বজবজে শাসকদলের যুব নেতাকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রবিবার দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম সৈকত ভড় ওরফে সবুজ এবং অভিজিৎ দাস। এর আগে এই ঘটনায় শনিবার রাতে প্রীতম ভড় নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ধরা পড়ল তিন জন।
গত শনিবার বজবজ ২ নম্বর ব্লকের নোদাখালি থানা এলাকার ডোঙারিয়া স্কুল মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন শাসকদলের যুব নেতা কৃষ্ণপদ মণ্ডল। সকালে তিনি যখন বাজার করে মোটরবাইকে ফিরছিলেন, সেই সময়ে আর একটি বাইকে চেপে এসে তিন দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় কৃষ্ণপদকে প্রথমে স্থানীয় মুচিশা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে অস্ত্রোপচার করে কৃষ্ণপদর শরীর থেকে গুলি বার করা হয়। আপাতত তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
পুলিশ সূত্রের দাবি, কৃষ্ণপদর গতিবিধির বিষয়ে দুষ্কৃতীদের তথ্য সরবরাহ করেছিল নোদাখালি থানা এলাকার বাসিন্দা সৈকত ও অভিজিৎ। শনিবার, অর্থাৎ ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের আশপাশেই ছিল তারা। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এক কর্তা জানান, সৈকত ও অভিজিৎকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আবেদন জানানো হয়েছিল আদালতে। বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন।
কৃষ্ণপদর দাদা তপন মণ্ডলের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই তাঁর ভাইকে গুলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘২০২১ সালেও ভাইকে একই ভাবে গুলি করা হয়েছিল। সে বার শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে ওর উপরে হামলা হয়। এ বারও তেমনই হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ।’’ যদিও প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণপদ ঠিকাদারির ব্যবসা করেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, না কি ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও ব্যক্তিগত আক্রোশে তাঁর উপরে হামলা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, ব্যবসায় দু’টি সিন্ডিকেটের ঝামেলার কারণেই কৃষ্ণপদকে গুলি করা হয়েছে। অভিযুক্ত তিন দুষ্কৃতী অধরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সরকারি প্রকল্পের কয়েকটি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে কৃষ্ণপদর সঙ্গে কয়েক জন নেতা ও কর্মীর কোন্দল শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন ভাবে কৃষ্ণপদকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলেও একাধিক সূত্রে প্রাথমিক ভাবে জেনেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের কথায়, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় আরও বেশ কয়েক জন জড়িত রয়েছে বলে সূত্র পাওয়া গিয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)