Advertisement
E-Paper

করোনা-বিধি শিকেয়, বাঁশ ঘিরে মোদী দর্শনের ব্যবস্থা

নির্বাচন কমিশন তার ঘোষণায় স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে, ভোটের সময়ে সব কিছুই করতে হবে করোনা অতিমারির সতর্কতা বজায় রেখে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১ ০৫:৫৯
সতর্কতা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার আগে সভার জায়গাতেই চলছে কোভিড পরীক্ষা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

সতর্কতা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসার আগে সভার জায়গাতেই চলছে কোভিড পরীক্ষা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

ব্রিগেডে কি ‘বেঁধে’ মোদী-দর্শনের ব্যবস্থা হয়েছে? শনিবার বিজেপি-র ব্রিগেড প্রস্তুতি দেখে সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। গোটা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড কার্যত ঘিরে ফেলা হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে। সেই বাঁশ দিয়ে ঘেরা জায়গাকে এমন ভাবে ‘ব্লকে’ ভাগ করা হয়েছে, যাতে চাইলেও সমর্থকেরা এ দিক-সে দিক যেতে না পারেন। অনেকের মতে, এই ব্যবস্থা আসলে এক জায়গায় সকলকে ‘বেঁধে’ রেখে বেশি ভিড় দেখানোর কৌশল। অনেকের আবার বক্তব্য, ‘‘এ তো করোনা-বিধি লঙ্ঘনের ব্যবস্থাপনা!’’

নির্বাচন কমিশন তার ঘোষণায় স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছে, ভোটের সময়ে সব কিছুই করতে হবে করোনা অতিমারির সতর্কতা বজায় রেখে। নির্বাচনী জনসভাও তার বাইরে নয়। খোলামেলা পরিবেশে কী ভাবে সভা করা যায়, তা বলতে গিয়ে কমিশন নির্দেশ দিয়েছিল, সব রাজনৈতিক দলকে জনসভায় কর্মী-সমর্থক পিছু তিন ফুটের দূরত্বের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু শনিবার দেখা গেল, মোদীর ব্রিগেডের আয়োজনে তিন ফুট দূরত্ব তো দূর, কেউ চাইলেও গা ঘেঁষাঘেঁষি এড়াতে পারবেন না।

এ দিন সভাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, আগের বারের মতো ‘পদ্ম জনতার’ জন্য মাথার উপরে কোনও ছাউনির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তার বদলে ব্যারিকেডদিয়ে ঘিরে দেওয়া অংশের মুখে মুখে লাগানো হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের কাট-আউট। পাশাপাশি, পুরো মাঠে থাকছে একাধিক ছোট ছোট জায়ান্ট স্ক্রিন। এ ছাড়া, মঞ্চের ডান দিকে রাখা হয়েছে বিরাট মাপের জায়ান্ট স্ক্রিন। মোদীর রবিবারের সভার জন্য তৈরি হয়েছে ১৩২ ফুটের মঞ্চ। মঞ্চের পিছনেও থাকছে জায়ান্ট স্ক্রিন। এ দিকে শনিবার সকাল থেকেই পুরো মঞ্চ ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যেরা। মঞ্চের উপরে কাউকেই উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। মঞ্চ তৈরিতে আসা কর্মীরাও সচিত্র পরিচয়পত্র দেখালে তবেই নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভিতরে প্রবেশ করতে পাচ্ছেন। এ ছাড়া, মূল মঞ্চের দু’পাশে ছোট ছোট তাঁবু করা হয়েছে। মঞ্চের দু’পাশেও রয়েছে ছোট দু’টি মঞ্চ। বিজেপি-র রাজ্য নেতাদের একাংশ সেখানে বসবেন বলে জানা গিয়েছে।

এ দিকে, এ দিন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা আধিকারিকদের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের একাধিক আধিকারিককেও সভাস্থলে দেখা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তার মহড়া চলে দীর্ঘক্ষণ। সভার মঞ্চের ঠিক পিছন দিয়েই একের পর এক গাড়ি সারিবদ্ধ ভাবে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল পাশ্ববর্তী রেড রোডের দিকে। গাড়িগুলির মধ্যে দু’টি কালো রঙের গাড়িকে ঘিরে রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার জওয়ানেরা। ঠিক ওই সময়েই আকাশে চক্কর কাটছিল সেনাবাহিনীর তিনটি হেলিকপ্টার। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী মাঠ থেকে গাড়িতে করেই হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে যাবেন। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সভাস্থলে আসেন সৌমিত্র খাঁ। ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারাও।

এ দিকে, সভা ঘিরে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে উৎসাহও তুঙ্গে। শনিবার দুপুরেই পানিহাটি থেকে চলে এসেছেন বলাই শীল। কাঠের কাজ করে সংসার চলে তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘রবিবার এলে সামনে জায়গা পেতাম না। ওই পিছন দিকেই বসতে হত। ওখান থেকে মোদীকে দেখা যাবে না। মোদীকে সামনে থেকে দেখতে শনিবারই চলে এসেছি। রবিবার সভা শেষ করে ফিরব।’’

দক্ষিণ কলকাতা থেকে ব্রিগেডের প্রস্তুতি দেখতে চলে এসেছিলেন বিজেপি কর্মী প্রতীক পাণ্ডে। তাঁর আবার মন্তব্য, ‘‘দূরত্ব-বিধি নিয়ে ভাবছি না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে নেমেছি। গায়ে গা লাগলেও সমস্যা নেই।’’

তবে এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিংহের বক্তব্য, ‘‘সভার সব বন্দোবস্ত ভেবে-চিন্তে করা হয়েছে। বাংলায় তৃণমূলের থেকে বড় ভাইরাস আর কিছু নেই।’’

Narendra Modi Brigade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy