Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কতটা সত্যি বলছেন অদিতি, দেখবে পুলিশ

পানিহাটির বাসিন্দা প্রতুল চক্রবর্তীকে পরিকল্পনা করেই খুন করেছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তী, এ বিষয়ে নিশ্চিত পুলিশ।

অভিযুক্ত অদিতি। —নিজস্ব চিত্র

অভিযুক্ত অদিতি। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৩
Share: Save:

পানিহাটির বাসিন্দা প্রতুল চক্রবর্তীকে পরিকল্পনা করেই খুন করেছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অদিতি চক্রবর্তী, এ বিষয়ে নিশ্চিত পুলিশ। কিন্তু প্রতুলের বিরুদ্ধে তিনি যে সমস্ত আর্থিক অভিযোগ তুলেছেন, তার সত্যতা কতটা সেটাই এখন খতিয়ে দেখতে চান তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতুলকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতারের পর থেকে অদিতি যে তদন্তকারীদের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করেছেন, এমনটা নয়। কারণ, জেরায় একাধিক বার বয়ান বদল করেছেন বিমানবন্দরের ওই কর্মী। জেরায় প্রথমে অদিতি জানান, তিনি প্রতুলের দু’টি মোবাইল খড়দহ খালে ফেলে দিয়েছেন। পরে জানান, কাশীপুরের ফ্ল্যাটে রয়েছে। কিন্তু সেখানে তল্লাশি চালিয়ে মোবাইল না পেয়ে পুলিশ অদিতিকে ফের জেরা করলে জানান, প্রতুল ও নিজের মোবাইল দোকানে বেচে দিয়েছেন। অদিতির আরও দাবি, প্রতুল তাঁর গয়না বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন। পাওনাদারদের কিছু টাকা অদিতিকেই শোধ করতে হয়। বাকি পাওনাদারেরা অদিতির ফ্ল্যাটে এসে প্রতিনিয়ত ঝামেলা করছেন বলেও জানিয়েছিলেন অদিতি। বুধবার অদিতিকে ফের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে সেই দাবির সত্যতা কতটা, তা খুঁজতে চায় পুলিশ। কোন সংস্থায় অদিতির গয়না বন্ধক রাখা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ। এমনকি, অদিতির সোনার গয়নার বিলও পরীক্ষা করে দেখা হবে।

অদিতির দাবি, গত মার্চে প্রতুলের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তা হলে পাওনাদারেরা প্রতুলের সঙ্গে যোগাযোগ না করে অদিতির ফ্ল্যাটে গিয়ে টাকা চাইবেন কেন, সেই প্রশ্নের উত্তর এখন পাননি তদন্তকারীরা। সে ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদের কথা অদিতি পাওনাদারদের জানাননি কেন, তাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

আদতে আগরপাড়ার বাসিন্দা প্রতুল নিজেকে গুরুগ্রামের বাসিন্দা বলে কেন পরিচয় দিতেন, তা নিয়েও ধন্দে পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে, সিটি কলেজ থেকে স্নাতক প্রতুল গুরুগ্রামে এমবিএ পড়তে যান, পরে সেখানেই চাকরি পান। কর্মসূত্রে মাঝেমধ্যে আগরপাড়ার বাড়িতে আসতেন। তখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় অদিতির সঙ্গে পরিচয়। অথচ পানিহাটিতে বাড়িভাড়া নেওয়ার সময়ে নিজেকে গুরুগ্রামের লোক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন প্রতুল।

প্রাক্তন স্বামীর আসল বাড়ির ঠিকানা জানা থাকলেও জেরায় তা কেন পুলিশকে জানাননি অদিতি, তা-ও এখন জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চান তদন্তকারীরা। তবে দফায় দফায় জেরায় এ কথা স্পষ্ট যে, তৃতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়াতেই প্রতুলের উপর বেশি রাগ জন্মায় অদিতির। কারণ যে যুবকের সঙ্গে বিয়ের কথা চলছিল, তার কাছেও প্রতুল পৌঁছে গিয়েছিলেন বলেই পুলিশকে জানিয়েছেন অদিতি। তৃতীয় বিয়ের পথের কাঁটা সরাতেই প্রাক্তন স্বামীকে খুন করে অদিতি টাকার ‘গল্প’ বলছেন কি না, সেই রহস্যই এখন কাটানোর চেষ্টায় তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khardah Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE