Advertisement
০২ মে ২০২৪

অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে অভিযুক্ত দুই ডাক্তার

অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল পুলিশের কাছে। লালবাজার সূত্রের খবর, দুই চিকিৎসক এবং টালিগঞ্জ ফাঁড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির জেরে মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ এনে চারু মার্কেট থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার স্বামী।

শিবাজী দে সরকার
টালিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১২
Share: Save:

অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুতে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল পুলিশের কাছে।

লালবাজার সূত্রের খবর, দুই চিকিৎসক এবং টালিগঞ্জ ফাঁড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির জেরে মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ এনে চারু মার্কেট থানায় ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার স্বামী। গত সোমবার রাতে ওই বেসরকারি হাসপাতলে মৃত্যু হয় কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা পূর্ণিমা সরকার দাসের। অভিযুক্ত চিকিৎসকেরা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, পূর্ণিমার স্বামী রাজু দাস তাঁর অভিযোগে জানান, ডাক্তারদের অবহেলার জেরেই তাঁর স্ত্রীর গর্ভস্থ দুই সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর (৩০৪এ) অভিযোগ আনেন তিনি। সেই অভিযোগ দায়ের হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই পূর্ণিমারও মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুও চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই হয়েছে বলে রাজু অভিযোগ করায় তা আগের দায়ের করা মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

পুলিশের কাছে রাজু দাসের লিখিত অভিযোগ, গত এক বছর ধরে ওই চিকিৎসক দম্পতির অধীন চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পূর্ণিমা। ওই চিকিৎসক দম্পতির পরামর্শ মতো গত ৯ ফেব্রুয়ারি ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় পূর্ণিমাকে। সেখানেই গত শনিবার অবস্থার অবনতি হওয়ায় পূর্ণিমাকে আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের কাছে রাজুর অভিযোগ, আইসিইউ-তে নেওয়ার আগে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা চিকিৎসকেরা। স্ত্রীকে রাতেই আইসিইউ-তে দেওয়া হয়েছে, এটা জানতে পেরে তিনি চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর দাবি, চিকিৎসকেরা বলেন, ‘‘পূর্ণিমা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এবং দুই সন্তান মায়ের গর্ভেই মারা গিয়েছে।’’

রাজুর আরও অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে ওই চিকিৎসকেরা তাঁর কাছ থেকে চিকিৎসা বাবদ টাকা নিলেও ঠিক মতো চিকিৎসা করেননি। আলিপুরের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রীকে প্রসবের জন্য ভর্তি করানোর কথা থাকলেও গত ৯ তারিখ হঠাৎ করেই চারু মার্কেটের ওই হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। পুলিশের কাছে রাজুর অভিযোগ, ওই হাসপাতালে ভর্তির পরেও কোনও চিকিৎসা না করে তাঁর স্ত্রীকে ফেলে রাখেন অভিযুক্ত চিকিৎসক দম্পতি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন:

চিটফান্ড তদন্তে আরও জায়গা চাইল সিবিআই

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই অভিযোগ দায়েরের পরেই ওই বেসরকারি হাসপাতালের কাছে পূর্ণিমার চিকিৎসা সংক্রান্ত সব নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই নথি হাতে এলেই তা পাঠানো হবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। সেখানকার মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্তের অগ্রগতি ঠিক হবে।

কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, চিকিৎসায় গাফিলতি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হলে চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের কাছে রির্পোট চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হবে। তবে অন্য কোনও গাফিলতির জেরে ওই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তকারীরা ওই হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কিছুই বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors Pregnant woman Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE