Advertisement
E-Paper

রোগী-মৃত্যু ঘিরে ‘তাণ্ডব’ বাইপাসের হাসপাতালে

পুলিশ সূত্রের খবর, সোনারপুরের বাসিন্দা রাধারানি দেবনাথ (৮২) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হন। সোমবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতালের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, এর পরেই বেলায় মৃতার আত্মীয়েরা জরুরি বিভাগে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৮
রাধারানি দেবনাথের (ইনসেটে) মৃত্যুর পরে সোমবার তাঁর পরিজনেরা ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

রাধারানি দেবনাথের (ইনসেটে) মৃত্যুর পরে সোমবার তাঁর পরিজনেরা ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

রোগী-মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর হল ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অভিযোগ, মৃতার পরিজনেরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কম্পিউটার, টেবিল ভাঙচুরের পরে চিকিৎসকদেরও মারতে এগোন। আতঙ্কে তাঁরা একটি ঘরে ঢুকে পড়েন। প্রায় পনেরো মিনিট ঘরে আটকে থাকার পরে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন। সোমবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পঞ্চসায়র থানার পুলিশ। এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তিন জনকে আটক করলেও রাতের দিকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, সোনারপুরের বাসিন্দা রাধারানি দেবনাথ (৮২) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হন। সোমবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতালের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, এর পরেই বেলায় মৃতার আত্মীয়েরা জরুরি বিভাগে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান ইন্দ্রনীল দাশগুপ্তের অভিযোগ, ‘‘সাড়ে দশটা নাগাদ মাঝবয়সী এক ব্যক্তি জরুরি বিভাগে ঢুকে ভীষণ চিৎকার ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার মিনিট কয়েকের মধ্যে আরও চার জন জরুরি বিভাগে ঢুকে ভাঙচুর চালান।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ওই তাণ্ডবে জরুরি বিভাগের রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সারস্বত মিত্র নামে এক চিকিৎসককে লক্ষ্য করে ওঁরা ঘুসি মারতে গেলে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে আমি একটি ঘরে ঢুকে পড়ি।’’

চিকিৎসক সারস্বত মিত্র জানান, ঘটনার সময়ে রোগী দেখছিলেন তিনি। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘হঠাৎই এক জন চিৎকার করতে করতে আমার দিকে তেড়ে আসে। ইন্দ্রনীল স্যর না থাকলে ওরা তো আমাকে মেরেই ফেলত!’’ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মিনিট পনেরো ধরে চলা এই উত্তেজনায় ২৬ জন রোগী রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ওই হাসপাতালের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার সুদীপ্ত মিত্রের অভিযোগ, ‘‘এই তাণ্ডবের জন্য জরুরি বিভাগে প্রায় পনেরো মিনিট চিকিৎসা বন্ধ রাখতে হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: বাড়ি ফিরলেন আহত সীতা

হাসপাতালের তরফে ওঠা কোনও অভিযোগই মানতে রাজি নন মৃতার পরিজনেরা। মৃতার মেয়ে ইন্দিরা রায়চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘রবিবার সকাল থেকে মায়ের জ্বর আসছিল। বারবার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসায় মাকে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতালের তরফে আমাদের জানানো হয়, রোগীকে আইসিইউ-তে রাখতে হবে। কিন্তু আইসিইউ খালি না থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে মাকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করি।’’ ইন্দিরাদেবীর দাবি, রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ তাঁরা যখন হাসপাতাল থেকে বেরোন, তখন সুস্থ ছিলেন তাঁর মা। ভোরবেলায় মা মারা গেলেও তাঁদের খবর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁর আরও অভিযোগ, এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ফোন করা হলেও মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি তাঁদের। বলা হয়েছিল, তাঁর মাকে আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করতে হবে। এর পরে হাসপাতালে পৌঁছলে মায়ের মৃত্যুর সংবাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ইন্দিরাদেবীর। অভিযোগ, ‘‘এই অবস্থায় হাসপাতালে এসে মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে আমার স্বামী ও দুই ছেলে হাসপাতালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হন। ক্ষোভ প্রকাশ করতেই এক চিকিৎসক আমার স্বামীর চুলের মুঠি ধরে টানতে থাকেন। হাসপাতালের তরফে যাবতীয় অভিযোগ সাজানো।’’ এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সুদীপ্তবাবু বলেন, ‘‘রবিবার গভীর রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন ওই রোগিণী। তখনই তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। এর পরেই হাসপাতালের তরফে বাড়িতে একাধিক বার ফোন করা হয়। কিন্তু মোবাইল বন্ধ ছিল। ভোরের দিকে দ্বিতীয় বার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওই বৃদ্ধা।’’

আরও পড়ুন: রাতপথে গাড়িতে পিষ্ট সিটিসি-র বাসচালক

Violence Vandalism Nursinghome Death Patient
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy