্গে হোটেলে পার্টি! আদর্শকে খুন করে এটিএম কার্ড হাতিয়ে তোলা হয় হাজার হাজার টাকা

কসবার হোটেলের ঘরে সে রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তার পরেই বা ঠিক কী করেছিলেন অভিযুক্তেরা, এখন তা খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আদর্শের খুনে ধৃত কমল সাহা এবং ধ্রুব মিত্রকে জেরা করে পাওয়া তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:২৮
নিহত আদর্শ লোসাল্কা।

নিহত আদর্শ লোসাল্কা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

অভিযুক্তদের সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরের দিনই তাঁদের কসবার হোটেলে নিয়ে গিয়েছিলেন আদর্শ লোসাল্কা। তার পরের দিন ওই হোটেল থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। সোমবার এমনটাই জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, খুনের পরে আদর্শের পকেট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় টাকা। তাঁর এটিএম কার্ড হাতিয়ে পিন বদলে পরে তুলে নেওয়া হয় হাজার হাজার টাকা। হোটেলের ঘরে পার্টি করার এবং তার পরে সংঘর্ষেরও স্পষ্ট চিহ্ন পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

কসবার হোটেলের ঘরে সে রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তার পরেই বা ঠিক কী করেছিলেন অভিযুক্তেরা, এখন তা খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আদর্শের খুনে ধৃত কমল সাহা এবং ধ্রুব মিত্রকে জেরা করে পাওয়া তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধদমন) রূপেশ কুমার সোমবার জানিয়েছেন, একটি অ্যাপের মাধ্যমে অভিযুক্তদের সঙ্গে ২০ নভেম্বর আলাপ হয়েছিল আদর্শের। ২১ নভেম্বর তাঁদের কসবার ওই হোটেলে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২২ নভেম্বর সেই হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় আদর্শের দেহ। যে অ্যাপের মাধ্যমে আদর্শের সঙ্গে তরুণীর আলাপ হয়েছিল, তা নিজের মোবাইল থেকে তিনি ডিলিট করে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত শুক্রবার রাতে হোটেলে গিয়ে পার্টি করেছিলেন তিন জন। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। হোটেলের ঘরে পার্টি করার প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জেনেছেন, অ্যাপের মাধ্যমে হোটেলের ঘরে খাবার অর্ডার করা হয়েছিল। পরের দিন, শনিবার ঘর ছাড়ার সময় পেরিয়ে গেলেও আদর্শ সেখান থেকে বার হননি। তা দেখে হোটেলের কর্মীরা তাঁর ঘরে যান। তাঁরা দেখেন, বিছানার নীচে পরে রয়েছে আদর্শের দেহ। তাঁর শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। পুলিশ হোটেলের ঘরে সংঘর্ষের চিহ্নও খুঁজে পেয়েছে। ঘরের এদিক-ওদিক ছড়িয়ে পড়েছিল খাবার। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, বালিশ, চাদর দেখেও স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল, সেখানে সংঘাত চলেছে।

রূপেশ জানিয়েছেন, খুনের পরে আদর্শের ব্যাগ থেকে দেড় হাজার টাকা এবং এটিএম কার্ড নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন কমল এবং ধ্রুব। আদর্শের মোবাইলও নিয়ে যান তাঁরা। অ্যাপের মাধ্যমে বাইক বুক করে তাতে চেপে উল্টোডাঙায় যান অভিযুক্তেরা। পরে সেই এটিএম কার্ডের পিন বদলে ১১ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কী ভাবে পিন বদলেছিলেন অভিযুক্তেরা? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের সিমকার্ড নিজেদের একটি মোবাইলে ঢুকিয়ে নেন অভিযুক্তেরা। তার পরে ‘ফরগেট পিন’ করে এটিএমের নতুন পিন নেন। সেই পিনের মেসেজ যায় তাঁদের মোবাইলে, যেখানে ভরা ছিল আদর্শের সিম। পুলিশ জানিয়েছে, এটিএম থেকে টাকা তোলার পরে অভিযুক্তেরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁরা রবিবার থানায় গিয়ে ধরা দেন। কেন তাঁরা আদর্শকে খুন করেছিলেন, তা এখনও জানায়নি পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদর্শের খুনে অভিযুক্ত ধ্রুব এবং কমল একাদশ শ্রেণি থেকে একসঙ্গে পড়াশোনা করতেন। তাঁদের পরিবারও একে অপরকে চেনে। ধ্রুব এবং কমল একসঙ্গে দমদমে থাকেন। একটি অনলাইন ডেলিভারি সংস্থায় কাজ করেন ধ্রুব। কসবার হোটেলে শুক্রবার রাতে দম্পতি হিসাবেই এসেছিলেন ধ্রুব এবং কমল। ধ্রুব নদিয়ার বাসিন্দা। কমলের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর এলাকায়।

Kolkata Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy