Advertisement
E-Paper

মমতা পৌঁছোতেই তৃণমূলের মঞ্চ খোলা বন্ধ করল সেনা! বিজেপি এবং কেন্দ্রকে তোপ দেগেও দিদি বদলে দিলেন ভাষামঞ্চের স্থান

বাংলা ভাষার অপমান এবং বাংলাভাষীদের হেনস্থার প্রতিবাদে এই মঞ্চ তৈরি করেছিল রাজ্যের শাসকদল। সোমবার দুপুরে আচমকাই সেনা তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের ওই মঞ্চ খুলে দিতে উদ্যোগী হয়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৪
(বাঁ দিকে) সোমবার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে আচমকাই তৃণমূলের মঞ্চ খুলে ফেলতে উদ্যোগী হয় সেনা (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সোমবার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে আচমকাই তৃণমূলের মঞ্চ খুলে ফেলতে উদ্যোগী হয় সেনা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ খুলে দেওয়ার চেষ্টা করে সেনা। বাংলা ভাষার অপমান এবং বাংলাভাষীদের হেনস্থার প্রতিবাদে এই মঞ্চ তৈরি করেছিল রাজ্যের শাসকদল। সোমবার দুপুরে আচমকাই সেনার তরফে ওই মঞ্চ খুলে দেওয়া শুরু হয়। কী কারণে মঞ্চ খুলে দেওয়া হচ্ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সেনা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, যে সময় পর্যন্ত মঞ্চ বাধার অনুমতি নেওয়া হয়েছিল, তা ফুরিয়ে গিয়েছে। ওই সময়সীমা ফুরিয়ে যাওয়ার পরেই মঞ্চ খুলে দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার এবং বাংলাভাষার অপমানের প্রতিবাদে এই মঞ্চ তৈরি করেছিল তৃণমূল। প্রতি শনি এবং রবিবার এখানে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বসেন রাজ্যের শাসকদলের প্রতিনিধিরা। সোমবার দলের মঞ্চের কাছে গিয়ে মমতা অভিযোগ তোলেন, মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছোনোর পরে মঞ্চ খোলা বন্ধ করে দেয় সেনা। মমতা বলেন, “আমাদের মাইকের কানেকশন কেটে দিয়েছে। স্টেজ ভেঙে দিয়েছে, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। প্যান্ডেল আর্মিকে দিয়ে খুলিয়েছে। আমার আর্মির বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। কারণ, আমরা সেনাকে নিয়ে গর্বিত। কিন্তু সেনাকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয়, তখন দেশটা কোথায় যায়, তা নিয়ে সন্দেহ জাগে!”

মমতা আরও জানান, তৃণমূলের এই কর্মসূচির জন্য কোনও রাস্তা বন্ধ নেই। শনি এবং রবিবার কর্মসূচি হয়। তার জন্য অনুমতিও নেওয়া ছিল বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, “দরকার হলে পুলিশের সঙ্গে কথা বলত। পুলিশ আমাদের পার্টির সঙ্গে কথা বলে আমাদের প্যান্ডেল খুলে দিতে পারত। আমরাই খুলে দিতাম, আমরা অন্য জায়গায় শিফ্‌ট করতে পারতাম।”

সেনার তরফে এই মঞ্চ খোলা হলেও এর নেপথ্যে বিজেপির ইন্ধন থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা। তৃণমূলনেত্রীর দাবি, তিনি যখন গান্ধীমূর্তির পাদদেশে পৌঁছোন প্রায় ২০০ জন সেনাকর্মী তাঁকে দেখে ছুটে পালাচ্ছিলেন। পরে এ বিষয়ে মন্তব্যের সময়ে সেনার উদ্দেশে তিনি বলেন, “এটা আপনাদের দোষ নয়। আপনারা বিজেপির কথায় করেছেন। দিল্লির কথায় করেছেন। দিল্লির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায় করেছেন। এটুকু বুদ্ধি আমাদের আছে। আমরা সেনাকে দোষ দিচ্ছি না। আমরা বিজেপি, তাদের মন্ত্রীকে দোষ দিচ্ছি।”

রাজনৈতিক দলের মঞ্চ ভাঙতে সেনাকে অপব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, “তাদের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। কারণ আইনশৃঙ্খলা পুলিশের অধীনে পড়ে। কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। পুলিশ কমিশনার দলের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। কোথাও কোনও আপত্তি থাকলে আমি এক মিনিটের মধ্যে মঞ্চ খুলে দিতাম। আমার কোনও সমস্যা নেই। সেনা এবং রেলের অধীনে অনেক জায়গা রয়েছে। আমি সেখানে কোনও বিঘ্ন ঘটাতে চাই না। কখনও করিও না।” এর পরেই মমতা বলেন, “সরি টু সে, এটা আর্মি নয়, পিছে মে ক্যায়া হ্যায়? ছুপা রুস্তম বিজেপি হ্যায়।” রাজনৈতিক স্বার্থে সেনাকে ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তৃণমূলনেত্রী।

সেনাকে অপব্যবহারের অভিযোগে বিজেপিকে নিশানা করলেও সোমবার মঞ্চ ভাঙার বিষয়ে সরাসরি সেনার সঙ্গে সংঘাতে গেলেন না তৃণমূলনেত্রী। কেন পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুললেও ভাষা আন্দোলনের মঞ্চের স্থান বদল করে দিলেন তিনি। এ বার থেকে রানি রাসমণি রোডে হবে ওই কর্মসূচি।

মমতা বলেন, “ভাষা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলবে। আরও জোরদার হবে। রানি রাসমণি রোডে অনুমতি নিয়ে প্রতিবাদ হবে। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে আর আসতে পারব না? সেনা অনুমতি দেবে না। আইনশৃঙ্খলা পুলিশ দেখে, তাদেরও জানাল না। আমাকেও জানাতে পারত।” এর পরেই তৃণমূলনেত্রী বলেন, “বেশি করে বাংলায় কথা বলুন। দেখতে চাই ভাষা সন্ত্রাস কোথায় গিয়ে পৌঁছোয়।”

Mamata Banerjee TMC Gandhi statue Bengali Speaking Migrants Indian Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy