Advertisement
E-Paper

ফসল পোড়ানোর দূষণ রোধে সচেষ্ট পর্ষদ

শুধু দিল্লিতেই নয়, ফসলের গোড়ায় আগুন দেওয়ার ফলে কলকাতার দূষণও ক্রমশ বাড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিবেশবিদদের একাংশ।

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৩
এ ভাবেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় ফসলের গোড়া। ফাইল চিত্র

এ ভাবেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় ফসলের গোড়া। ফাইল চিত্র

শুধু দিল্লিতেই নয়, ফসলের গোড়ায় আগুন দেওয়ার ফলে কলকাতার দূষণও ক্রমশ বাড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিবেশবিদদের একাংশ। তাই এ বার জেলা তো বটেই, শহরতলি সংলগ্ন এলাকাতেও আর ফসলের গোড়ায় আগুন দিয়ে পোড়ানো যাবে না। এই নিয়ে বিধিনিষেধ জারি করতে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।

পর্ষদের কর্তাদের বক্তব্য, কলকাতা সংলগ্ন অনেক এলাকায় ফসলের গোড়ায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে। তাতে দূষণের লেখচিত্র বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। চলতি শীতের মরসুমেই এ নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে। তাই কলকাতা-সহ সারা রাজ্যে ফসলের গোড়ায় আগুন লাগানো নিয়ে কড়া হচ্ছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘ফসলের গোড়া পোড়ানো আটকাতে কড়া পদক্ষেপের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, দিল্লিতে দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে পঞ্জাব, হরিয়ানায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে ফসল পোড়ানো। চাষের পরে ধান, গমের গোড়া পুড়িয়ে মাঠ পুনরায় চাষযোগ্য করার রীতি প্রাচীন। বর্তমানে কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়লেও প্রাচীন ওই রীতি বন্ধ হয়নি। ফলে বন্ধ হয়নি দূষণও। অনেক জায়গায় ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে আকাশ। বাতাসের উপরে ভর করে সে ধোঁয়া ঢুকছে শহরে। কৃষি দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আমরা অনেকদিন ধরেই এ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছি। সারা রাজ্যে তো ছিলই। এখন কলকাতা সংলগ্ন এলাকাতেও এই গোড়া পোড়ানো শুরু হয়েছে।’’

কৃষি দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, খড় পুরো তুলে নেওয়ার জন্য এক ধরনের যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু একজন কৃষকের পক্ষে তা কেনা ব্যয়সাপেক্ষ। তাই খড় পুড়িয়ে দেওয়ারই পথ বেছে নেন কৃষকেরা। কৃষি দফতরের অধিকর্তা সম্পদরঞ্জন পাত্র বলেন, ‘‘কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় এর প্রবণতা বেড়েছে। গোড়া পোড়ানোর জন্য প্রচুর কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনোক্সাইড বাতাসে মিশে যায়। ফলে দূষণ তো হয়ই। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরির জন্য আলোচনা চলছে।’’

তবে শুধু ফসলের গোড়াই নয়, বর্জ্য বা গাছের পাতাও যাতে না পোড়ানো হয়, সে ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছে পর্ষদ। পর্ষদ সূত্রের খবর, এ জন্য দফতরের মনিটরিং দল নিয়মিত নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। কোনও জায়গায় যদি গাছের গুঁড়ি, পাতা বা অন্য বর্জ্য পোড়ানো হয়, তা হলে পুলিশে খবর দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, শহরের বায়ুদূষণের কারণ জানার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-কে (নিরি) সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। পর্ষদের কাছে তার অন্তর্বর্তী রিপোর্ট গত মাসেই জমা পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, শহরের বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার (পিএম১০) মাত্রাবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গাছের গুঁড়ি, পাতা ও আবর্জনা পোড়ানোর অবদান রয়েছে ১১.৭ শতাংশ। আবার অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম২.৫) ক্ষেত্রে পাতা, গাছের গুঁড়ি বা আবর্জনা পোড়ানোর অবদান হল ১২.৩ শতাংশ। ফলে আবর্জনা পোড়ানো বন্ধ করতেও মাঠে নামতে হয়েছে পর্ষদকে। পর্ষদের চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘এ রকম ৪০টি ক্ষেত্রে আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছি। বাসন্তী হাইওয়ে এলাকায় এমন আবর্জনা পোড়ানো চলছিল। সেগুলি বন্ধ করা হয়েছে।’’

West Bengal Pollution Control board Pollution Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy